ঢাকা     শনিবার   ২০ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ৭ ১৪৩১

নির্বাচনে সেনা চায় জাপা

মোহাম্মদ নঈমুদ্দীন || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১২:৫৩, ৮ অক্টোবর ২০১৭   আপডেট: ০৫:২২, ৩১ আগস্ট ২০২০
নির্বাচনে সেনা চায় জাপা

মোহাম্মদ নঈমুদ্দীন : আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনে সব দলের সমান সুযোগ নিশ্চিত করতে সেনাবাহিনী মোতায়েন চায় সরকার ও বিরোধী দলে থাকা হুসেইন মুহম্মদ এরশাদের নেতৃত্বাধীন জাতীয় পার্টি (জাপা)।

সোমবার বেলা ১১টায় রাজধানীর আগারগাঁওয়ে নির্বাচন ভবনের সম্মেলন কক্ষে প্রধান নির্বাচন কমিশনারের সঙ্গে রাজনৈতিক দলগুলোর সংলাপে জাতীয় পার্টির পক্ষ থেকে সেনা মোতায়েনের এ দাবি তোলা হবে।

সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের স্বার্থে রাজনৈতিক দলগুলোর মতামত নিতে নির্বাচন কমিশন ধারাবাহিক সংলাপের আয়োজন করে আসছে।

সোমবার বেলা ১১টায় জাতীয় পার্টির সঙ্গে নির্বাচন কমিশনের পূর্বনির্ধারিত বৈঠক হবে। প্রধান নির্বাচন কমিশনার কে এম নুরুল হুদার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিতব্য বৈঠকে জাতীয় পার্টির প্রতিনিধিদলের নেতৃত্ব দেবেন দলটির মহাসচিব এ বি এম রুহুল আমিন হাওলাদার এমপি।

জানা গেছে, নির্বাচন কমিশনের এই সংলাপে জাতীয় পার্টি মোট আটটি প্রস্তাব দেবে। তার মধ্যে অন্যতম- নির্বাচনকালে সেনা মোতায়েন। সুষ্ঠু ‍নির্বাচনের স্বার্থে নির্বাচনকালীন সরকার গঠনের পর থেকেই সারা দেশে সশস্ত্র বাহিনী মোতায়েন করার প্রস্তাব দেবে দলটি। তবে তারা সংবিধান অনুযায়ী এ নির্বাচন কমিশনের অধীনে সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন দাবি করবে। নির্বাচনী শিডিউল ঘোষণার পর সংসদ ভেঙে দেওয়ার প্রস্তাবও করবে জাতীয় পার্টি।

নির্বাচনে সেনা মোতায়েনের প্রস্তাবের কথা স্বীকার করে জাপার মহাসচিব এ বি এম রহুল আমিন হাওলাদার বলেন, আমরা চাই, দেশ-বিদেশে সবার কাছে গ্রহণযোগ্য নির্বাচন। যাতে সবাই সমান সুযোগ পাবে।

তিনি বলেন, আমরা সোমবার ইসির সঙ্গে সংলাপে বসছি। নির্বাচনের সময় সেনা মোতায়েন চাইব। নির্বাচনের কমপক্ষে সাত দিন আগে সেনা মোতায়েন করে নির্বাচনের পরিবেশ সৃষ্টি করতে হবে।

জাপা সূত্রে জানা গেছে, অন্য প্রস্তাবগুলোর মধ্যে রয়েছে-

নির্বাচনের সময় সারা দেশে সশস্ত্র বাহিনী পাঠাতে হবে।

নির্বাচন কমিশনকে সম্পূর্ণ স্বাধীনভাবে কাজ করার সুযোগ দিতে হবে।

অন্তর্বর্তী সরকার নির্বাচন কমিশনের কাজে হস্তক্ষেপ করতে পারবে না।

নির্বাচনের সিডিউল ঘোষণার পর সংসদ ভেঙে দিতে হবে।

সংসদে প্রতিনিধিত্বকারী সকল দল থেকে আনুপাতিক হারে প্রতিনিধি নিয়ে অন্তবর্তীকালীন সরকার গঠন করতে হবে।

দলীয় প্রধানের সুপারিশের ভিত্তিতে অন্তবর্তী সরকারে মন্ত্রী নিযোগ করতে হবে।

সিডিউল ঘোষণার পর জেলা উপজেলা পর্যায়ে বিতর্কিত কর্মকর্তাদের মাঠে রাখা যাবে না।

প্রার্থীর নির্বাচনী ব্যয় ৮ লাখ টাকা করতে হবে।

দলটির সূত্র আরো জানায়, জাতীয় পার্টি সংলাপে নির্বাচনের বর্তমান পদ্ধতির সংস্কার চাইবে। এর আগে বর্তমান নির্বাচন পদ্ধতির পরিবর্তন করে ভোটের আনুপাতিক হারে সংসদীয় আসন বণ্টনের প্রস্তাব দিয়েছিলেন জাতীয় পার্টির (জাপা) চেয়ারম্যান হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ।

তার প্রস্তাব অনুযায়ী, ভোটাররা সরাসরি প্রার্থীকে নয়, দলকে ভোট দেবে। সব দল প্রাপ্ত ভোটের ভিত্তিতে আনুপাতিক হারে সংসদীয় আসন পাবে।

হুসেইন মুহম্মদ এরশাদের প্রস্তাবিত নির্বাচন পদ্ধতি অনুযায়ী, জাতীয় সংসদের ৩০০ আসনে সব রাজনৈতিক দল সামর্থ্য অনুসারে প্রার্থী মনোনীত করে নির্বাচন কমিশনে একটি তালিকা জমা দেবে। তালিকার সঙ্গে সব প্রার্থীর মনোনয়নপত্র জমা থাকবে। একই প্রার্থী একাধিক দলের তালিকায় থাকলে তার প্রার্থিতা বাতিল হবে। সব দল নির্ধারিত কোটা অনুসারে (সাধারণ ৫০ শতাংশ, মহিলা ৩০ শতাংশ, সংখ্যালঘু ১০ শতাংশ, পেশাজীবী ১০ শতাংশ হারে) প্রার্থী তালিকা তৈরি করবে। প্রাপ্ত ভোটের ভিত্তিতে নির্বাচন কমিশন নির্ধারণ করবে কোন দল কোন কোটায় কত আসন পাবে। যে দল সর্বাধিক ভোট পাবে, সেই দল ভগ্নাংশের সুযোগ লাভ করবে। নির্বাচন কমিশন নির্ধারণ করবে কোন আসনে কোন দলের প্রার্থী প্রতিনিধিত্ব করবেন।

জাপা চেয়ারম্যানের দাবি, এ পদ্ধতিতে ভোটার সরাসরি প্রার্থীকে নয়, দলকে ভোট দেবে। সব দল প্রাপ্ত ভোটের ভিত্তিতে আনুপাতিক হারে সংসদীয় আসনের সদস্য পাবে। কোনো দল ন্যূনতম ১ শতাংশ ভোট পেলেও তারা তিনজন সদস্য পাবে।

জাপা চেয়ারম্যান আরো দাবি করেন, তার প্রস্তাবিত রূপরেখা অনুযায়ী নির্বাচন পদ্ধতির সংস্কার করা হলে একটি স্বাধীন নির্বাচন কমিশন বহাল থাকলে নির্বাচনকালীন অনির্বাচিত তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থারও প্রয়োজন পড়বে না। এ পদ্ধতি বাস্তবায়ন করা হলে নির্বাচনে অর্থ, অস্ত্র, সন্ত্রাস ও পেশিশক্তির ব্যবহার ও নির্বাচনকেন্দ্রিক রক্তপাত হবে না। এ পদ্ধতিতে নির্বাচন আয়োজন করলে উপনির্বাচনেরও প্রয়োজন হবে না।



রাইজিংবিডি/ঢাকা/৮ অক্টোবর ২০১৭/নঈমুদ্দীন/রফিক

রাইজিংবিডি.কম

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়