ঢাকা     শুক্রবার   ২৬ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ১৩ ১৪৩১

স্বল্প মেয়াদি বৈদেশিক ঋণপ্রবাহ বৃদ্ধিতে শঙ্কা প্রকাশ

এম এ রহমান মাসুম || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১২:৫০, ২৭ জুলাই ২০১৭   আপডেট: ০৫:২২, ৩১ আগস্ট ২০২০
স্বল্প মেয়াদি বৈদেশিক ঋণপ্রবাহ বৃদ্ধিতে শঙ্কা প্রকাশ

নিজস্ব প্রতিবেদক : গত পাঁচ বছরে বেসরকারি খাতে স্বল্প মেয়াদি বৈদেশিক ঋণ ব্যাপকভাবে  বৃদ্ধি পেয়েছে। বর্তমানে এ ধরনের ঋণের প্রবৃদ্ধির হার ৩১ শতাংশের বেশি। এতে আগামী দিনে বাংলাদেশের বৈদেশিক লেনদেনে ঝুঁকি তৈরি হতে পারে বলে আশঙ্কা করছেন ব্যাংকিং খাতের বিশেষজ্ঞরা।

২০১৬ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত বেসরকারি খাতে এ ধরনের বৈদেশিক ঋণের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ৬১৬ কোটি ডলার। যেখানে এ খাতে ২০১২ সালে স্বল্প মেয়াদি বিদেশি ঋণ ছিল সাড়ে ২৩ কোটি ডলার। ২০১৪ সালে তা বেড়ে দাঁড়ায় ৩৮ কোটি ডলারে।

বৃহস্পতিবার রাজধানীর মিরপুরে বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব ব্যাংক ম্যানেজমেন্ট (বিআইবিএম) অডিটোরিয়ামে ‘প্রসপেক্টস অ্যান্ড চ্যালেঞ্জ অব শর্ট টার্ম ফরেন কারেন্সি ফিন্যান্সিং অব ব্যাংকস’ শীর্ষক কর্মশালায় এক গবেষণা প্রতিবেদনে এসব তথ্য উঠে আসে।

বিআইবিএমের অধ্যাপক ড. শাহ মো. আহসান হাবীবের নেতৃত্বে ছয় সদস্যের একটি টিম গবেষণা প্রতিবেদন উপস্থাপন করে।

কর্মশালায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ ব্যাংকের ডেপুটি গভর্নর আবু হেনা মোহা. রাজী হাসান। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন বিআইবিএমের মহাপরিচালক ড. তৌফিক আহমদ চৌধুরী।

কর্মশালায় বক্তারা বলেন, স্বল্প মেয়াদি এসব ঋণের বিষয়ে নজরদারির অভাব রয়েছে। এ সুযোগে বিদেশ থেকে আনা এসব অর্থের অপব্যবহারও হচ্ছে। এভাবে চলতে থাকলে অদূর ভবিষ্যতে বড় ধরনের সমস্যার মধ্যে পড়তে পারে দেশ। বিষয়টি বিবেচনায় নিয়ে একটি নীতিমালার আওতায় এ ধরনের ঋণের নজরদারি করতে হবে।

বাংলাদেশ ব্যাংকের ডেপুটি গভর্নর বলেন, দেশের মধ্যে যখন উচ্চ সুদহার ছিল, তখন বেসরকারি খাতে বিদেশি ঋণ নেওয়ার অনুমোদন দেওয়া হয়। সে সময়ে স্থানীয় ব্যাংকগুলোর সুদের হার ছিল ১৭ থেকে ১৭ শতাংশ। এখন তা ১০ শতাংশের নিচে নেমে এসেছে। বর্তমানে বিদেশি ঋণের সঙ্গে দেশীয় ব্যাংকগুলোর ঋণের সুদহারে তেমন কোনো পার্থক্য নেই।

তিনি বলেন, দেশের তুলনায় বিদেশি ঋণের সুদহার তুলনামূলক সস্তা হলেও সীমাহীন ঋণের অনুমোদন দেওয়া হবে না। কেননা পূর্ব এশিয়ার একাধিক দেশ বেসরকারি খাতে বিদেশি ঋণ নিয়ে বিপাকে পড়েছে। এজন্য বিষয়টি নিয়ে ভাববার প্রয়োজন রয়েছে।

বিআইবিএমের মহাপরিচালক ড. তৌফিক আহমেদ চৌধূরী বলেন, স্বল্প মেয়াদি বৈদেশিক ঋণের ভালো দিকের পাশাপাশি বেশ কিছু ঝুঁকিও রয়েছে। যদি বৈশ্বিক চিন্তা করি, তাহলে আগে যতগুলো আর্থিক সংকট তৈরি হয়েছে সেখানে দেখা গেছে, স্বল্প মেয়াদি ঋণ কম খরচে বড় করা হয়। বড় করে যখন ফিরিয়ে দেওয়ার সময় হতো তখন যদি লোকাল কারেন্সি অবমূল্যায়ন করে তখন ব্যালেন্স অব পেমেন্টে সমস্যা দেখা দেয়।

তিনি বলেন, অপশোর ব্যাংকিংয়ের সোর্সেস অব ফান্ডের ব্যাপারে বাংলাদেশ ব্যাংককে সবসময় মনিটরিং করা উচিত। প্রত্যেকটি ব্যাংকের ফরেন কারেন্সির দায় বেড়ে যাচ্ছে। যদিও বর্তমান অবস্থান এখনো সংকট পর্যায়ে পৌঁছায়নি। কিন্তু ক্রাইসিস সেশন টাচ করার পরে কি আমরা পদক্ষেপ নেব, নাকি তার আগেই ব্যাংকগুলোকে নিবৃত করব, যাতে সংকট তৈরি না করে। সেজন্য একটা শক্ত মনিটরিং ব্যবস্থা গড়ে তুলতে হবে।



রাইজিংবিডি/ঢাকা/২৭ জুলাই /এম এ রহমান/মুশফিক

রাইজিংবিডি.কম

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়