ঢাকা     বৃহস্পতিবার   ২৫ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ১২ ১৪৩১

‘৪ কোটি মানুষকে কর দেওয়া উচিত’

এম এ রহমান মাসুম || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ০৮:৪৭, ১৩ নভেম্বর ২০১৮   আপডেট: ০৫:২২, ৩১ আগস্ট ২০২০
‘৪ কোটি মানুষকে কর দেওয়া উচিত’

অর্থনৈতিক প্রতিবেদক : প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ হিসেবে বর্তমানে করদাতার সংখ্যা ১ কোটি, তবে উন্নয়নের লক্ষ্যে ১৬ কোটি মানুষের দেশে অন্তত ৪ কোটি মানুষের কর দেওয়া উচিত বলে মনে করেন অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত।

মঙ্গলবার রাজধানীর অফিসার্স ক্লাবে আয়কর মেলা-২০১৮ এর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ মন্তব্য করেন।

অর্থমন্ত্রী বলেন, 'আমাদের উন্নয়ন যেভাবে ধাবিত হচ্ছে ১ কোটি করাদাতা নিয়ে আমরা এখন সন্তুষ্ট নই। আমরা চাই, এই এক কোটির সঙ্গে আরো কয়েক কোটি এখানে যুক্ত হোক। এটি অন্তত ৪ কোটি হওয়া উচিত।’

তিনি বলেন, 'ধরেন ৪ কোটি মানুষ কর দেয়। তাহলে আমাদের যে সুবিধাটা হবে সরকার যে বিভিন্ন ধরণের সেবা আপনাদের কাছে উপস্থাপন করে তা নানাভাবে ব্যাপ্তি হবে।'

মুহিত বলেন, 'আগে আমরা কর আদায় করতাম ৭ লাখ। তখন ১৫ লাখ করদাতার বেশি ছিল না। এখন করদাতার সংখ্যা ৩০ লাখের চেয়ে বেশি হয়ে গেছে। বিভিন্নভাবে এখন ১ কোটি মানুষ কর দেয়। অনেক ধরনের কর আছে, সেগুলোকে ধরলে ১ কোটি মানুষ আজকে কর দেয়। ১৬ কোটি মানুষের মধ্যে ১ কোটি করাদাতা।'

'উন্নয়ন ও উত্তরণ, আয়করের অর্জন’ স্লোগানে সারা দেশে উৎসব মুখর পরিবেশে শুরু হওয়া এবারের মেলার প্রতিপাদ্য ‘আয়কর প্রবৃদ্ধির মাধ্যমে সামাজিক ন্যায় বিচার ও ধারাবাহিক উন্নয়ন নিশ্চিতকরণ’।

অনুষ্ঠানে অর্থমন্ত্রী আরো বলেন, 'এক সময় ছিল যখন কর দিতে আমাদের খুব অনীহা ছিল। সবাই মনে করতো আজ কর দিলাম, সারা জীবন একটি ফাঁদে পড়ে গেলাম। তবে এখন আর সে অবস্থা নেই। এখন অসংখ্য যুবক এসে লাইন ধরে কর দেয়। এটা আমাদের জাতির জন্য উল্লেখযোগ্য ঘটনা বলতে হবে। সারা দেশে একটা একক অর্থনীতির সৃষ্টি হয়েছে। একক অর্থনীতির সৃষ্টি হওয়ার ফলে অর্থনীতির গতি এখন অনেক বৃদ্ধি পেয়েছে এবং সেই অর্থনৈতিক ব্যবস্থায় মানুষের মধ্যে যে বৈষম্য তা ব্যাপকভাবে কমে যাচ্ছে। হ্যাঁ বৈষম্য এখনও আছে। কিন্তু সেটা ব্যাপকভাবে কমে যাচ্ছে।'

তিনি বলেন, 'আমাদের যখন জন্ম হয় তখন আমাদের দেশে প্রায় ৭০ শতাংশ লোক গরিব ছিল। এখন আমরা বলি গরিবের সংখ্যা ২২ শতাংশ। এই ৭০ থেকে নামিয়ে আমরা ২২ শতাংশে নিয়ে এসেছি। অর্থাৎ সকলের জন্য সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে। কিন্তু ২২ শতাংশ কম নয়। আমাদের দেশে ২২ শতাংশ মানে ৩ কোটি মানুষ। এই ৩ কোটি মানুষকে এখন আমাদের উপরে ওঠাতে হবে। সেটাই হলো আমাদের সরকারের লক্ষ্যমাত্রা। সেটাই আমাদের জাতীয় লক্ষ্যমাত্রা।'

লক্ষ্যমাত্রা পূরণে প্রধানমন্ত্রী কাজ করে যাচ্ছেন উল্লেখ করে দেশের ইতিহাসে সবচেয়ে দীর্ঘসময়ের অর্থমন্ত্রী বলেন, 'আর এই লক্ষ্যমাত্রা পূরণে আমাদের সরকার কাজ করে যাচ্ছে। আমাদের প্রধানমন্ত্রী নেতৃত্ব দিচ্ছে। এই নেতৃত্বটা একান্তাভাবে জনকল্যাণে নিবেদিত। জনকল্যাণে নিবেদিত নেতৃত্ব আছে বলেই আমরা দ্রুত গতিতে এগিয়ে যেতে পারছি। এই যে দ্রুত গতিতে আমাদের বিকাশ হচ্ছে, সেই বিকাশটা যাতে আরো সুন্দর হতে পারে, আরো উজ্জ্বল হতে পারে, সেটাই আমার আশা।'

আয়কর মেলা উৎসব পরিণত হয়েছে উল্লেখ করে মুহিত বলেন,'যারা এখানে কর দিতে এসেছে তাদের বিশেষভাবে অভিনন্দন। আপনারা মেলাটাকে স্বার্থক করে তুলেছেন। মেলাটা সত্যিকার অর্থেই মেলাতে পরিণত হয়েছে।’

প্রথম দিনেই সকাল থেকে উৎসব মুখর পরিবেশ মেলা প্রাঙ্গণে। মূল ফটক থেকে ভেতরে প্রবেশ করতে সকাল থেকেই দীর্ঘ লাইন দেখা গেছে। হেল্প ডেস্ক ও তথ্য কেন্দ্রে করদাতাদের উপচে পড়া ভিড়। এনবিআর চেয়ারম্যান মোশাররফ হোসেন ভূঁইয়ার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে আরো উপস্থিত ছিলেন অর্থ প্রতিমন্ত্রী এম এ মান্নান ও মেলার সমন্বয়ক এনবিআর সদস্য জিয়া উদ্দিন মাহমুদসহ এনবিআরের কর্মকর্তারা।

এনবিআর চেয়ারম্যান মোশাররফ হোসেন ভূঁইয়া বলেন, ‘মেলায় এসে সাধারণ জনগণ যেসব সুবিধা পায়, সহজে যেমন সেবা পায়, কর অফিসগুলোতেও একই রকম সকাল ১০টা থেকে বিকাল পাঁচটা পর্যন্ত মেলা চলবে। ১৩ নভেম্বর শুরু হওয়া এ মেলা শেষ হবে আগামী ১৯ নভেম্বর।’




রাইজিংবিডি/ঢাকা/১৩ নভেম্বর ২০১৮/এম এ রহমান/ইভা

রাইজিংবিডি.কম

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়