ঢাকা     শুক্রবার   ১৯ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ৬ ১৪৩১

‘এমন ম্যাচে অভিষেক হওয়া সৌভাগ্যের বিষয়’

ইয়াসিন হাসান || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১৬:০০, ২০ মার্চ ২০১৭   আপডেট: ০৫:২২, ৩১ আগস্ট ২০২০
‘এমন ম্যাচে অভিষেক হওয়া সৌভাগ্যের বিষয়’

ইয়াসিন হাসান, কলম্বো থেকে: আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে প্রথম আগমণেই মোসাদ্দেক হোসেন বুঝিয়ে দিয়েছিলেন প্রতিভা ও ক্ষুধা থাকলে যে কোনো পর্যায়ে সাফল্য পাওয়া খুব সহজ। আফগানিস্তানের বিপক্ষে তার হার না মানা ৪৫ রানের ইনিংসে বাংলাদেশ পেয়েছিল লড়াইয়ের ভিত। এরপর ধীরে ধীরে মোসাদ্দেক সীমিত পরিসরে কোচ, অধিনায়ক সবার প্রিয় পাত্র। তাকে ছাড়া একাদশ চিন্তা করাও কষ্টকর। সেই মোসাদ্দেককে টেস্ট অধিনায়ক মুশফিকুর রহিম সুযোগ তৈরি করে দিয়েছেন বড় দৈর্ঘ্যের ক্রিকেটে।

বড় দৈর্ঘে্যর ক্রিকেটেও মোসাদ্দেক সবার নজর কেড়েছেন ব্যাট হাতে দারুণ দুই ইনিংস খেলে। প্রথম ইনিংসে ৭৫ রানের পর দ্বিতীয় ইনিংসে গুরুত্বপূর্ণ ১৩। মোসাদ্দেক শুধু ব্যাটিং করেননি, ক্রিকেটের ব্যাকরণ মেনে যেভাবে খেলা দরকার সেভাবেই খেলেছেন। উপস্থিত বুদ্ধি, শট নির্বাচন এবং ব্যাটিং কৌশলে মোসাদ্দেক অনবদ্য, অসাধারণ। ক্লাসের মনোযোগী ছাত্রের মত মাঠের ক্রিকেটের মনোযোগী ছাত্র মোসাদ্দেকরোববার শততম টেস্টে জয়ের পর রাইজিংবিডির মুখোমুখি হন। অভিষেক টেস্টসহ নিয়ে বিভিন্ন বিষয় নিয়ে কথা বলেন। রাইজিংবিডির পাঠকদের জন্য তা দেওয়া হল :

প্রশ্ন : কেমন লাগছে শততম টেস্টে জয় পাওয়ায়?
মোসাদ্দেক হোসেন সৈকত:
খুবই ভালো। এর থেকে বেশি কিছু কি চাওয়ার থাকতে পারে!

প্রশ্ন : শততম টেস্টে যে খেলবেন তা তো চিন্তাও করেননি নিশ্চয়ই?
মোসাদ্দেক হোসেন সৈকত:
আসলে অনেক দিনই তো স্কোয়াডে ছিলাম। বিশ্বাস ছিল কোনো না কোনো দিন অভিষেক হয়ে যেতে পারে। দল আমাকে সুযোগ তৈরি করে দিতে পারে। এজন্য নিজেকে সব সময় ওভাবেই প্রস্তুত রেখেছি। শততম টেস্টে অভিষেক হবে এমন ভাবনা কখনোই আসেনি। এমন ম্যাচে অভিষেক হওয়া সৌভাগ্যের বিষয়।

প্রশ্ন : অভিষেকে দলের জয়ে বড় অবদান আপনার? নিজের কাছে কতটুকু ভালো লাগছে যে এমন ম্যাচে ব্যাট হাতে রানের দেখা পেলেন?
মোসাদ্দেক হোসেন সৈকত:
অবশ্যই ভালো লাগছে। আমি আগেও বলেছি আমি সব সময় রান করতে চাই। সেটা দলের কাজে লাগলে তো আরও ভালো লাগে। অভিষেকে রান পেয়েছি, আমার রান দলের লিড এনে দিতে সহায়তা করেছে। এজন্য অবশ্যই ভালো লাগছে।

প্রশ্ন : ঘরোয়া ক্রিকেটে আপনার প্রথশ শ্রেণির গড় ৭০। সাতটি সেঞ্চুরির ৩টিই ডাবল। ঘরোয়া ক্রিকেটের বড় ইনিংস খেলার অভিজ্ঞতাই কি আন্তর্জাতিক ম্যাচে কাজে আসল?
মোসাদ্দেক হোসেন সৈকত:
অবশ্যই। ঘরোয়া ক্রিকেটে বড় ইনিংস খেলার কারণেই আমার আত্মবিশ্বাস তৈরি হয়েছে। আমাদের ঘরোয়া ক্রিকেটের মান অনেক উন্নত। ওখানে পারফর্ম করতে হলে কঠোর পরিশ্রম করতে হয়। ওগুলো আমার আত্মবিশ্বাস বাড়িয়েছে।

প্রশ্ন: সাকিব আল হাসানের সঙ্গে আপনার ১২৯ রানের জুটি। তার সঙ্গে ব্যাটিং করার অভিজ্ঞতা শেয়ার করুন।
মোসাদ্দেক হোসেন সৈকত:
সাকিব ভাইয়ের সঙ্গে এর আগেও আমি ব্যাটিং করেছি। আমাদের বোঝাপোড়াটা ভালো। এটা আমাদের অনেক কাজে এসেছে।উনি সেঞ্চুরি পেয়েছেন বলে আমার খুব ভালো লাগছে। আউট হওয়ার পর আবার আমার উপর চাপ চলে আসে।

প্রশ্ন : সেদিন সাকিব বলেছিলেন রান নেওয়ার জন্য নাকি আপনাকে কল করতে হয় না। এমনিতেই বুঝে যান কখন রান নিতে হবে। কখন রান নিতে হবে না?
মোসাদ্দেক হোসেন সৈকত:
হ্যাঁ উনি ঠিক বলেছেন।

প্রশ্ন : সেঞ্চুরি না পাওয়ায় মন খারাপ নাকি?
মোসাদ্দেক হোসেন সৈকত:
না যেটা হয়েছে তাতে আলহামদুলিল্লাহ। আমি সন্তুষ্ট।

প্রশ্ন :দ্বিতীয় ইনিংসে ব্যাটিং করতে যাওয়ার সময় কি চিন্তা করেছিলেন?
মোসাদ্দেক হোসেন সৈকত:
ওরকম কিছু না। মারার বল পেলে মারব। আর রান তো কম লাগত। ওপাশে মুশফিক ভাই আছেন। আমার ইচ্ছে ছিল মেরে-টেরে চলে আসব।

প্রশ্ন : জয়সূচক রানটিও তো আপনার ব্যাট থেকে আসতে পারত। ওভারে আউট হলেন কেন?
মোসাদ্দেক হোসেন সৈকত:
আমি বলটি খেলব নাকি খেলব না ভাবতে ভাবতেই বলটি চলে আসে। বাড়তি বাউন্স পাওয়ায় গ্লাভসে লেগে যায়। শেষ করে আসতে পারলে তো অবশ্যই ভালো লাগত।

প্রশ্ন : এখন চিন্তা কি?
মোসাদ্দেক হোসেন সৈকত:
কোনো চিন্তা নেই। জয়টাকে উদযাপন করতে দেন …

প্রশ্ন : শততম টেস্টে জয়টাকে কিভাবে দেখছেন?
মোসাদ্দেক হোসেন সৈকত:
এটা আমাদের জন্য বিশাল এক অর্জন। আমাদের সামনের দিনগুলোতে এ জয় অনেক আত্মবিশ্বাসী করে তুলবে।



রাইজিংবিডি/কলম্বো (শ্রীলঙ্কা)/২০ মার্চ ২০১৭/ইয়াসিন/আমিনুল

রাইজিংবিডি.কম

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়