ঢাকা     শনিবার   ২০ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ৭ ১৪৩১

আকাশ ছোঁয়ার স্বপ্ন ওদের

সোহেল মিয়া || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ০৯:৫১, ২১ মার্চ ২০১৭   আপডেট: ০৫:২২, ৩১ আগস্ট ২০২০
আকাশ ছোঁয়ার স্বপ্ন ওদের

রাজবাড়ী প্রতিনিধি : রাজবাড়ীর বালিয়াকান্দি উপজেলার নবাবপুরের গুচ্ছগ্রামের অর্ধশত কোমলমতি ছেলেমেয়েদের চোখে- মুখে এখন শিক্ষার স্বপ্ন। ভাগ্যের পরিবর্তন ঘটানোর স্বপ্ন।

চন্দনা নদীর কোল ঘেঁষে  গুচ্ছগ্রামটির অবস্থান। দারিদ্রতার কষাঘাতে জর্জরিত এই গুচ্ছগ্রামের শিশুরা অল্প বয়সেই কাজের সন্ধানে ঘর থেকে বেরিয়ে যায়। আজ তারা ঘুরে দাঁড়িয়েছে, শিক্ষার আলোয় উদ্ভাসিত হওয়ার পথ খুঁজে পেয়েছে।

জানা যায়, ১৯৮৭-৮৮ সালে তৎকালীন নবাবপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান বর্তমান উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আবুল কালাম আজাদ ভুমিহীন ও অসহায় হতদরিদ্র গৃহহারা মানুষগুলোর বাসস্থানের ব্যবস্থা করে দেওয়ার লক্ষে খাস জমিতে ‘গুচ্ছগ্রাম’ প্রকল্প বাস্তবায়ন করেন। এখানে ৪৫টি গৃহহারা পরিবারের মাথা গোঁজার ঠাঁই হয় ।

এই গুচ্ছগ্রামটিকে ঘিরে গড়ে তোলা হয়েছে ১২নং পদমদী চন্দনা গুচ্ছগ্রাম যোগেন্দ্রনাথ সোম সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়।স্কুলে যাচ্ছে গুচ্ছগ্রামের অর্ধশত কোমলমতি শিশু। গুচ্ছগ্রামের বাসিন্দারা তাদের সন্তানদের এই স্কুলে পড়ানোর মধ্যদিয়ে স্বপ্ন দেখছে একটি সুন্দর আগামীর।

স্কুলের ৫ম ও ৪র্থ শ্রেণির শিক্ষার্থী সিমু আক্তার ও মুন্নী জানায়, তাদের  গুচ্ছগ্রামের মেয়েরা একটু বড় হলেই বিয়ে দেওয়া হয়। কিন্তু এটা তাদের অপছন্দের।তাই বাল্য বিবাহ নয় তারা সুশিক্ষায় শিক্ষিত হতে চায়।

এই স্কুলের দ্বিতীয় ও তৃতীয় শ্রেণির শিক্ষার্থী মনির ব্যাপারী ও রানা শেখ জানায়, দারিদ্রতার কারণে তাদের  গুচ্ছগ্রামের অনেকেরই লেখাপড়া বন্ধ হয়ে যায়।তাদেরকে এক মুঠো ভাতের জন্য যুদ্ধ শুরু করতে হয়। কিন্তু তারা পড়ালেখা চালিয়ে যেতে চায়। প্রয়োজনে অবসর সময়ে বাবা-মাকে কাজে সহযোগিতা করবে বলে জানায়।

মনিরের মা মনিরা বেগমের প্রশ্ন, প্রতিনিয়তই যেখানে যুদ্ধ করতে হয় জীবিকার সন্ধানে সেখানে কিভাবে সন্তানদেরকে লেখাপড়া করাবেন ?

স্কুলের সহকারি শিক্ষক মো: ফকির উদ্দিন শেখ জানান, বর্তমানে গুচ্ছগ্রামের প্রায় ৫০ জন শিশু থেকে পঞ্চম শ্রেণি পর্যন্ত এই বিদ্যালয়ে অধ্যয়নরত । কিন্তু অর্থনৈতিক ও সামাজিক কারণে প্রাথমিকেই এরা ঝরে পড়ছে। এদের প্রতি একটু দৃষ্টি দিলেই এরা সুশিক্ষায় শিক্ষিত হয়ে জীবন ও সমাজকে বদলে ফেলতে পারবে।

উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মো: আবুল কালাম আজাদ জানান, আশির দশকে ভুমিহীন মানুষের কথা চিন্তা করেই আমি গুচ্ছগ্রামটি স্থাপন করেছিলাম। ওদের প্রতি আমার যথেষ্ট সুদৃষ্টি রয়েছে। ছিন্নমূল এসকল শিশুরা এখন স্কুলে যাচ্ছে এটি বর্তমান সরকারের উন্নয়নেরই একটি অংশ।



রাইজিংবিডি/রাজবাড়ী/২১ মার্চ ২০১৭/সোহেল মিয়া/টিপু

রাইজিংবিডি.কম

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়