ঢাকা     শুক্রবার   ১৯ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ৬ ১৪৩১

‘বালি সম্মেলনে জলবায়ু, মানবসম্পদ উন্নয়ন গুরুত্ব পাবে’

কেএমএ হাসনাত || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ০৬:১০, ১১ অক্টোবর ২০১৮   আপডেট: ০৫:২২, ৩১ আগস্ট ২০২০
‘বালি সম্মেলনে জলবায়ু, মানবসম্পদ উন্নয়ন গুরুত্ব পাবে’

ছবি: কিসমত খন্দকার

কেএমএ হাসনাত, বালি, ইন্দোনেশিয়া থেকে : জলবায়ু পরিবর্তন এবং মানবসম্পদ উন্নয়ন বিশ্বব্যাংক ও আইএমএফ বালি সম্মেলনে গুরুত্ব পাবে বলে জানিয়েছেন বিশ্বব্যাংকের প্রেসিডেন্ট জিম ইয়ং কিম। বিষয় দুটি দিন দিন জটিল হচ্ছে বলেও তিনি তার বক্তব্যে জানান। আর এজন্য এ দুই খাতে বিনিয়োগ বাড়ানোর ওপর গুরুত্বারোপ করেছেন তিনি।

বৃহস্পতিবার সকালে ইন্দোনেশিয়ার বালি ইন্টারন্যাশনাল কনভেনশন সেন্টারে (বিআইসিসি) বিশ্বব্যাংক ও আইএমএ এর বার্ষিক সম্মেলনের উদ্বোধনী সংবাদ সম্মেলনে এ গুরুত্বারোপ করেন বিশ্বব্যাংকের প্রেসিডেন্ট।

বিশ্বের ১৮৯টি দেশের অর্থমন্ত্রী, কেন্দ্রীয় ব্যাংকের গভর্নর এবং সরকারি বেসরকারি খাতের প্রতিনিধিদের অংশগ্রহণে ১২ অক্টোবর শুরু হয়ে সম্মেলন শেষ হবে ১৪ অক্টোবর। এবারের সম্মেলনে বাংলাদেশের অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিতের নেতৃত্বে ২২ সদস্যের একটি প্রতিনিধিদল অংশ নিচ্ছেন। সদস্য দেশগুলো থেকে এবারের সম্মেলনে প্রায় এক হাজার সংবাদ মাধ্যমের প্রতিনিধিসহ ১৫ হাজার প্রতিনিধি অংশ নিচ্ছেন বলে সম্মেলনের প্রেস বুথ থেকে জানা গেছে।

সংবাদ সম্মেলনে বিশ্বব্যাংক প্রেসিডেন্ট বলেন, উন্নত বা উন্নয়নশীল দেশ হোক অথবা ধনী বা গরীব দেশ হোক, জলবায়ু পরিবর্তন এবং মানবসম্পদ অত্যন্ত নাজুক অবস্থা বিরাজ করছে। আর এটি দিন দিন খারাপের দিকে যাচ্ছে। যা প্রতিটি দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নে প্রতিবন্ধকতা সৃস্টি করে। এ অবস্থা থেকে উত্তরনের জন্য প্রত্যেকটি দেশকে দীর্ঘমেয়াদী পরিকল্পনা নিতে হবে।



জিম ইয়ং কিম বলেন, এবারের সভায় বিশ্ব অর্থনীতির চলমান গুরুত্বপূর্ণ ইস্যুগুলোর পাশাপাশি দীর্ঘমেয়াদী দুটি জটিল ইস্যু নিয়ে আলোচনা করা হবে, যা উন্নত কিংবা উন্নয়নশীল, ধনী কিংবা গরীব সকল দেশের জন্য গুরুত্বপূর্ণ। এর প্রথমটি হচ্ছে জলবায়ু পরিবর্তন এবং দ্বিতীয়তটি হচ্ছে মানবসম্পদ উন্নয়ন।

তিনি বলেন, জলবায়ু পরিবর্তনের বিষয়টি সার্বিকভাবে বিশ্বের উন্নয়ন ও দারিদ্র্য বিমোচনের জন্য বিরাট হুমকি। বিশ্বের সবচেয়ে দরিদ্র ও ঝুঁকিপূর্ণ জনগোষ্ঠীর ওপর এর প্রভাব ইতিমধ্যেই পড়তে শুরু করেছে। অন্যদিকে মানবসম্পদ উন্নয়নে  (জ্ঞান, দক্ষতা ও স্বাস্থ্য) বিশ্বের সব দেশকে দূরদৃষ্টি সম্পন্ন পদক্ষেপ নিতে হবে, যাতে প্রতিটি দেশের জনগণ স্বাভাবিক জীবনযাত্রা অতিক্রম করতে পারে।

আইপিসিসির প্রতিবেদন উল্লেখ করে বিশ্বব্যাংক প্রেসিডেন্ট বলেন, বর্তমান বিশ্বে উঞ্চতা ১ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস হারে বাড়ছে। আর এটা দিন দিন আরো বাড়বে। আর এটা বিশ্বের প্রতিটি জীববৈচিত্র্যের জন্য হুমকি হয়ে দাঁড়াচ্ছে। এ বিষয়ে আমাদের যতটা বেশি চিন্তা করা উচিত তার চেয়ে অনেক কম ভাবছি, আর যতটা গুরুত্ব দেওয়া প্রয়োজন তার চেয়ে কম গুরুত্ব দিচ্ছি।

বিশ্বব্যাংকের প্রেসিডেন্ট বলেন, আমরা জানি, ধনী কিংবা গরীব দেশের রাজনীতিকরা স্বাস্থ্য ও শিক্ষা খাতে তহবিল বাড়াতে সর্বোচ্চ চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। এ অবস্থায় স্বল্পোন্নত ও উন্নয়নশীল দেশগুলোর জনগণের ওইসব খাতে বিনিয়োগে সহায়তার জন্য বিশ্বব্যাংক একটি নতুন উদ্যোগ নিয়েছে-যার প্রথম লক্ষ্য হচ্ছে মানবসম্পদ সূচকের উন্নয়ন। মানবসম্পদ তৈরিতে সর্বাধুনিক বিনিয়োগ নীতিমালা গ্রহণ দেশগুলোর জন্য দীর্ঘমেয়াদী ও অন্তর্ভুক্তিমূলক অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি অর্জনে সহায়ক হতে পারে।



তিনি বলেন, বর্তমানে বিশ্বের প্রায় এক-চতুর্থাংশ যুবক তাদের পূর্ণ সম্ভাবনা কাজে লাগাতে পারছেন না। ক্রমাগত জনসংখ্যা বৃদ্ধি ও পীড়িত অবস্থা একজন শিশুর বিকাশ, স্কুল শিক্ষা ও ভবিষ্যৎ  আয়ের ওপর স্থায়ী প্রভাব ফেলছে। যদি কোনো দেশ তার বর্তমান শিশুদের ভবিষ্যৎ কর্মচাহিদা পূরণে ব্যর্থ হয়, তাহলে সে দেশ অর্থনৈতিক প্রতিযোগিতার ক্ষেত্রে অপ্রস্তুত হয়ে পড়বে।

বিশ্বব্যাংকের প্রেসিডেন্ট জিম ইয়ং কিম বলেন, আমরা যাতে আমাদের ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য একটি সুন্দর পৃথিবী তৈরি করতে পারি সেজন্য সম্মিলিত প্রচেষ্টা চালিয়ে যেতে হবে। বক্তব্য শেষে বিশ্বব্যাংক প্রধান উপস্থিত সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের জবাব দেন।

বিশ্বব্যাংকের প্রেসিডেন্টের সংবাদ সম্মেলন চলাকালে সম্মেলন কক্ষের বাইরে বিভিন্ন বেসরকারি স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন বিশ্বব্যাংকের বিভিন্ন কর্মকাণ্ডের প্রতিবাদ করে প্ল্যাকার্ড প্রদর্শন করে এবং সংগঠনগুলোর নেতারা বক্তব্য রাখেন।

পড়ুন




রাইজিংবিডি/বালি/ইন্দোনেশিয়া/১১ অক্টোবর ২০১৮/হাসনাত/সাইফ

রাইজিংবিডি.কম

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়