ঢাকা     বৃহস্পতিবার   ২৫ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ১২ ১৪৩১

বিশ্বনেতাদের মুখেও ওয়ালটনের স্তুতি

হাসান মাহামুদ || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ০৯:৫৯, ২ এপ্রিল ২০১৭   আপডেট: ০৫:২২, ৩১ আগস্ট ২০২০
বিশ্বনেতাদের মুখেও ওয়ালটনের স্তুতি

হাসান মাহামুদ : ঢাকায় চলছে ১৩৬তম ইন্টার পার্লামেন্টারি ইউনিয়নের (আইপিইউ) অ্যাসেম্বলি। এই আন্তর্জাতিক সম্মেলন উপলক্ষ্যে উন্নয়নের পথে এগিয়ে চলা বাংলাদেশের বিভিন্ন সামগ্রীর চিত্র তুলে ধরতে আয়োজন করা হয়েছে বিশেষ মেলার। ‘আইপিইউ অ্যাসেম্বলি ফেয়ার’ নামের এই মেলায় ওয়ালটনের প্রশংসা করছেন সম্মেলনে যোগ দিতে আসা বিদেশী স্পিকার এবং সংসদ সদস্যরা।

বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রের (বিআইসিসি) পাশে আন্তর্জাতিক বাণিজ্য মেলার স্থানে ক্ষুদ্র পরিসরে চলছে এই মেলা। মেলায় টেন্ট-২ তে ১৮ নম্বর মিনি প্যাভিলিয়ন দেশের শীর্ষ ইলেকট্রনিক্স, অটোমোবাইল এবং হোম অ্যাপ্লায়েন্স পণ্য উৎপাদন ও বাজারজাতকারী প্রতিষ্ঠান ‘ওয়ালটন’-এর। শনিবার বিকালে এই মেলার উদ্বোধন করেন বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ।

বিকেলে মেলা উদ্বোধন হলেও সকাল থেকেই অতিথিদের জন্য মেলা উন্মুক্ত করা হয়। মেলা শুরুর কিছুক্ষণ পরেই ওয়ালটনের স্টলে আসেন রাশিয়ান ফেডারেশনের ফেডারেল অ্যাসেম্বলির স্পিকার ভ্যালেনটিনা ম্যাটভিয়েনকো।

ভ্যালেনটিনা ম্যাটভিয়েনকো তার অনুভূতি প্রকাশ করতে গিয়ে জানান, তিনি এর আগেও ওয়ালটনের নাম শুনেছেন।

তার ভাষায়, ‘ওয়ালটন, বাংলাদেশ’স ব্র্যান্ড, নো ইট’।



তিনি দেশীয় ব্র্যান্ড হিসেবে ওয়ালটনের প্রশংসা করেন এবং আগামী দিনে এর সাফল্য কামনা করেন।

প্রসঙ্গত, বাংলাদেশের যেসব প্রতিষ্ঠান তাদের উৎপাদিত পণ্য রপ্তানি করে, তারাই কেবল আন্তর্জাতিক সম্মেলন উপলক্ষ্যে আয়োজিত এই মেলায় স্থান পেয়েছে। সেক্ষেত্রে দেশের একমাত্র ইলেকট্রনিক্স পণ্য নির্মাতা প্রতিষ্ঠান হিসেবে মেলায় ওয়ালটন স্টল দিতে পেরেছে।

এটিও একটি অন্যরকম স্বীকৃতি বলে মন্তব্য করেন ওয়ালটন গ্রুপের নির্বাহী পরিচালক (পিআর অ্যান্ড মিডিয়া) মো. হুমায়ুন কবির। মেলার সার্বিক তদারকির দায়িত্বে থাকা এই কমিউনিকেশন পার্সন আরো বলেন, ‘ওয়ালটনের জন্ম হয়েছে দেশে ও বিদেশে বাংলাদেশের ভাবমূর্তিকে অনেক ঊর্ধ্বে তুলে ধরার জন্য। ওয়ালটন সেটি করার প্রাণপন চেষ্টা করে চলেছে।’

তিনি বলেন, ‘এই মেলা ব্র্যান্ডিংয়ের একটি সুন্দর মাধ্যম। আমরা এই মেলার মাধ্যমে বিশ্বের বিভিন্ন উচ্চ পর্যায়ের অতিথিদের কাছে বাংলাদেশের পণ্যের পরিচিত তুলে ধরছি।’

মেলায় ওয়ালটনের স্টলের কো-অর্ডিনেটের দায়িত্বে থাকা শাহ শহিদ চৌধুরি বলেন, ‘বিদেশী অতিথিদের ভাল সাড়া পাওয়া যাচ্ছে। তারা ওয়ালটনের বিভিন্ন পণ্যের বিষয়ে আগ্রহ নিয়ে জানতে চান।’



ওয়ালটন গ্রুপের বিপণন বিভাগের এই এসিস্ট্যান্ট জেনারেল ম্যানেজার আরো বলেন, ‘আমরা মূলত বিশ্বের বিভিন্ন দেশ থেকে আগত এসব উচ্চ পর্যায়ের নেতৃবৃন্দের কাছে দেশীয় পণ্য হিসেবে ওয়ালটনের পরিচিতিই তুলে ধরছি, একই সঙ্গে বাংলাদেশের ‘ম্যানুফ্যাকচারিং’কেও তুলে ধরছি।’

মেলায় রয়েছে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, আছে ছাত্র ও শিক্ষক। রয়েছে কমিউনিটি ক্লিনিক, যেখানে আছেন দায়িত্বপ্রাপ্ত চিকিৎসক ও প্রয়োজনীয় ওষুধ। রয়েছে ইউনিয়ন পরিষদ কমপ্লেক্স, একটি বাড়ি একটি খামার প্রকল্প, তৈরি পোশাক ও পাটজাত পণ্যসহ রপ্তানিমুখী সরকারি ও বেসরকারি অনেক প্রতিষ্ঠান। উন্নয়নের পথে এগিয়ে চলা বাংলাদেশের বিভিন্ন সামগ্রীর চিত্র তুলে ধরতে আয়োজিত বিশেষ মেলায় দেখা গেছে এসব পণ্য ও সেবার সম্মিলন।

শনিবার মেলা উদ্বোধনের পর বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ বিভিন্ন স্টল ঘুরে দেখেন। তিনি ওয়ালটনের স্টলেও আসেন। এসময় তিনি বিভিন্ন পণ্যের খোঁজ খবর নেন। বিদেশী ডেলিগেটসরা কেমন আগ্রহ দেখাচ্ছেন, তা জানতে চান।

পরে তিনি সাংবাদিকদের জানান, আইপিইউ সম্মেলন উপলক্ষে আগত অতিথিসহ বিশ্বের কাছে কাছে বাংলাদেশকে তুলে ধরতেই এই মেলার আয়োজন করা হয়েছে।

মন্ত্রী বলেন, ‘আইপিইউ বাংলাদেশের ইতিহাসে সবচেয়ে বড় সম্মেলন। আমরা এই সম্মেলনকে কেন্দ্র করে বাংলাদেশকে আন্তর্জাতিক বিশ্বের কাছে তুলে ধরতে চাই। প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বে দেশ এগিয়ে যাচ্ছে, রপ্তানি খাত সমৃদ্ধ হচ্ছে। গ্রামীণ অর্থনীতির উন্নয়ন হচ্ছে। এসব চিত্র আমরা এখানে তুলে ধরব। মোট কথা, বাংলাদেশকে তুলে ধরতেই এই মেলার আয়োজন করা হয়েছে।’



তিনি বলেন, ‘সিরামিক, ওষুধ কোম্পানি, হারিয়ে যাওয়া পাটপণ্য, কাঠশিল্প, পোশাক শিল্পের বিভিন্ন কোম্পানির স্টল রয়েছে। বিদেশিরা যখন এই মেলা প্যান্ডেলে আসবেন, তারা মুগ্ধ হবেন। স্বাধীনতার পর একটি যুদ্ধবিধ্বস্ত বাংলাদেশের যে উন্নয়ন তা আমরা এই মেলার মাধ্যমে তুলে ধরব। এই মেলায় কেনাবেচার সুযোগ রয়েছে।’

এদিকে মেলার দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, মেলায় চারটি প্যাভিলিয়নসহ ৫৯টি স্টল রয়েছে। এতে সরকারি ও বেসরকারি বেশ কয়েকটি প্রতিষ্ঠান অংশ নিয়েছে।

ওয়ালটনের পাশাপাশি মেলায় শাইনপুকুর সিরামিকস, বেক্সিমকো ওষুধ কোম্পানি, বনানী টেক্সটাইল, আইসিটি, চামড়া শিল্প, প্লাস্টিক কোম্পানিসহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের স্টল রয়েছে। রয়েছে খাবারের স্টলও।

বিশেষ এই উন্নয়ন মেলার আয়োজন করেছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের অধীনস্ত এক্সপোর্ট প্রমোশন ব্যুরো (ইপিবি)। সংসদ সদস্যদের পক্ষে ক্যাপ্টেন এ বি তাজুল ইসলাম মেলার সমন্বয়কের দায়িত্ব পালন করছেন।

এদিকে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের উপ-সচিব ও মেলার দায়িত্বে থাকা মো. আবদুর রউফ জানিয়েছেন, মেলার প্রথম দিনে ১০ লাখ টাকার বেচাকেনা হয়েছে।

তিনি বলেন, ‘মেলার প্রধান উদ্দেশ্য বাংলাদেশকে তুলে ধরা (শোকেজ ইন বাংলাদেশ)। দেশের উন্নয়নের চিত্র বিশ্ববাসীর কাছে তুলে ধরার জন্যই এই মেলার আয়োজন করা হয়েছে।’

রোববার মেলার দ্বিতীয় দিন। আইপিইউ সম্মেলন চলবে ১ থেকে ৫ এপ্রিল পর্যন্ত। এই পাঁচ দিন ধরেই বিশেষ উন্নয়ন মেলা চলবে।


রাইজিংবিডি/ঢাকা/২ এপ্রিল ২০১৭/হাসান/শাহনেওয়াজ

রাইজিংবিডি.কম

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়