রূপপুর বিদ্যুৎ কেন্দ্রের ৩৫৪ কোটি ৮৩ লাখ টাকা ছাড়
কেএমএ হাসনাত : ‘রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র’ নির্মাণের দ্বিতীয় কিস্তির অর্থ ছাড় করা হয়েছে। বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের অনুরোধক্রমে সম্প্রতি অর্থ মন্ত্রণালয় থেকে সম্প্রতি দ্বিতীয় কিস্তির ৩৫৪ কোটি ৮৩ লাখ টাকা ছাড় করা হয়েছে।
সূত্র জানায়, এর আগে প্রকল্পটির প্রথম কিস্তির ৬৪৭ কোটি ৩১ লাখ টাকা ছাড় করা হয়। ফলে প্রকল্পটির জন্য দুই দফায় মোট এক হাজার ২ কোটি ১৪ লাখ টাকা ছাড় করা হলো। প্রকল্পের মোট ব্যয়ের ৯০ শতাংশই ঋণ হিসেবে দিচ্ছে রাশিয়ান ফেডারেশন।
২০১১ সালের ফেব্রুয়ারিতে রাশিয়ার রোসএটোম কোম্পানির সঙ্গে পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্মাণের চুক্তি সই করে বাংলাদেশ। ২০১৫ সালের ডিসেম্বরে ১২ দশমিক ৬৫ বিলিয়ন ডলার বা এক লাখ সাড়ে ১৩ হাজার কোটি টাকার প্রকল্প বাস্তবায়নের প্রাথমিক চুক্তি হয়।
পাবনা জেলার রূপপুর এলাকায় এক হাজার ৬২ একর জমির ওপর এই প্রকল্পের কাজ চলছে। গত অক্টোবর মাস পর্ষন্ত প্রকল্প বাস্তবায়নের হার ৯ দশমিক শূণ্য ৩ শতাংশ।
সূত্র জানায়, রাশিয়ান ফেডারেশনের ঠিকাদার প্রতিষ্ঠান এটস্ট্রয় এক্সপোর্টকে চতুর্থ কিস্তির (অক্টোবর-ডিসেম্বর) ঋণ দিতে প্রয়োজনীয় ইনভয়েস এবং ব্যাংক গ্যারান্টি পাঠানো হয়েছে। চতুর্থ কিস্তিতে ঋণ পাওয়া যাবে ৪ কোটি ১৭ লাখ ৪৫ হাজার ডলার।
এ বিষয়ে প্রকল্পের একজন কর্মকর্তা বলেন, ‘প্রকল্প বাস্তবায়নে অর্থের কোনো সমস্যা নেই। অর্থ ঠিকভাবেই ছাড় ও ব্যয় হচ্ছে। ২০১৬ সালের নভেম্বর মাসে প্রথম রিঅ্যাক্টরের (উৎপাদন কেন্দ্র) দেয়াল তৈরি শুরু হয়। আর ২০১৭ সালের জুন মাসে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দ্বিতীয় রিঅ্যাক্টর নির্মাণের কাজ উদ্বোধন করেন। আশা করছি নির্ধারিত সময়ের মধ্যে প্রকল্পের কাজ শেষ হবে।’
তিনি বলেন, ‘মানব সম্পদ উন্নয়ন থেকে শুরু করে রিঅ্যাক্টরের নিরাপত্তা নিশ্চিতকরণ, পরিবেশের ভারসাম্য সংরক্ষণ এবং আনুষঙ্গিক বিষয়ের ওপর সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে প্রকল্পের কাজ চলছে।
নির্মিতব্য ভিভিইআর-১২০০ টাইপের দুই রিঅ্যাক্টরে রয়েছে পাঁচ স্তরের নিরাপত্তা, যা মনুষ্য সৃষ্ট বা প্রাকৃতিক বিপর্যয় মোকাবিলায় সক্ষম। জাপানের ফুকুশিমা পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রের দুর্ঘটনার কথা মাথায় রেখে কেন্দ্রের নকশা করা হয়েছে। দুর্ঘটনা মোকাবিলায় নকশায় বিভিন্ন অ্যাক্টিভ ও প্যাসিভ শীতলীকরণ ও চাপ নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থা রাখা হয়েছে। যে কোনো দুর্ঘটনায় পারমাণবিক চুল্লির মূল অংশের (কোর) বিগলন প্রতিরোধ ব্যবস্থা আন্তর্জাতিক মানদ-ের চেয়েও কয়েকগুণ বাড়ানো হয়েছে। শেষ পর্যায়ে নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে কোর ক্যাচার রাখা হয়েছে, যা মারাত্মক দুর্ঘটনায় তেজস্ক্রিয় ছড়ানো প্রতিরোধ করবে।
সূত্র জানায়, বর্তমানে অতিরিক্ত রিঅ্যাক্টর বিল্ডিংয়ের দেয়াল নির্মাণ করা হচ্ছে, চুল্লী ভবন ও ভিত্তি স্ল্যাব শক্তিশালী করা হয়েছে, বাষ্প স্থিতিশীলকরণ বায়ু সংক্রান্ত কুলিং টাওয়ার ও অন্যান্য কাজ ইতোমধ্যে শুরু হয়েছে। প্রকল্পের প্রথম ইউনিট ২০২৩ সালে এবং ২০২৪ সালে দ্বিতীয় ইউনিট কমিশন করা হবে। দুটি ইউনিট থেকে মোট ২ হাজার ৪০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ পাওয়া যাবে।
রাইজিংবিডি/ঢাকা/৪ নভেম্বর ২০১৮/হাসনাত/শাহনেওয়াজ
রাইজিংবিডি.কম
আরো পড়ুন