খেলাপি ঋণ আদায়ে সুশাসন প্রতিষ্ঠার ওপর গুরুত্বারোপ
কেএমএ হাসনাত : রাষ্ট্রায়ত্ব ব্যাংকগুলো খেলাপি ঋণ আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা অর্জন করতে পারেনি। ফলে রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন ব্যাংকগুলোকে খেলাপি ঋণ কমাতে সবক্ষেত্রে সুশাসন প্রতিষ্ঠার ওপর গুরুত্ব দিতে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। বলা হয়েছে খেলাপি ঋণ আদায় এবং নতুন ঋণ দেওয়ার ক্ষেত্রে সতর্কতা অবলম্বন করতে হবে।
সম্প্রতি অর্থ মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের সচিব মো. আসাদুল ইসলামের সভাপতিত্বে ‘বার্ষিক কর্ম সম্পাদন চুক্তি’র অগ্রগতি সংক্রান্ত এক বৈঠকে এ নির্দেশনা দেওয়া হয়। বৈঠকে অর্থ মন্ত্রণালয়ের আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাসহ রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকগুলোর ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন।
এ বিষয়ে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একটি ব্যাংকের উর্ধ্বতন কর্মকর্তা রাইজিংবিডিকে বলেন, ‘বৈঠকে বার্ষিক পারফরম্যান্স লক্ষ্যমাত্রা অর্জনের অগ্রগতি পর্যালোচনা করা হয়েছে। বৈঠকে খেলাপি ঋণসহ বিভিন্ন বিষয়ে আলোচনা হয়েছে। বিশেষ করে খেলপি ঋণ কমানোসহ আর্থিক খাতে সুশাসন প্রতিষ্ঠার ওপর জোর দেওয়া হয়েছে।’
আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, বার্ষিক কর্ম সম্পাদন চুক্তিতে চলতি ২০১৮-২০১৯ অর্থবছরে সোনালী, জনতা, অগ্রণী, রূপালী, বেসিক ও বিডিবিএল ব্যাংককে খেলাপি ঋণ আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা দেওয়া হয়েছে তিন হাজার ৮০ কোটি টাকা। আর অবলোপনকৃত ঋণ থেকে আদায় করতে হবে আরও ৫৫৫ কোটি টাকা।
সব মিলিয়ে চলতি অর্থবছরে রাষ্ট্রায়ত্ত ছয় বাণিজ্যিক ব্যাংককে মোট খেলাপি ঋণ থেকে আদায় করতে হবে তিন হাজার ৬৩৫ কোটি টাকা। কিন্তু লক্ষ্যমাত্রার বিপরীতে অর্থ বছরের প্রথম তিন মাসে ব্যাংকগুলো আদায় করেছে মাত্র ৪৩৪ কোটি ৫৫ লাখ টাকা।
চলতি অর্থবছরে ৯০০ কোটি টাকা খেলাপি ঋণ আদায়ের লক্ষ্যমাত্রার বিপরীতে প্রথম তিন মাসে সোনালী ব্যাংক আদায় করেছে ২০৮ কোটি ৫২ লাখ টাকা (২৩ দশমিক ১ শতাংশ)। বার্ষিক ৪৫০ কোটি টাকা লক্ষ্যমাত্রার বিপরীতে জনতা ব্যাংক আদায় করেছে ৫৭ কোটি ৪০ লাখ টাকা (১২ দশমিক ৭৫ শতাংশ) এবং বার্ষিক ৫০০ কোটি টাকা লক্ষ্যমাত্রার বিপরীতে অগ্রণী ব্যাংক আদায় করেছে ৬৫ কোটি এক লাখ টাকা (১৩ শতাংশ)।
বার্ষিক এক হাজার কোটি টাকা লক্ষ্যমাত্রার বিপরীতে রূপালী ব্যাংক আদায় করেছে ৪৭ কোটি ১১ লাখ টাকা (৪ দশমিক ৭১ শতাংশ), বার্ষিক ১৪০ কোটি টাকা লক্ষ্যমাত্রার বিপরীতে বেসিক ব্যাংক আদায় করেছে ২২ কোটি ৮১ লাখ টাকা (১৬ দশমিক ২ শতাংশ) এবং বার্ষিক ৯০ কোটি টাকা লক্ষ্যমাত্রার বিপরীতে বিডিবিএল ব্যাংক আদায় করেছে ৩৩ কোটি ৭০ লাখ টাকা (৩৩ দশমিক ৪৭ শতাংশ)।
উল্লেখ্য, অর্থমন্ত্রী আহম মুস্তফা কামাল দায়িত্বভার নেওয়ার পরপরই আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠক করেন। ওই বৈঠকে তিনি খেলাপি ঋণ আদায়ের উপর গুরুত্ব দিতে সংশ্লিষ্টদের নির্দেশনা দেন।
অর্থমন্ত্রীর নির্দেশনার পর আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগ বার্ষিক কর্ম সম্পাদন চুক্তির অগ্রগতি সংক্রান্ত বৈঠকে খেলাপি ঋণ আদায়ের ওপর গুরুত্ব দিতে রাষ্ট্রায়ত্ব ব্যাংকগুলোর নির্বাহী প্রধানদের নির্দেশনা দেন।
রাইজিংবিডি/ঢাকা/৬ ফেব্রুয়ারি ২০১৯/হাসনাত/এনএ
রাইজিংবিডি.কম
আরো পড়ুন