ঢাকা     বুধবার   ২৪ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ১১ ১৪৩১

দেশে তৈরি বিশ্বমানের লিফট বিক্রি করছে ওয়ালটন

আরজু হোসাইন || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১০:৪৬, ১২ জানুয়ারি ২০১৯   আপডেট: ০৫:২২, ৩১ আগস্ট ২০২০
দেশে তৈরি বিশ্বমানের লিফট বিক্রি করছে ওয়ালটন

নিজস্ব প্রতিবেদক : দেশেই বিশ্বমানের এলিভেটর বা লিফট তৈরি করছে ওয়ালটন। লিফট তৈরিতে ওয়ালটন অনুসরণ করছে ইউরোপীয় প্রযুক্তি ও মান। নিজস্ব চাহিদা মিটিয়ে বাণিজ্যিকভাবে এলিভেটর বিক্রি শুরু করেছে দেশের ইলেকট্রনিক্স বাজারের শীর্ষ এই প্রতিষ্ঠান।

ওয়ালটন এলিভেটর বা লিফটের একজন সম্মানিত ক্রেতা উত্তরার সৈয়দ মোস্তাফিজুর রহমান। তিনি জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের রসায়ন বিভাগের প্রাক্তন বিভাগীয় প্রধান। শুক্রবার (১১ জানুয়ারি ২০১৯) সৈয়দ মোস্তাফিজুর রহমানের কাছে আনুষ্ঠানিকভাবে ওয়ালটনের তৈরি চারজন প্যাসেঞ্জার ধারণক্ষমতার এলিভেটর হস্তান্তর করা হয়। তার কাছে ৩০০ কেজি বহনক্ষমতার এলিভেটরটি হস্তান্তর করেন ওয়ালটনের ব্র্যান্ড ডেভেলপমেন্ট বিভাগের প্রধান চিত্রনায়ক আমিন খান।

এ সময় অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন ওয়ালটনের অপারেটিভ ডিরেক্টর মোহাম্মদ ফিরোজ আলম, মো. শাহজাদা সেলিম ও সাখাওয়াত হোসেন, ডেপুটি অপারেটিভ ডিরেক্টর সোহেল রানা, ওয়ালটন এলিভেটরের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মিঠুন কুমার নন্দী, চিফ অপারেটিং অফিসার সবুজ আলম এবং ক্রেতা মোস্তাফিজুর রহমানের বড় ছেলে সৈয়দ সাঈদ মুনির।

সৈয়দ মোস্তাফিজুর রহমান উত্তরার ১০ নম্বর সেক্টরের ১২ নম্বর রোডের ৭৭ নম্বর বাড়ির মালিক। ছয়তলা এই বাড়িতে সস্ত্রীক বসবাস করেন তিনি। পাঁচ ছেলের মধ্যে ছোট ছেলেও পরিবারসহ ওই বাড়িতে থাকেন।

লিফট হস্তান্তরের সময় তিনি বলেন, ওয়ালটন দেশীয় কোম্পানি। ইলেকট্রনিক্স পণ্যের জগতে তারা শীর্ষে। আমাদের ঘরে ওয়ালটনের ফ্রিজ রয়েছে। দারুণ সার্ভিস পাচ্ছি। যখন জানতে পারি, ওয়ালটন লিফট তৈরি করছে, তখন নিজের বাড়ির জন্যও কিনে আনি ওয়ালটনের লিফট।

ওয়ালটন লিফট কেনার বিষয়ে তিনি বলেন, লিফটের ক্ষেত্রে আফটার সেলস বা টেকনিক্যাল সার্ভিস বেশি প্রয়োজন হয়। ওয়ালটন আমাদের দেশীয় কোম্পানি। তাই আমি সহজেই বিক্রয়োত্তর সেবা পাব বলে বিশ্বাস করি।

ওয়ালটনের ডেপুটি অপারেটিভ ডিরেক্টর সোহেল রানা জানান, দেশেই উচ্চমানের লিফট তৈরির জন্য ২০১৪ সালে উদ্যোগ নেয় ওয়ালটন। তখন থেকে লিফট তৈরির অবকাঠামো নির্মাণ, গবেষণা এবং মান উন্নয়ন বিভাগ, ইউরোপিয়ান প্রযুক্তির অত্যাধুনিক মেশিনারিজ স্থাপনে অন্তত ৫০ কোটি টাকা বিনিয়োগ করেছে ওয়ালটন। লিফট বা এলিভেটরের ডিজাইন, উৎপাদন এবং স্থাপনে নিযুক্ত আছে প্রযুক্তিতে দক্ষ এক ঝাঁক প্রকৌশলী, ডিজাইনার এবং টেকনিশায়ান।

তিনি আরো জানান, ওয়ালটনের কারখানা এবং করপোরেট অফিস ভবনসহ সব ধরনের স্থাপনায় ব্যবহৃত হচ্ছে নিজেদের তৈরি লিফট। নিজেদের চাহিদা মিটিয়ে এবার বাণিজ্যিকভাবে লিফট বিক্রি শুরু করেছে ওয়ালটন।

ওয়ালটন এলিভেটরের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মিঠুন কুমার নন্দী বলেন, বাংলাদেশে লিফটের বিশাল বাজার আছে। কিন্তু দেশীয় কোনো ম্যানুফেকচারার নেই। একমাত্র ওয়ালটনই ইউরোপিয়ান স্ট্যান্ডার্ড অনুযায়ী বাংলাদেশে লিফট বা এলিভেটর তৈরি করছে। এলিভেটর তৈরিতে দুই স্তরের নিরাপত্তা কোড- ইএন ৮১-২০ এবং ইএন ৮১-৫০ অনুসরণ করে ওয়ালটন।

চিফ অপারেটিং অফিসার সবুজ আলম জানান, প্যাসেঞ্জার এবং কার্গো দুই ধরনের লিফট তৈরি করছে ওয়ালটন। ৪ থেকে ৩৩ জন মানুষ বহনক্ষমতার ওয়ালটন প্যাসেঞ্জার লিফটের ধারণক্ষমতা ৩০০ থেকে ২৫০০ কেজি পর্যন্ত। আর কার্গো লিফটের ধারণক্ষমতা ৮০০ থেকে ৪৫০০ কেজি পর্যন্ত। ক্রেতার চাহিদা এবং রুচি অনুযায়ী ভিন্ন ভিন্ন ডিজাইন এবং ধারণক্ষমতার লিফট তৈরি করে দেয় ওয়ালটন।

ওয়ালটন এলিভেটরের বিপণন বিভাগ সূত্রে জানা যায়, একমাত্র বাংলাদেশে ওয়ালটন এলিভেটর ক্রয়ে কিস্তি সুবিধা রয়েছে। ওয়ালটন লিফট পাঁচ বছরের কিস্তিতে কেনা যায়। বিক্রয়োত্তর সেবায় ওয়ালটনের রয়েছে নিজস্ব সার্ভিস টিম। লিফট কেনার এক বছরের মধ্যে কোনো যন্ত্রাংশে সমস্যা হলে রিপ্লেস করে দেওয়া হয়। এছাড়াও আছে এক বছরের ফ্রি মেইনটেনেন্স সুবিধা। লিফটের যেকোনো সমস্যায় তাৎক্ষণিক সার্ভিস টিম পৌঁছে যাবে।

এদিকে, চলমান ঢাকা আন্তর্জাতিক বাণিজ্য মেলায় ওয়ালটন স্টলে প্রদর্শন করা হচ্ছে দেশে তৈরি অত্যাধুনিক ও নান্দনিক ডিজাইনের ওয়ালটন লিফট। গত ৯ জানুয়ারি বাণিজ্য মেলা উদ্বোধনের পর ওয়ালটন স্টল পরিদর্শন করেন রাষ্ট্রপতি মো. আব্দুল হামিদ এবং বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি। তারা এ সময় ওয়ালটন লিফট দেখে অভিভূত হন। ওয়ালটন দেশেই লিফট তৈরির মতো ভারী শিল্প কারখানা স্থাপন করেছে জেনে তারা আনন্দিত হন।



রাইজিংবিডি/ঢাকা/১২ জানুয়ারি ২০১৯/আরজু হোসাইন/রফিক

রাইজিংবিডি.কম

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়