ঢাকা     শুক্রবার   ১৯ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ৬ ১৪৩১

দেশে দক্ষ জনবল তৈরি করতে হবে : অর্থমন্ত্রী

কেএমএ হাসনাত || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১২:৫৪, ১২ ডিসেম্বর ২০১৭   আপডেট: ০৫:২২, ৩১ আগস্ট ২০২০
দেশে দক্ষ জনবল তৈরি করতে হবে : অর্থমন্ত্রী

বিশেষ প্রতিবেদক : অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত বলেছেন, দেশের বৃহৎ চারটি শিল্প খাতে মধ্যম এবং নির্বাহী পর্যায়ে দক্ষ জনবলের অভাবে বিদেশিদের নিয়োগ দেওয়া হচ্ছে। এতে দেশ থেকে প্রতিবছর প্রায় ৫ হাজার কোটি টাকার সমপরিমাণ বৈদেশিক মুদ্রা চলে যাচ্ছে। মূল্যবান এ বৈদেশিক মুদ্রা বাঁচানোর পাশাপাশি উন্নয়নের ধারা অব্যাহত রাখতে দেশেই দক্ষ জনবল তৈরির কোনো বিকল্প নেই।

মঙ্গলবার সচিবালয়ে বাংলাদেশ টেক্সটাইল বিশ্ববিদ্যালয় ও ইস্ট ওয়েস্ট বিশ্ববিদ্যালয়ে এক্সিকিউটিভ ডেভেলপমেন্ট সেন্টার (ইডিসি) স্থাপনের জন্য সমঝোতা স্মারক ও চুক্তি স্বাক্ষর অনুষ্ঠানে অর্থমন্ত্রী এ কথা বলেন।

এ সময় বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রাক্তন গভর্নর ও ইস্ট ওয়েস্ট বিশ্ববিদ্যালয়ের বোর্ড অব ট্রাস্টিজের চেয়ারম্যান ড. মোহাম্মদ ফরাসউদ্দিন, অর্থ সচিব মুসলেউদ্দিন চৌধুরী, বাংলাদেশ টেক্সটাইল বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক মাসুদ আহমেদ, ইস্ট ওয়েস্ট বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক এম এ শহীদুল হক, প্রকল্প পরিচালক ও অর্থ মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব আব্দুর রউফ তালুকদারসহ সংশ্লিষ্টরা উপস্থিত ছিলেন।

অনুষ্ঠানে বিভিন্ন শিল্পপ্রতিষ্ঠানের জন্য নির্বাহী এবং মধ্যম পর্যায়ের দক্ষ জনবল তৈরির প্রশিক্ষণের জন্য ২২ কোটি ৩৯ লাখ ৩৮ হাজার টাকার দুটি পৃথক চুক্তি স্বাক্ষর হয়। প্রকল্প পরিচালক এবং ইস্ট ওয়েস্ট বিশ্ববিদ্যালয় ও বাংলাদেশ টেক্সটাইল বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য নিজ নিজ প্রতিষ্ঠানের পক্ষে চুক্তিতে স্বাক্ষর করেন।

অনুষ্ঠানে জানানো হয়, মধ্যম এবং নির্বাহী ব্যবস্থাপনার ক্ষেত্রে দক্ষ জনবলের অভাবে দেশের উল্লেখযোগ্য কয়েকটি খাতে প্রায় ২ লাখ বিদেশি কর্মী কাজ করছেন। এতে প্রতিবছর প্রায় ৫ হাজার কোটি টাকা দেশ থেকে বাইরে চলে যাচ্ছে।

অর্থ মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, ‘স্কিল ফর এমপ্লয়মেন্ট ইনভেস্টমেন্ট প্রোগ্রাম (এসইআইপি)’ প্রকল্পটি এশিয়ান উন্নয়ন ব্যাংকের (এডিবি) এডিএফ ঋণ, সুইস এজেন্সি ফর ডেভেলপমেন্ট অ্যান্ড কোঅপারেশনের (এসডিসি) অনুদান এবং বাংলাদেশ সরকারের নিজস্ব সম্পদে বাস্তাবায়িত হচ্ছে। ২০১৪-২০২০ মেয়াদে দক্ষতা উন্নয়নে ৫ লাখ ২ হাজার জনকে দক্ষতা উন্নয়ন প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে। যেখানে প্রশিক্ষণপ্রাপ্তদের মধ্যে ৭০ শতাংশ প্রশিক্ষণার্থীকে সংশ্লিষ্ট শিল্প সংগঠনের আওতাভূক্ত প্রতিষ্ঠানে চাকরি দেওয়ায় সহায়তা করা হবে।

সূত্র জানায়, এ পর্যন্ত ১২টি সংগঠনের সঙ্গে চুক্তি হয়েছে। সেখানে মূলত বিভিন্ন কল-কারখানার বিদ্যমান শ্রমিক ও সুপারভাইজারদের নিম্ন পর্যায়ের দক্ষতা বৃদ্ধিতে প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছে। এসব কারখানায় মধ্যম ও উচ্চ পর্যায়ের ব্যবস্থাপকদের দক্ষতা বৃদ্ধির জন্য এ প্রকল্প থেকে বর্তমানে উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। এ লক্ষ্যে এ প্রশিক্ষণ কার্যক্রম বাস্তবায়নে বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায়ে একটি করে এক্সিকিউটিভ ডেভেলপমেন্ট সেন্টার স্থাপনের প্রস্তুতিমূলক কাজের জন্য চারটি বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গে সেইপ প্রকল্প থেকে সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষরিত হয়েছে। এর মধ্যে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইবি অনুষদ (টেক্সটাইল উপখাত), টেক্সটাইল বিশ্ববিদ্যালয় (টেক্সটাইল উপখাত) ব্রাক বিশ্ববিদ্যালয় (নিটওয়্যার উপখাত) ও ইস্ট ওয়েস্ট বিশ্ববিদ্যালয় (পাদুকা ও চামড়াজাত শিল্প খাত)। এরই অংশ হিসেব মঙ্গলবার দুটি বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গে চুক্তি স্বাক্ষর হলো।

অনুষ্ঠানে অর্থমন্ত্রী বলেন, আমাদের দেশে এখন বিপুল পরিমাণ বিদেশি কাজ করছে। এতে যে অর্থ ব্যয় হচ্ছে তা দেশের কাজে লাগছে না। আমরা নিজেরাই দক্ষতা অর্জন করতে পারলে তা দেশের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধিকে আরো গতিশীল করবে।

ড. মোহাম্মদ ফরাসউদ্দিন বলেন, সরকার দেশে দক্ষ জনবল তৈরিতে মনোনিবেশ করেছে। এটা অত্যন্ত ভালো কথা। উদ্যোগটি আরো আগে নেওয়া উচিত ছিল। সুষ্ঠু ব্যবস্থাপনা নিশ্চিত করা গেলে বিদ্যমান সম্পদ নিয়েই ৫০ শতাংশ বেশি উপার্জন করা সম্ভব। আমাদের দেশে প্রশিক্ষিত লোকের যে অভাব রয়েছে, আশা করি, সরকারের এ উদ্যোগ সে অভাব পূরণে সক্ষম হবে।

অনুষ্ঠানে অর্থ সচিব মুসলেউদ্দিন চৌধুরী প্রকল্পের বিভিন্ন দিক তুলে ধরেন।




রাইজিংবিডি/ঢাকা/১২ ডিসেম্বর ২০১৭/হাসনাত/রফিক

রাইজিংবিডি.কম

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়