ঢাকা     মঙ্গলবার   ২৩ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ১০ ১৪৩১

রাজস্ব হালখাতায় বৈশাখী আমেজ

এম এ রহমান মাসুম || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ০৮:৫৬, ১৫ এপ্রিল ২০১৮   আপডেট: ০৫:২২, ৩১ আগস্ট ২০২০
রাজস্ব হালখাতায় বৈশাখী আমেজ

অর্থনৈতিক প্রতিবেদক : বাঙালির আবহমান ঐতিহ্য বৈশাখের উৎসবে অংশ হিসেবে রাজস্ব আদায়ের লক্ষ্যে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের বিভিন্ন কর, কাস্টমস ও ভ্যাট অফিসে চলছে রাজস্ব হালখাতা।

হালখাতায় দিনের শুরু থেকে করদাতা ও কর্মকর্তা-কর্মচারীদের উপস্থিতিতে কর অফিসগুলোতে বিরাজ করছে  উৎসবের আমেজ।

রোববার এনবিআরের আওতাধীন বৃহৎ করদাতা ইউনিট, বৃহৎ করদাতা ইউনিট (ভ্যাট) এবং কর অঞ্চল-৪ ও ৫ ঘুরে উৎসবের এমন আমেজ দেখা গেছে।

রাজস্ব সংস্কৃতির আদলে প্রতিটি রাজস্ব অফিসের গেট ও অফিস সজ্জিত করা হয়েছে। গ্রামবাংলার ঐহিত্য মাটির হাঁড়ি, পাতিল, কলা গাছ, কুলো, হাতপাখা, মুখোশ, হাতির গেট আর রঙ-বেরঙের কার্টুনে সাজানো হয় এনবিআরের প্রতিটি কর অফিস। করদাতাদের জন্য খোলা হয় হালখাতার ঐহিত্যবাহী নতুন রেজিস্টার খাতা। মাটির সানকিতে দেওয়া হয় মিষ্টি, বাতাসা, নারিকেলের নাড়ু, সন্দেশ, খৈ, কদমা, মুরালি, নিমকি, মুড়ির মোয়া, চিড়ার মোয়া, তিলের খাজা, সুন্দরী পাকন পিঠা, শাহী পাকন পিঠা, নকশি পিঠা, ঝিনুক পিঠা, স্পঞ্জ রসগোল্লা, দই, ডাবের পানি, তরমুজ, পেয়ারা, বরই ইত্যাদি।

সকাল ১০টা কর অঞ্চল-৪ আনুষ্ঠানিকভাবে রাজস্ব হালখাতার উদ্বোধন করেন অভ্যন্তরীণ সম্পদ বিভাগের সিনিয়র সচিব ও জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের চেয়ারম্যান মো. মোশারফ হোসেন ভূঁইয়া। এরপর তিনি কর অঞ্চল ৫ ও ৮ এর অফিস ঘুরে রাজস্ব হালখাতার বিভিন্ন অনুষ্ঠানে অংশ নেন।

অনুষ্ঠানে তিনি করদাতা ও কর্মচারীদের উদ্দেশ্য বলেন, আমরা জোড় করে কর আদায় করতে চাই না। ব্যবসায়ীদের বোঝাতে হবে যদি উন্নয়ন তথা দেশের অংশীজন হতে চান তাহলে কর দিতে হবে। আমরা করদাতাদের সব সুবিধা দিতে চাই। ট্যাক্স কার্ডধারীদের সিআইপি সুবিধা দেওয়া হবে।


তিনি বলেন, আবহমান বাংলার অন্যতম উৎসব হচ্ছে হালখাতা। রাজস্ব হালখাতা আয়োজনের মাধ্যমে এ উৎসবের অংশীদার হতে পেরেছি। করদাতাদের কাছ থেকেও ভালো সাড়া পাচ্ছি।

বর্তমানে বকেয়া করের পরিমাণ ৫০ হাজার কোটি টাকার বেশি বলেও জানান এনবিআর চেয়ারম্যান।

উৎসবমুখর পরিবেশে এনবিআরের অধীন সব আয়কর ও ভ্যাট অফিসে উৎসবের আমেজে করদাতাগণের কাছ থেকে বকেয়া রাজস্বের চালান ও পে-অর্ডার গ্রহণ করতে দেখা গেছে। পাশাপাশি বাংলাদেশ পুস্তক প্রকাশনী সমিতির সৌজন্যে সুধীজনকে বিখ্যাত লেখকদের বই উপহার প্রদান করা হচ্ছে।

হালখাতা শুরু পর থেকে বকেয়া কর আদায়ের ক্ষেত্রে ব্যাপক সাড়া পাওয়া যাচ্ছে। বকেয়া কর আদায়ের মধ্যে  বিভিন্ন কর অঞ্চল থেকে পাওয়া তথ্যানুসারে বৃহৎ করদাতা ইউনিট থেকে ২০ কোটি টাকা, বৃহৎ করদাতা ইউনিট থেকে (ভ্যাট) সাড়ে তিন কোটি টাকা ও কর অঞ্চল ৫ থেকে ১০ কোটি ৬ লাখ টাকা রাজস্ব আদায় হয়েছে। দিন শেষে  আদায় সব কর অফিস মিলিয়ে আরো অনেক বাড়বে বলে জানা যায়।

বাঙ্গালির চিরায়ত ঐতিহ্য ও সমৃদ্ধশালী সংস্কৃতি অনুযায়ী বৈশাখী উৎসব রাজস্ব হালখাতায় এবারের প্রতিপাদ্য হলো- ‘জ্ঞানভিত্তিক আলোকিত সমাজ বিনির্মাণে সর্বস্তরে রাজস্ব-বান্ধব সংস্কৃতি প্রচলন’।

২০১৭ সালে প্রথম বছরের মতো বাংলা নববর্ষ উপলক্ষে ‘রাজস্ব হালখাতা’  আয়োজন করে এনবিআর। তৎকালীন এনবিআর চেয়ারম্যান মো. নজিবুর রহমানের নেতৃত্বে প্রথমবারের আয়োজিত হালখাতায় আয়কর, ভ্যাট ও কাস্টমসে সারা দেশে মোট ৫৬৬ কোটি টাকা বকেয়া রাজস্ব আদায় করে সংস্থাটি। এর মধ্যে আয়কর থেকে ৩০৬ কোটি, কাস্টমস থেকে ২০৭ কোটি এবং মূসক বা ভ্যাট থেকে ৫৩ কোটি টাকা আদায় হয়।



রাইজিংবিডি/ঢাকা/১৫ এপ্রিল ২০১৮/এম এ রহমান/সাইফ

রাইজিংবিডি.কম

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়