ঢাকা     মঙ্গলবার   ১৬ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ৩ ১৪৩১

বাজেট ২০১৮-২০১৯ : বরাদ্দের নতুন খাত রোহিঙ্গা পুনর্বাসন

কেএমএ হাসনাত || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১৪:০০, ১৯ মে ২০১৮   আপডেট: ০৫:২২, ৩১ আগস্ট ২০২০
বাজেট ২০১৮-২০১৯ : বরাদ্দের নতুন খাত রোহিঙ্গা পুনর্বাসন

কেএমএ হাসনাত : আগামী ২০১৮-২০১৯ অর্থবছরের বাজেটে অর্থ বরাদ্দের নতুন খাত হিসেবে আত্মপ্রকাশ করতে যাচ্ছে রোহিঙ্গা পুনর্বাসন। এ খাতে সরকার ২ হাজার কোটি টাকা বরাদ্দ রাখার পরিকল্পনা নিয়েছে। রোহিঙ্গাদের পুনর্বাসনে সরকারি অর্থ বরাদ্দের সঙ্গে বিশ্বব্যাংকের কাছ থেকে পাওয়া যাবে ৫০০ কোটি টাকা, যা সম্পূর্ণ অনুদান হিসেবে পাওয়া যাবে বলে সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে।

সম্প্রতি অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিতের সভাপতিত্বে এক বৈঠকে বাজেট প্রণয়নের অগ্রগতি পর্যালোচনার প্রাক্কালে বিষয়টি নিয়ে আলোচনা হয়েছে। বৈঠকে অন্যান্য বিষয়ের সঙ্গে আগামী অর্থবছরের মোট দেশজ উৎপাদন (জিডিপি) প্রবৃদ্ধির হারও প্রাক্কলন করা হয়েছে বলে সূত্র জানিয়েছে।

আগামী অর্থবছরে বাজেটে রোহিঙ্গাদের জন্য যে ২ হাজার কোটি টাকা বরাদ্দ রাখা হচ্ছে, সেটি দিয়ে মিয়ানমার থেকে আসা নির্যাতিত রোহিঙ্গাদের নোয়াখালীর হাতিয়া উপজেলার ভাসানচরে পুনর্বাসন করা হবে। এজন্য সরকারের পক্ষ থেকে ইতোমধ্যে ২ হাজার ৩১২ কোটি টাকার আশ্রয়ণ-৩ প্রকল্প নেওয়া হয়েছে। নৌবাহিনীকে এ প্রকল্প বাস্তবায়নের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। প্রকল্পটির মেয়াদকাল ধরা হয়েছে ২০১৭ সালের জুলাই থেকে ২০১৯ সালের নভেম্বর মাস পর্যন্ত।

গত নভেম্বর মাসে জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) সভায় এই প্রকল্পটি অনুমোদন দেওয়া হয়। প্রকল্প প্রস্তাবে বলা হয়েছে, ১ লাখ রোহিঙ্গাকে ভাসানচরে পুনর্বাসন করা হবে। ১ লাখ ৩ হাজার ২০০ মানুষের বসবাসের জন্য ১২০টি গুচ্ছগ্রাম নির্মাণ করা হবে। এছাড়া ভাসানচরের অভ্যন্তরে সড়ক, পানি নিষ্কাশন ব্যবস্থা, নলকূপ বসানোসহ যাবতীয় অবকাঠামো তৈরি করা হবে। ইতোমধ্যে সরকারের পক্ষ থেকে এ প্রকল্পে ১ হাজার ৮০০ কোটি টাকা বরাদ্দ রাখার কথা বলা হয়েছে। চলতি অর্থবছরের সংশোধিত বাজেটে এই অর্থ বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে।

এ বিষয়ে অর্থ বিভাগের এক কর্মকর্তা জানিয়েছেন, আগামী অর্থবছরের জিডিপি প্রবৃদ্ধির প্রাক্কলন, রোহিঙ্গাদের জন্য বরাদ্দ, বিশ্বব্যাংকের পক্ষ থেকে বাজেট সহায়তা নিয়ে বৈঠকে আলোচনা হয়েছে। একই সঙ্গে আগামী অর্থবছরে বাজেট বরাদ্দ, চলতি অর্থবছরে সংশোধিত বাজেট, আমদানি ও রপ্তানি, রেমিট্যান্স প্রবাহ নিয়ে আলোচনা হয়েছে।

জানা গেছে, আগামী অর্থবছরের জন্য রাজস্ব আদায়ের লক্ষ্য নির্ধারণ করা হচ্ছে ৩ লাখ ৪০ হাজার কোটি টাকা। এর মধ্যে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) কর্তৃক আদায়ের লক্ষ্য থাকবে ২ লাখ ৯৪ হাজার কোটি টাকা, যা চলতি অর্থবছরের সংশোধিত বাজেটে এনবিআর রাজস্ব আদায়ের টার্গেট থেকে ৩২ ভাগ বেশি। চলতি অর্থবছরের সংশোধিত বাজেটে রাজস্ব আদায়ের লক্ষ্য ধরা হয়েছে ২ লাখ ২৫ হাজার কোটি টাকা।

এদিকে এনবিআর থেকে বলা হচ্ছে, আগামী অর্থবছরে রাজস্ব আদায়ের যে লক্ষ্য ধরা হচ্ছে, তা অর্জন করা কখনোই সম্ভব হবে না। কারণ, চলতি বছরের ডিসেম্বরে জাতীয় নির্বাচন হবে। এই নির্বাচনী বছরে আগামী বাজেটে নতুন করে কোনো কর বা করের হারও বাড়ানো হবে না। তা হলে কীভাবে রাজস্ব আদায় বাড়বে?

বিশ্বব্যাংকের পক্ষ থেকে ইতোমধ্যে সরকারকে বলা হয়েছে, সংস্থাটি ৭৫ কোটি ডলার বাজেট সহায়তা দেবে। এরই অংশ হিসেবে আগামী অর্থবছরে ছাড় করা হবে ২৫ কোটি ডলার। প্রায় এক যুগ পর বিশ্বব্যাংকের পক্ষ থেকে আবারও বাজেট সহায়তা দেওয়া হচ্ছে। পদ্মা সেতুর টেন্ডারে দুর্নীতির অভিযোগ আনার পর থেকে বিশ্বব্যাংকের পক্ষ থেকে এই সহায়তা আর দেওয়া হয়নি বলে জানা গেছে।




রাইজিংবিডি/ঢাকা/১৯ মে ২০১৮/হাসনাত/রফিক

রাইজিংবিডি.কম

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়