ঢাকা     শুক্রবার   ২৬ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ১৩ ১৪৩১

শেষ হলো ক্যান্টন ফেয়ার, নজর কেড়েছে ওয়ালটন পণ্য

অগাস্টিন সুজন || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১৩:৪৫, ১৯ এপ্রিল ২০১৭   আপডেট: ০৫:২২, ৩১ আগস্ট ২০২০
শেষ হলো ক্যান্টন ফেয়ার, নজর কেড়েছে ওয়ালটন পণ্য

ক্যান্টন ফেয়ারে ওয়ালটন প্যাভিলিয়ন পরিদর্শন করছেন চীনের বাণিজ্যবিষয়ক উপমন্ত্রী ফ্যাং আইকিংসহ উচ্চ পর্যায়ের প্রতিনিধিদল

অগাস্টিন সুজন : পর্দা নামল ক্যান্টন ফেয়ারের। শেষ হলো বিশ্বের দুই শতাধিক দেশের উৎপাদনকারী, আমদানিকারক ও ক্রেতা সাধারণের পাঁচ দিনের মিলনমেলার। পৃথিবীর সবচেয়ে বড় এই পণ্যমেলায় নজর কেড়েছে বাংলাদেশি ব্র্যান্ড ওয়ালটনের তৈরি বিভিন্ন পণ্য।

চীনের গুয়াংজু প্রদেশে গত শনিবার (১৫ এপ্রিল) সকালে শুরু হয় ১২১তম চায়না ইমপোর্ট অ্যান্ড এক্সপোর্ট ফেয়ার, যা ক্যান্টন ফেয়ার নামে সারা বিশ্বে সুপরিচিত। পাঁচ দিনের মেলা শেষ হয় বুধবার। মেলার ৬০ বছরের ইতিহাসে এবারই সবচেয়ে বেশি সংখ্যক ক্রেতা-বিক্রেতার সমাগম ঘটে বলে জানিয়েছে কর্তৃপক্ষ।

বাংলাদেশ থেকে একমাত্র প্রতিষ্ঠান হিসেবে ইলেকট্রনিক্স অ্যান্ড হাউজহোল্ড ইলেকট্রিক্যাল অ্যাপ্লায়েন্সেস ক্যাটাগরিতে পর পর দুই বছর ক্যান্টন ফেয়ারে অংশ নেয় ওয়ালটন। প্রথম দিন থেকেই বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে আসা আমদানিকারক ও ক্রেতা সাধারণের নজর কাড়ে বাংলাদেশে তৈরি ওয়ালটন ব্র্যান্ডের পণ্য। উল্লেখযোগ্য পরিমাণ রপ্তানি আদেশ পাওয়ার সঙ্গে ব্যাপক প্রশংসা কুড়ায় ওয়ালটন।

 


ওয়ালটনের অত্যাধুনিক ফ্রিজ দেখছেন ক্রেতা-দর্শনার্থীরা

 

সাশ্রয়ী মূল্যে উচ্চমানের পণ্য দিয়ে বিশ্বের বহু দেশের ব্যবসায়ী, আমদানিকারক ও দর্শনার্থীদের মন জয় করতে সক্ষম হয় ওয়ালটন। বাংলাদেশে তৈরি পণ্যের নিখুঁত ফিনিশিং, সাশ্রয়ী মূল্য এবং ব্যতিক্রমী ডিজাইনে মোহিত হন তারা। সন্তোষ প্রকাশ করেন উৎপাদন প্রক্রিয়াসহ প্রতিটি পণ্যের গুণগতমান নিয়ে। লেবানন, ইন্দোনেশিয়া, মধ্যপ্রাচ্য ও আফ্রিকাসহ বেশকিছু দেশের বড় বড় ব্যবসায়ী ইতিমধ্যে ওয়ালটন পণ্য আমদানির প্রতি আগ্রহ দেখিয়েছেন। অনেকেই আবার বাংলাদেশে ওয়ালটন ইন্ড্রাস্ট্রিয়াল পার্ক পরিদর্শনে আসার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

ক্যান্টন ফেয়ারে বিশ্বমানের পণ্য উপস্থাপন করে ব্যাপক প্রশংসার পাশাপাশি উল্লেখযোগ্য পরিমাণ পণ্যের রপ্তানি আদেশ পেয়েছে ওয়ালটন। এর মধ্যে রয়েছে উন্নত প্রযুক্তির কম্প্রেসর ও এর আনুষঙ্গিক যন্ত্রাংশ এবং ইন্টেলিজেন্ট ইনভার্টার প্রযুক্তির নন-ফ্রস্ট ফ্রিজ।

প্রথম দিন থেকেই ক্যান্টন ফেয়ারে নজরকাড়া ওয়ালটন প্যাভিলিয়ন পরিদর্শন করেছেন বিশ্বের বিভিন্ন দেশের বিশিষ্ট ব্যক্তি, সরকারি প্রতিনিধি ও সাধারণ দর্শনার্থীরা। উদ্বোধনী দিনে ওয়ালটনের মেগা প্যাভিলিয়ন পরিদর্শন করেন চীনের বাণিজ্যবিষয়ক উপমন্ত্রী ফ্যাং আইকিংসহ উচ্চ পর্যায়ের প্রতিনিধিদল। ওয়ালটন প্যাভিলিয়নে এসে ‘মেড ইন বাংলাদেশ’ খ্যাত আন্তর্জাতিক মানসম্পন্ন ওয়ালটন পণ্যের ভূয়সী প্রশংসা করেন ফ্যাং আইকিং। যেকোনো ধরনের উদ্ভাবনী পণ্যের জন্য চীনের বাজার সবসময় উম্মুক্ত রয়েছে, এ কথা জানিয়ে ওয়ালটনকে তিনি চীনের বাজার ও ক্রেতা সাধারণের দৃষ্টিভঙ্গি নিয়ে গবেষণা ও সে অনুযায়ী পণ্য উৎপাদন ও সরবরাহের পরামর্শ দেন।

 


ওয়ালটন প্যাভিলিয়নে বিভিন্ন দেশের ক্রেতা-দর্শনার্থীদের ভিড়

 

পাঁচ দিনব্যাপী এ মেলায় যারা ওয়ালটন প্যাভিলিয়ন পরিদর্শন করেছেন তাদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য কয়েকজন হলেন- লেবাননের মোহাম্মদ অ্যান্ড আলী মোবারক প্রতিষ্ঠানের সত্ত্বাধিকারী আলী মোবারক, ইন্দোনেশিয়ার ড. আলিম মার্কোস, সাইপ্রাসের ফাতরিন কাভাজ, নিউজিল্যান্ডের জেফ অ্যালেন, সংযুক্ত আরব আমিরাতের প্রদীপ লাল জানই ও আহমেদ, ভিয়েতনামের ডিন, ফিনল্যান্ডের জার্নো ভাইনিয়ন পা, দক্ষিণ আফ্রিকার ডেনিস উইলকিনসন, ইয়েমেনের মোহাম্মেদ, কানাডার র‌্যামি ফারেস এবং সুদানের আবদুল আজিজ, ইতালির ডেভিড পিগোজি, ভারতের সতীশ, ফিজির হ্যমফেরি চাংগ, ইউক্রেনের সার্জে বুলগাকোভ ও ইরাকের আল রওশীদ এবং সুদানের আবদুল আজিজ। তারা নিজ নিজ দেশে ওয়ালটনের পণ্য আমদানিতে আগ্রহ দেখান।

তাদের মধ্যে লেবাননের মোহাম্মদ অ্যান্ড আলী মোবারক প্রতিষ্ঠানের সত্ত্বাধিকারী আলী মোবারক ওয়ালটনের কাছ থেকে উল্লেখযোগ্য পরিমাণ নন-ফ্রস্ট ফ্রিজ ক্রয়ের প্রাথমিক প্রক্রিয়া সম্পন্ন করেছেন। এ ছাড়া, ইন্দোনেশিয়া ও মালয়েশিয়ার কয়েকটি ইলেকট্রনিক্স পণ্য প্রস্তুতকারী প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধিরা ‘মেড ইন বাংলাদেশ’ স্টিকারযুক্ত ওয়ালটন কারখানায় তৈরি কম্প্রেসর আমদানির ব্যাপারে তাদের আগ্রহের কথা জানিয়েছেন।

ওয়ালটনের আন্তর্জাতিক বিপণন বিভাগের প্রধান রকিবুল ইসলাম বলেন, উন্নতমানের পণ্য দিয়ে বিশ্ববাজারে বাংলাদেশকে উপস্থাপন করতে ক্যান্টন ফেয়ারে অংশ নেয় ওয়ালটন। সবাই জানে, চীনে তৈরি হরেক রকম পণ্য বাংলাদেশে আমদানি হয়। সেই চীনের বাজারেই বাংলাদেশে তৈরি পণ্য উপস্থাপন করে আমরা প্রমাণ করেছি যে, শিল্প-প্রযুক্তি ক্ষেত্রে বাংলাদেশও এগিয়ে যাচ্ছে। ক্যান্টন ফেয়ারে আগত বিশ্বের দুই শতাধিক দেশের মানুষের কাছে বাংলাদেশ আবির্ভূত হয়েছে বিশ্বমানসম্পন্ন রপ্তানিযোগ্য পণ্যের উৎপাদক হিসেবে। চীনের মাটিতে বাংলাদেশকে আমরা শিল্পবান্ধব দেশ হিসেবে উপস্থাপন করতে সক্ষম হয়েছি। মেলায় অংশগ্রহণে এটাই আমাদের প্রধান সার্থকতা।

 


ক্যান্টন ফেয়ারে ওয়ালটন প্যাভিলিয়নের একাংশ। পণ্য দেখছেন বিভিন্ন দেশের ক্রেতা-দর্শনার্থীরা

 

তিনি আরো বলেন, ক্যান্টন ফেয়ারে ক্রেতারা প্রধানত দেখছেন কার পণ্যের মান কত ভালো এবং সেটা কত কম দামে কেনা যাচ্ছে। এই বিষয়টিই আমাদের আশা জাগাচ্ছে। কারণ, পণ্যের মাথাপিছু উৎপাদন মূল্যে অনেকটাই এগিয়ে আছে ওয়ালটন। আশা করছি, বিশ্বের বিভিন্ন দেশ থেকে আমরা ব্যাপক রপ্তানি আদেশ পেতে সক্ষম হবো।



রাইজিংবিডি/ঢাকা/১৯ এপ্রিল ২০১৭/সুজন/রফিক

রাইজিংবিডি.কম

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়