ঢাকা     শুক্রবার   ১৯ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ৬ ১৪৩১

‘চতুর্থ শিল্পবিপ্লব গ্রহণে বাংলাদেশ প্রস্তুত’

মনিরুল হক ফিরোজ || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১২:০৪, ১২ জানুয়ারি ২০১৯   আপডেট: ০৫:২২, ৩১ আগস্ট ২০২০
‘চতুর্থ শিল্পবিপ্লব গ্রহণে বাংলাদেশ প্রস্তুত’

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি ডেস্ক : ডাক টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার বলেছেন, ‘ডিজিটাল বাংলাদেশ বাস্তবায়নে আমাদের গৃহীত নানা পদক্ষেপ যেমন একটি বিস্তৃত ও পূর্ণাঙ্গ ডিজিটাল সিকিউরিটি অ্যাক্ট, ইউনিয়ন ডিজিটাল সেন্টার প্রতিষ্ঠাসহ ডিজিটাল রূপান্তরে সরকারের অন্যান্য পদক্ষেপ বিশ্বের নানা দেশ অনুকরণ করছে।’

তিনি বলেন, ‘আমি আত্মবিশ্বাসের সঙ্গে বলতে পারি যে বাংলাদেশ চতুর্থ শিল্পবিপ্লব গ্রহণ করতে প্রস্তুত। আমরা এই বিপ্লবের জন্য আবশ্যক তথ্যপ্রযুক্তি শিক্ষা ও জনবল তৈরিতে প্রধান গুরুত্ব দিয়েছি। এছাড়া ডিজিটাল সিকিউরিটি নিশ্চিত করাও অগ্রাধিকার হিসেবে আছে।’

শনিবার (১২ জানুয়ারি) রাজধানীর মহাখালীতে ব্র্যাক সেন্টারে অডিটরিয়ামে ‘চতুর্থ শিল্পবিপ্লব- আমার কি প্রস্তুত’ শীর্ষক সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। সেমিনারটির আয়োজন করে শীর্ষস্থানীয় তথ্যপ্রযুক্তি পরামর্শক ও সফটওয়্যার সল্যুউশন কোম্পানি ইজেনারেশন।

অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ডিসিসিআই সভাপতি ওসামা তাসীর, এটুআই এর প্রকল্প পরিচালক মোস্তাফিজুর রহমান এবং এশিয়ান-ওশেনিয়ান কম্পিউটিং ইন্ডাস্ট্রি অর্গানাইজেশন (অ্যাসোসিও) এর সদ্যবিদায়ী সভাপতি আবদুল্লাহ এইচ কাফি।

ইজেনারেশনের পরিচালক (ডিজিটাল ট্রান্সফরমেশন) মুশফিক আহমেদ অনুষ্ঠানে ‘মেশিন এজ: চতুর্থ শিল্প বিপ্লব’ বিষয়ে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন। সকল আলোচকদের অংশগ্রহণে উন্মুক্ত প্যানেল আলোচনা অনুষ্ঠিত হয়। যেখানে উপস্থিত ছিলেন মিউচুয়্যাল ট্রাস্ট ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক আনিস এ খান, প্রধানমন্ত্রী কার্যালয়ের জনপ্রেক্ষিত বিশেষজ্ঞ নাইমুজ্জামান মুক্তা, বাংলাদেশ উইমেন ইন টেকনোলজির সভাপতি লাফিফা জামাল, বুয়েট আইইইই এর চেয়ারম্যান প্রফেসর সেলিয়া শাহনাজ সহ দেশের বিভিন্ন খাতের কর্তাব্যক্তিরা। সেমিনারে সভাপতিত্ব করেন ইজেনারেশন গ্রুপের চেয়ারম্যান শামীম আহসান।

ইজেনারেশন গ্রুপের চেয়ারম্যান শামীম আহসান বলেন, স্থানীয় তথ্যপ্রযুক্তি কোম্পানিগুলো সর্বশেষ প্রযুক্তি যেমন ব্লকচেইন, ইন্টারনেট অব থিংস (আইওটি), আর্টিফিসিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইত্যাদি সল্যুউশন তৈরি করার মাধ্যমে বাংলাদেশে ইতিমধ্যেই চতুর্থ শিল্পবিপ্লবের একেবারেই প্রাথমিক পর্যায় শুরু হয়েছে। আইডিয়া থেকে উৎপাদনের জন্য ‘নেক্সট প্রোডাকশন হাব’ হিসেবে বাংলাদেশকে প্রতিষ্ঠা করার জন্য আমাদেরকে চীনের সেনজেনের মতো বর্ধনশীল ইকোসিস্টেম তৈরি করতে হবে। বিশ্বে যেভাবে কাজের ধরন পাল্টে যাচ্ছে তার সঙ্গে তাল মিলিয়ে চলতে, আমাদেরকে স্থিতিশীল নেতৃত্ব, বদলিযোগ্য দক্ষতা, উদ্ভাবনী মনোভাব এবং মানুষের উপযোগীকরণের পিছনে বিনিয়োগ করা জরুরি হয়ে পড়েছে। চতুর্থ শিল্পবিপ্লব আমাদের বৈপ্লবিক উন্নয়নে এক নতুন মাত্রা আনছে এবং অর্থনৈতিক উন্নয়নের দিকে যেতে বাংলাদেশকে বৈজ্ঞানিক ও কারিগরি সুবিধাগুলো গ্রহণ ও ব্যবহারের সোনালী সুযোগ দিচ্ছে।

ডিসিসিআই সভাপতি ওসামা তাসীর বলেন, আমরা যদি সঠিকভাবে বাস্তবায়ন করতে পারি তাহলে চতুর্থ শিল্পবিপ্লব টেকসই উন্নয়নকে গতিশীল করবে। স্মার্ট ম্যানুফ্যাকচারিং, অ্যানালাইটিক্স এবং আইওটি গ্রহণের মাধ্যমে বাংলাদেশের শিল্পায়নে নতুন মাত্রা যোগ করবে।

এটুআই এর প্রকল্প পরিচালক মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, আমরা ‘স্কিল ফর এমপ্লয়মেন্ট’ প্রোগ্রামের মাধ্যমে চতুর্থ শিল্পবিপ্লবের প্রস্তুতি নিচ্ছি। বর্তমানে দুঃখজনক হলেও সত্য যে, ইন্ডাস্ট্রিতে কী ধরনের জ্ঞান ও দক্ষতা লাগবে সে বিষয়ে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে সমন্বয় নেই। আমাদেরকে ইন্ডাস্ট্রি ও অ্যাকাডেমিয়ার দক্ষতার ফারাক কমাতে কাজ করতে হবে।

অ্যাসোসিও’র সদ্যবিদায়ী সভাপতি আবদুল্লাহ এইচ কাফি বলেন, তথ্যপ্রযুক্তি বিপ্লবের জন্য প্রস্তুত হতে আমাদেরকে স্বল্পমেয়াদী ও দীর্ঘমেয়াদী পরিকল্পনা নিতে হবে। আগামী ৩-৪ বছরের মধ্যে আমাদেরকে সাইবার সিকিউরিটির জন্য নীতিমালা ও অবকাঠামোগত ফ্রেমওয়ার্ক নিশ্চিত করতে হবে। শিশুরা এখন যারা স্কুলে আছে, যখন তারা কর্মক্ষেত্রে প্রবেশ করবে তখন তাদেরকে নতুন ও যুগান্তকারী প্রযুক্তির সঙ্গে পরিচিত হতে হবে। তাই আমাদেরকে এখন থেকেই ভবিষৎ কর্মক্ষেত্রের চাহিদার মতো করে তাদের তৈরি করতে হবে।

ইজেনারেশনের ডিজিটাল ট্রান্সফরমেশন পরিচালক মুশফিক আহমেদ বলেন, ইন্ডাস্ট্রি ৪.০ বা পরবর্তী শিল্পবিপ্লব আলোচিত শব্দের চেয়েও অনেক কিছু। বিশ্বে কানেক্টেড ম্যানুফ্যাকচারিং অথবা স্মার্ট ফ্যাক্টরির আইডিয়া দ্রুতগতিতে বাড়ছে। বাংলাদেশেও চতুর্থ শিল্পবিপ্লব ভালোভাবে শুরু হয়েছে। ভোক্তা এবং ব্যবসাগুলো এআই, ইন্টারনেট অব থিংস (আইওটি), ব্লকচেইন, ডাটা অ্যানালাইটিক্স ইত্যাদি সম্পর্কিত প্রযুক্তি গ্রহণ করছে। উন্নত অর্থনীতির বাংলাদেশের দিকে অগ্রযাত্রায় চতুর্থ শিল্পবিপ্লব উন্নয়নের ধাপগুলোকে দ্রুতগতিতে টপকে যাবার সুযোগ এনে দিয়েছে।

ইজেনারেশনের সৌজন্যে এই গোলটেবিল সেশনে সরকারি বেসরকারি খাতের নীতিনির্ধারকদের মতামত সংগ্রহ করা হয় এবং আগামীতে বাংলাদেশের উন্নয়নের ধারাকে এগিয়ে নিতে নীতিমালা প্রণয়ন, গবেষণা, আবেদন এবং প্রযুক্তিগত উন্নয়নে কৌশল হিসেবে নিতে ভূমিকা রাখবে।



রাইজিংবিডি/ঢাকা/১২ জানুয়ারি ২০১৯/ফিরোজ

রাইজিংবিডি.কম

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়