ঢাকা     শনিবার   ২০ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ৭ ১৪৩১

বছরে কতবার স্বাস্থ্য পরীক্ষা করবেন?

এস এম গল্প ইকবাল || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১৩:১০, ২৪ জানুয়ারি ২০১৯   আপডেট: ০৫:২২, ৩১ আগস্ট ২০২০
বছরে কতবার স্বাস্থ্য পরীক্ষা করবেন?

প্রতীকী ছবি

এস এম গল্প ইকবাল : কিছু মানুষের (যেমন- শিশু ও বৃদ্ধ) প্রতিবছর ডাক্তারদের মাধ্যমে স্বাস্থ্য পরীক্ষা বা চেকআপ করা প্রয়োজন। কিন্তু সুস্থ প্রাপ্তবয়স্কদের ক্ষেত্রে? তাদের কি বার্ষিক চেকআপ আসলেই প্রয়োজন?

গবেষণা বলছে যে, বার্ষিক শারীরিক পরীক্ষা আপনাকে অবধারিভাবে রোগ বা হাসপাতালে ভর্তি হওয়া এড়িয়ে যেতে সাহায্য করবে না। কিন্তু  ডাক্তারের সঙ্গে পরিকল্পনা করা সবসময় গুরুত্বপূর্ণ।

সুস্থ প্রাপ্তবয়স্কদের মানুষদের বছরে কতবার স্বাস্থ্য চেকআপ করানো উচিৎ, বিশেষজ্ঞদের সঙ্গে কথা বলা তা জানিয়েছে বিখ্যাত পত্রিকা রিডার্স ডাইজেস্ট।

* প্রাথমিক ডাক্তার
অধিকাংশ সুস্থ প্রাপ্তবয়স্কের প্রতিবছর প্রাইমারি কেয়ার প্রোভাইডার বা প্রাথমিক ডাক্তারের কাছে যাওয়ার প্রয়োজন নেই। প্রাথমিক ডাক্তারের কাছে কতবার ভিজিট করতে হবে তা নির্ভর করছে কারো বয়স বা স্বাস্থ্য অবস্থার ওপর, বলেন ফ্যামিলি প্র্যাকটিস ফিজিশিয়ান লিসা ডজিট। তিনি যোগ করেন, ‘মেডিক্যাল সমস্যা নেই এমন সুস্থ তরুণ প্রাপ্তবয়স্কদের সাধারণত প্রতি ২-৩ বছরে একবার ডাক্তাদের কাছে যাওয়া উচিৎ।’ আপনার রক্তচাপ, ওজন এবং ক্রনিক রোগের প্রাথমিক সতর্কীকরণ লক্ষণ চেক করতে প্রাথমিক ডাক্তারের কাছে ভিজিট করা গুরুত্বপূর্ণ। ডা. ডজিট সুপারিশ করছেন যে, ডায়াবেটিস বা হৃদরোগের মতো ক্রনিক রোগ শনাক্ত ও নিয়ন্ত্রণ করতে মধ্যবয়স্ক বা এর বেশি বয়সের প্রাপ্তবয়স্কদের প্রতিবছর প্রাথমিক ডাক্তারকে দেখানো উচিৎ। প্রাথমিক ডাক্তার দ্বারা রুটিন স্ক্রিনিংয়ের মধ্যে আছে রক্তপরীক্ষা, ম্যামোগ্রাম, কোলনোস্কপি, হাড়ের ঘনত্ব, ত্বক পরীক্ষা, পারিবারিক ইতিহাস মূল্যায়ন এবং ভ্যাকসিনের ওপর আপডেট থাকা নিশ্চিত করা। আপনার বয়স ৫০ হলে আপনার ডাক্তার প্রতি ১০ বছরে একবার কোলনোস্কপির পরামর্শ দিতে পারেন। প্রভিডেন্স সেন্ট জন’স হেলথ সেন্টারের নারী স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ শেরি রস বলেন, ‘প্রাথমিক পর্যায়ে কোলন ক্যানসার শনাক্তকরণ জীবন বাঁচাতে পারে।’

* স্ত্রীরোগ বিশেষজ্ঞ
বেশিরভাগ সুস্থ নারীদের প্রতিবছর গাইনিকোলজিস্ট বা স্ত্রীরোগ বিশেষজ্ঞের কাছে যাওয়া উচিৎ। ডা. রস বলেন, ‘সাধারণ শারীরিক ও মানসিক সুস্থতার জন্য প্রতিবছর স্ত্রীরোগ বিশেষজ্ঞের কাছে ভিজিট করুন। যেসব নারী যৌনতায় সক্রিয় তাদের প্রতিবছর যৌন সংক্রমিত ইনফেকশনের (যেমন- ক্ল্যামিডিয়া ও গনোরিয়া) জন্য স্ক্রিনিং করানো উচিৎ। ডা. রস প্রতি তিন বছরে একবার প্যাপ স্মিয়ার বা এইচপিভি টেস্ট করতে পরামর্শ দিচ্ছেন, যতদিন পর্যন্ত ফলাফল স্বাভাবিক আসে। এসব টেস্ট সার্ভিক্যাল ক্যানসারের জন্য স্ক্রিন করে। তাই আপনার ডাক্তারের সুপারিশকৃত শিডিউল অনুসরণ আপনাকে যেকোনো অস্বাভাবিক ফলাফল অথবা ক্যানসারপূর্ব কোষ তাড়াতাড়ি শনাক্ত করতে সাহায্য করবে। স্তন ক্যানসার স্ক্রিনিংয়ের জন্য ৪০ বছর বয়স থেকে প্রতি ১-২ বছরে একবার ম্যামোগ্রাম করুন।

* চোখের ডাক্তার
আপনার প্রাথমিক ডাক্তারকে জিজ্ঞেস করুন যে, অপটোমেট্রিস্ট বা চক্ষু বিশেষজ্ঞের কাছে যাওয়ার প্রয়োজন আছে কিনা। ডা. ডজিট বলেন, ‘আমি সাধারণত সেসব রোগীদেরকে নিয়মিত চোখের ডাক্তার দেখানোর জন্য বলি যাদের অন্তর্নিহিত দশা রয়েছে, যেমন- ডায়াবেটিস - যা চোখের সমস্যার ঝুঁকি বৃদ্ধি করে। যদি রোগীদের দৃষ্টিগত পরিবর্তন হয়, তাহলে প্রাথমিক ডাক্তার কিছু প্রাথমিক পরীক্ষা করতে পারেন এবং প্রয়োজনে রেফার করতে পারেন।’ যদি আপনি ইতোমধ্যে চশমা বা কন্টাক্ট লেন্স পরে থাকেন, তাহলে প্রতি ১-২ বছরে অপটোমেট্রিস্টের কাছে ভিজিট করুন।

* দাঁতের ডাক্তার
আমেরিকান ডেন্টাল অ্যাসোসিয়েশনের মতে, প্রাপ্তবয়স্কদের ক্লিনিং ও চেকআপের জন্য প্রতি ছয়মাস পরপর ডেন্টিস্ট বা দাঁতের ডাক্তারের কাছে যাওয়া উচিৎ। অন্যথায় দাঁতে সমস্যা দেখা দেবে এবং দাঁতের প্লেক শক্ত হয়ে যাবে। এই শক্ত প্লেককে ক্যালকুলাস বা টার্টার অথবা দাঁতের পাথরও বলে এবং এটি মাড়িতে সমস্যা সৃষ্টি করে, বলেন অথরিটি ডেন্টালের ডেন্টিস্ট গ্রেগ গ্রবমায়ার। দাঁতের ক্ষয় ও প্রাথমিক ক্যাভিটির স্ক্রিনিংয়ের জন্য প্রতিবছরে একবার এক্স-রে করুন। আপনার ডেন্টিস্ট মুখে ক্যানসার আছে কিনা নির্ণয়ের জন্য বছরে একবার আপনার মুখ, গলা ও জিহ্বার নিচে পরীক্ষা করবেন। অধিকাংশ প্রাপ্তবয়স্কদের জন্য বছরে দুইবার ডেন্টিস্টের কাছে ভিজিট পর্যাপ্ত হলেও পেরিয়োডোন্টাল সমস্যা অথবা দুর্বল ইমিউন সিস্টেম আছে এমন লোকদের আরো ঘনঘন দাঁতের ডাক্তার দেখানো উচিৎ।

* ত্বক বিশেষজ্ঞ
ত্বক বিশেষজ্ঞের কাছে শুধু ব্রণ প্রবণ কিশোর-কিশোরীরা নিয়মিত ভিজিট করবে এমনটা নয়। বছরে একবার ত্বক বিশেষজ্ঞ দ্বারা তিল পরীক্ষায় মেলানোমা এবং অন্যান্য স্কিন ক্যানসার ধরা পড়তে পারে, বলেন ডা. রস। তিনি যোগ করেন, ‘বিউটি মার্ক এবং অস্বাভাবিক ত্বকের পরিবর্তনের মধ্যে পার্থক্য নিরূপণ চ্যালেঞ্জিং হতে পারে।’

তথ্যসূত্র : রিডার্স ডাইজেস্ট

পড়ুন :







রাইজিংবিডি/ঢাকা/২৪ জানুয়ারি ২০১৯/ফিরোজ

রাইজিংবিডি.কম

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়