ঢাকা     শুক্রবার   ১৯ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ৬ ১৪৩১

‘কর হার উল্লেখযোগ্য হারে কমানোর চিন্তা করছে সরকার’

হাসিবুল ইসলাম || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১৪:২৩, ২২ জানুয়ারি ২০১৮   আপডেট: ০৫:২২, ৩১ আগস্ট ২০২০
‘কর হার উল্লেখযোগ্য হারে কমানোর চিন্তা করছে সরকার’

নিজস্ব প্রতিবেদক : পরিকল্পনামন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল বলেছেন, রাজস্ব আয় বাড়ানোর জন্য শিল্প খাতে বিদ্যমান করের হার উল্লেখযোগ্য হারে কমানোর বিষয়টি সরকারের সক্রিয় বিবেচনায় আছে।

সোমবার রাজধানীর আগারগাঁওয়ে এনইসি সম্মেলন কক্ষে ঢাকা চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির (ডিসিসিআই) সভাপতি আবুল কাসেম খানের নেতৃত্বে ডিসিসিআইর পরিচালনা পর্ষদের সদস্যরা পরিকল্পনামন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামালের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন। এ সময় মন্ত্রী এসব কথা বলেন।

পরিকল্পনামন্ত্রী বলেন, আমরা ট্যাক্স এমন যায়গায় নিয়ে আসব যা অবিশ্বাস্য। আগামী অক্টোবর-নভেম্বরের মধ্যে কস্ট অব ডুয়িং বিজনেস কমে আসবে।

তিনি আরো বলেন, ভোলায় ১ দশমিক ৫ ট্রিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস পাওয়ায় দেশের বর্তমান গ্যাসের মজুদ ১৪ দশমিক ৫ ট্রিলিয়ন ঘনফুটে পৌঁছেছে।

মন্ত্রী জানান, চলতি অর্থবছরের প্রথম ছয় মাসে এডিপির প্রায় ৩২ শতাংশ বাস্তবায়িত হয়েছে। এসডিজি অর্জনে সরকারি ও বেসরকারি খাতকে একযোগে কাজ করতে হবে। এ ক্ষেত্রে প্রয়োজন হবে প্রায় ১ দশমিক ৩১ ট্রিলিয়ন মার্কিন ডলার।

মানবসম্পদের দক্ষতা উন্নয়নে বেসরকারি খাতের অংশগ্রহণ আরো বৃদ্ধি এবং প্রযুক্তিভিত্তিক শিক্ষাব্যবস্থা সম্প্রসারণে বিভিন্ন প্রকল্পে সরকারের সঙ্গে বেসরকারি খাতকে এগিয়ে আসার আহ্বান জানান পরিকল্পনামন্ত্রী।

চট্টগ্রাম বন্দরের বিষয়ে মন্ত্রী বলেন, দ্রুত এ বন্দরের সক্ষমতা ও দক্ষতা উন্নয়নে সরকার কার্যকর উদ্যোগ গ্রহণ করতে যাচ্ছে।

তিনি আরো বলেন, গত বছর বাংলাদেশ থেকে ১০ লাখ ৩০ হাজার ১৫০ জনবল বিশ্বের বিভিন্ন দেশে রপ্তানি হয়েছে। বৈধ চ্যানেলের মাধ্যমে রেমিট্যান্স আহরণের পরিমাণ বছরে প্রায় ১৫ বিলিয়ন মার্কিন ডলার।

ডিসিসিআইর সভাপতি আবুল কাসেম খান সপ্তম পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনায় ৭ দশমিক ২৮ শতাংশ হারে প্রবৃদ্ধি অর্জন ও ২০২১ সালের মধ্যে বাংলাদেশকে একটি মধ্যম আয়ের দেশে পরিণত করার লক্ষ্যে কর্মসংস্থান সৃষ্টি এবং মানবসম্পদের দক্ষতা বৃদ্ধির বিষয়ে গুরুত্ব আরোপের জন্য পরিকল্পনামন্ত্রীকে ধন্যবাদ জানান।

তিনি বেসরকারি খাতের বিনিয়োগের পরিমান ২৩ দশমিক ১ শতাংশ থেকে ২৯ শতাংশে উন্নীত করার পাশাপাশি অবকাঠামো উন্নয়ন, শিল্পপ্রতিষ্ঠানে জ্বালানি নিরাপত্তা নিশ্চিতকরণ, শুল্ক কাঠামোর সংস্কার ও আধুনিকায়ন এবং প্রশাসনিক ক্ষেত্রে দক্ষ জনসম্পদ তৈরির জন্য কার্যকর পরিকল্পনা প্রণয়নের আহ্বান জানান।

ঢাকা চেম্বারের সভাপতি দেশের মেগা প্রকল্পগুলো যথাসময়ে বাস্তবায়নের জন্য প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বে সরকারি ও বেসরকারি খাতের প্রতিনিধিদের সমন্বয়ে ‘ন্যাশনাল ইনফ্রাস্ট্রাকচার ডেভেলপমেন্ট অ্যান্ড মনিটরিং অ্যাডভাইজরি অথরিটি (নিডমা)’ নামে জাতীয় বিশেষ অথরিটি গঠনসহ ২০১৯ ও ২০২০ সালকে ‘অবকাঠামো বছর’ হিসেবে ঘোষণার প্রস্তাব করেন।

তিনি বলেন, ঢাকা শহরের যানজট নিরসনে প্রস্তাবিত এমআরটি, বিআরটিসহ সব ধরনের ফাস্ট ট্র্যাক প্রকল্প শিগগির বাস্তাবায়ন ও নির্দিষ্ট সময়ে সম্পন্ন করতে পারলে প্রতি বছর প্রায় ২ হাজার কোটি টাকার কর্মঘণ্টা রক্ষা করা সম্ভব হবে।

তিনি চট্টগ্রাম বন্দরের স্টোরেজ ক্যাপাসিটি ও কোল্ড স্টোরেজ সুবিধা বৃদ্ধি, জেটির আধুনিকায়ন ও আধুনিক যন্ত্রপাতির সংযোজন বাড়ানোর ওপর গুরুত্ব আরোপ করেন।

ডিসিসিআইর সভাপতি বলেন, বর্তমানে বাংলাদেশে জিডিপির ২ দশমিক ৮৭ শতাংশ অবকাঠামো খাতে ব্যয় করে। এটাকে জিডিপির ৫ শতাংশে উন্নীতকরণ ও আগামী ২০৩০ সালের মধ্যে শুধু অবকাঠামো খাতে ৩২০ বিলিয়ন মার্কিন ডলার বিনিয়োগ নিশ্চিত করার প্রস্তাব করেন।

তিনি বিদ্যুৎ উৎপাদনে তুলনামূলক সাশ্রয়ী কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্র স্থাপনে আরো বেশি গুরুত্ব আরোপের আহ্বান জানান।

ঢাকা চেম্বারের সভাপতি এসডিজি অর্জনে অর্থায়ন ও বাস্তবায়নে বেসরকারি খাতের অবদান বৃদ্ধির জন্য বিনিয়োগবান্ধব পরিবেশ নিশ্চিত, ব্যবসা-বাণিজ্যের সম্প্রসারণ ও কর প্রদান করে এসডিজি বাস্তবায়নে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ ভূমিকা রাখার সুযোগ সৃষ্টির প্রস্তাব করেন।  

ডিসিসিআইর ঊর্ধ্বতন সহ-সভাপতি কামরুল ইসলাম, সহ-সভাপতি রিয়াদ হোসেন, পরিচালক আন্দালিব হাসান, খন্দকার রাশেদুল আহসান, কে এম এন মঞ্জুরুল হক, মো. আলাউদ্দিন মালিক, ইঞ্জিনিয়ার মো. আল আমিন, মোহাম্মদ বাশীর উদ্দিন, এস এম জিল্লুর রহমান এবং মহাসচিব এ এইচ এম রেজাউল কবির এ সময় উপস্থিত ছিলেন।



রাইজিংবিডি/ঢাকা/২২ জানুয়ারি ২০১৭/হাসিবুল/রফিক

রাইজিংবিডি.কম

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়