ঢাকা     শুক্রবার   ২৬ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ১৩ ১৪৩১

কসবা ও আখাউড়ার ৪ ইউনিয়ন প্লাবিত

সমীর চক্রবর্তী || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১০:১৫, ১২ আগস্ট ২০১৭   আপডেট: ০৫:২২, ৩১ আগস্ট ২০২০
কসবা ও আখাউড়ার ৪ ইউনিয়ন প্লাবিত

ব্রাহ্মণবাড়িয়া  প্রতিনিধি : গত কয়েকদিনের টানা বর্ষণ ও ভারত থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার কসবা এবং আখাউড়া উপজেলার বেশ কিছু গ্রাম প্লাবিত হয়েছে।

ঢাকা-আগরতলা আন্তর্জাতিক সড়ক প্লাবিত হয়ে বন্ধ রয়েছে আখাউড়া স্থলবন্দরের কার্যক্রম। অনেকে ঘড়বাড়ি ছেড়ে উঠেছেন আশ্রয়কেন্দ্রে। গৃহপালিত পশুসহ চরম দুর্ভোগে পড়েছেন ওইসব এলাকার মানুষ।

পাহাড়ি ঢলে হাওরা নদীর বেড়িবাঁধ ভেঙে তিনটি ইউনিয়নে অকাল বন্যা দেখা দিয়েছে। বন্যায় তলিয়ে গেছে বাড়ি-ঘর, ফসলি জমি। ভেসে গেছে পুকুরের মাছ।

খোজঁ নিয়ে জানা গেছে, গত তিন দিনের প্রবল বর্ষণ ও উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে আখাউড়া উপজেলার মনিয়ন্দ ইউনিয়নের ইটনা গ্রামে গত শুক্রবার বিকেলে হাওরা নদীর বাধঁ ভেঙে গেছে। এতে আখাউড়ার মনিয়ন্দ, মোগড়া ও দক্ষিণ ইউনিয়নের বেশ কয়েকটি গ্রাম পানিতে তলিয়ে গেছে। দেখা দিয়েছে অকাল বন্যা। ডুবে গেছে ফসলি জমি ও বাড়ি-ঘর। ভেসে গেছে পুকুরের মাছ।

আখাউড়া দক্ষিণ ইউনিয়নের চেয়ারম্যান জালাল উদ্দিন জানান, এই ইউনিয়নের বীরচন্দ্রপুর, কালিকাপুর, হিরাপুর, আনুয়ারপুর, আব্দুল্লাপুরসহ কয়েকটি গ্রাম তলিয়ে গেছে। কাঁচা বাড়ি রয়েছে এমন বেশ কিছু পরিবার আশ্রয়কেন্দ্রে উঠেছে। ইতিমধ্যে উপজেলা  নির্বাহী কর্মকর্তা ক্ষতিগ্রস্ত এলাকা পরিদর্শন করেছেন।

আখাউড়ার মনিয়ন্দ ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. কামাল ভূইয়া বলেন, ইটনা এলাকায় হাওরা নদীর বাঁধ ভেঙে যাওয়ায় ইটনা, আইরল, তুলাশিমুল, শৌনলোহঘর, টনকিসহ আরো কয়েকটি গ্রাম পানিতে তলিয়ে গেছে। ফসলি জমি নষ্ট হয়েছে। ভেসে গেছে পুকুরের মাছ।

আখাউড়ার মোগড়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. মনির হোসেন জানান, ইউনিয়নের বাচিয়া, শান্তিপুর, নিলাখাদ, কানুয়াপাড়া, কুসুমবাগ, আদমপুর ও গোয়ালবাড়ি এলাকার বাড়ি-ঘর ডুবে গেছে। খোলা হয়েছে দুটি আশ্রয় কেন্দ্র।

 



আখাউড়া স্থলবন্দর রাজস্ব কর্মকর্তা মো. সফিকুল ইসলাম বলেন, প্রবল বর্ষণ ও পাহাড়ি ঢলে ঢাকা- আগরতলা আন্তর্জাতিক সড়কে প্রবল স্রোত রয়েছে। ফলে গাড়ি চলাচল করতে না পাড়ায় স্থল বন্দর কার্যক্রম বন্ধ রয়েছে।

আখাউড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মোহাম্মদ সামছুজ্জামান বলেন, হাওরা নদীর রেড়িবাঁধ ভেঙে তলিয়ে গেছে তিনটি ইউনিয়নের ফসলি জমি ও বাড়ি-ঘর। উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে খোলা হয়েছে বন্যা আশ্রয় কেন্দ্র। বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে ছয় মেট্টিক টন চাল।

এদিকে প্রবল বর্ষণে ও উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে কসবা উপজেলার গোপীনাথপুর ইউনিয়নের জয়নগর-ধজনগর সড়কের গোয়ালবাড়ি সেতু এলাকার সড়কটি ভেঙে গেছে। ওই ইউনিয়নের রাজনগর, নোয়াগাঁও, ফতেহপুর, পাথারিয়াদ্বার, জেঠুয়ামুড়া, মধুপুর, জয়নগর, বিষ্ণাউড়ি ও বাহাদুরপুরসহ আরো বেশ কয়েকটি গ্রামের ফসলি জমি পানিতে তলিয়ে গেছে।

কসবার গোপীনাথপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান এস.এম মান্নান জাহাঙ্গীর বলেন, গোপীনাথ গ্রামের বেশ কয়েকটি মাটির ঘর ভেঙে গেছে। রাস্তা ভেঙে কয়েকটি গ্রামের ফসলি জমি পানিতে তলিয়ে গেছে। এই ইউনিয়নের শতকরা ৮০ ভাগ পুকুরের মাছ ভেসে গেছে বলে জানান তিনি।

কসবা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) হাসিনা ইসলাম বলেন, উপজেলার গোপীনাথপুর ও বায়েক ইউনিয়নের রাস্তা ভেঙে ফসলি জমি পানিতে তলিয়ে গেছে। ভেসে গেছে পুকুরের মাছ। পানিতে আটকা পড়া মানুষদের সার্বিক সহায়তা করছে উপজেলা প্রশাসন।



রাইজিংবিডি/ব্রাহ্মণবাড়িয়ার/১২ আগস্ট ১৭/সমীর চক্রবর্তী/রুহুল

রাইজিংবিডি.কম

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়