ঢাকা     শুক্রবার   ১৯ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ৬ ১৪৩১

শুল্কহার পুনর্বিন্যাস দাবি বারভিডার, এনবিআরের আশ্বাস

এম এ রহমান মাসুম || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১৪:২০, ৩১ মার্চ ২০১৯   আপডেট: ০৫:২২, ৩১ আগস্ট ২০২০
শুল্কহার পুনর্বিন্যাস দাবি বারভিডার, এনবিআরের আশ্বাস

নিজস্ব প্রতিবেদক : শুল্কের বিভিন্ন স্ল্যাব ও বিন্যাস সামঞ্জস্যপূর্ণ না হওয়ায় হাইব্রিড গাড়ি আমদানিতে কাঙ্খিত লক্ষ্য অর্জন হয়নি। শুল্কহারের বিভিন্ন স্ল্যাব পুনর্বিন্যাসের পাশাপাশি নতুন ও পুরাতন (রিকন্ডিশন) গাড়ির শুল্কে বৈষম্য কমিয়ে আনার দাবি জানিয়েছে বাংলাদেশ রিকন্ডিশন্ড ভেহিক্যালস্ ইম্পোর্টার্স অ্যান্ড ডিলারস এসোসিয়েশন (বারভিডা)।

অন্যদিকে সংগঠনটির এমন দাবির বিবেচনার আশ্বাস দিয়েছেন জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের চেয়ারম্যান মো. মোশাররফ হোসেন ভূঁইয়া। রোববার দুপুরে এনবিআরের সম্মেলন কক্ষে প্রাক-বাজেট আলোচনা অনুষ্ঠিত হয়।

বারভিডার প্রেসিডেন্ট প্রেসিডেন্ট মো. হাবিব উল্লাহ ডন সংগঠনের পক্ষ থেকে দাবিগুলো উপস্থাপন করেন। সভাপতিত্ব করেন এনবিআর চেয়ারম্যান মো. মোশাররফ হোসেন ভূঁইয়া। এ সময় এনবিআরের সদস্যসহ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

আলোচনায় হাবিব উল্লাহ ডন বলেন, গেল বাজেটে হাইব্রিড প্রযুক্তির গাড়িকে সামান্য শুল্ক রেয়াত দেওয়া হলেও সেটা হাইব্রিড গাড়ির প্রযুক্তিগত উচ্চমূল্য, সিসি স্ল্যাব ও হাইব্রিড গাড়ির বিন্যাসের সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ হয়নি। ফলে চলতি অর্থবছরে হাইব্রিড গাড়ি আমদানিতে কাঙ্খিত লক্ষ্য অর্জন হয়নি। একই সঙ্গে, উচ্চশুল্কের কারণে জনপ্রিয় অনেক হাইব্রিড গাড়ি আমদানির তালিকায় যুক্ত হচ্ছে না। তাই হাইব্রিড ও ইলেক্ট্রিক প্রযুক্তি গাড়ি চালিত মোটর গাড়ি আমদানিতে কাঙ্খিত লক্ষ্য বেশকিছু দাবি পেশ করেন তিনি।

গাড়ির অবচয় হার পুনর্নির্ধারণ করার কথা বলে হাবিব উল্লাহ ডন, চলতি বছরের জন্য (চেসিস বুকের তৈরি সন) শূন্য শতাংশ, প্রথম বছরে ১০ শতাংশ, দ্বিতীয় বছরে ২০ শতাংশ, তৃতীয় বছরে ৩০ শতাংশ, চতুর্থ বছরে ৪০ শতাংশসহ পঞ্চম বছরে ৪৫ শতাংশ রাখা দাবি করেন।

এ সময় আরো বেশকিছু দাবি তুলে ধরেন তিনি। এই দাবিগুলো হলো-সিসি স্ল্যাব ও সম্পুরক শুল্কের হার পুনর্বিন্যাস (হাইব্রিড ও ফসিল ফুয়েল গাড়ি ক্ষেত্রে), বেশিসংখ্যক যাত্রী পরিবহনে ব্যবহৃত মাইক্রোবাসের সম্পূরক শুল্ক ৩০ শতাংশ থেকে হ্রাস করে ২০ শতাংশ করা, বিদ্যুৎ চালিত মটল গাড়ির সম্পূরক শুল্ক সম্পূর্ণ প্রত্যাহারসহ পাবলিক ট্রান্সপোর্টের আমদানি শুল্ক ১০ শতাংশ থেকে হ্রাস করে ১ শতাংশ করা।

প্রাক-বাজেট আলোচনার গাড়ি আমদানির শুল্ক বৈষম্য  দূর করা প্রসঙ্গে এনবিআর চেয়ারম্যান মো. মোশাররফ হোসেন ভূঁইয়া বলেন, নতুন গাড়ির ক্ষেত্রে কাস্টম ডিউটি কত হয়? আর পুরাতন গাড়ি আমদানিতে ডিউটি কত? আসছে বাজেটে গাড়ির এই বৈষম্য দূর করার চেষ্টা করবো।

হাইব্রিডকে গত বছর উৎসাহিত করায় এর ব্যবহার বেড়েছে উক্তি করে তিনি বলেন, এসব গাড়িতে বিদ্যৎ ও জ্বালানি সাশ্রয় হচ্ছে। অন্যান্য সুবিধা বাড়ছে। ফলে আগামীতে এই সেক্টরে আরো সুযোগ দেওয়া হবে। এছাড়া এবারে দেশীয় গাড়ি প্রোডাকশনের জন্য নীতিমালা করা হবে। যাতে দেশীয় মোটরগাড়ি তৈরিতে এগিয়ে আসতে পারে। ইতিম্যধ্যে দেশে মোটর সাইকেল তৈরি হচ্ছে।

এর আগে বেলা সাড়ে ১১টার দিকে শিল্প খাতের বাংলাদেশ সিরামিক ম্যানুফ্যাকচারস অ্যান্ড এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশনের সঙ্গে প্রাক-বাজেট আলোচনা হয়। আলোচনায় বাংলাদেশ সিরামিক ম্যানুফ্যাকচারস অ্যান্ড এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশন এই শিল্পের বিকাশে বেশকিছু দাবি জানান।

দাবিগুলো হলো-সিরামিক শিল্পের জন্য আমদানি করা মৌলিক কাঁচামাল, ডেকোরেশন, প্রিটিং ও অত্যাবশ্যকীয় উপকরণের ওপর বিদ্যমান আমদানি শুল্ক (সিডি) হ্রাস এবং সম্পূরক (এসডি) ও নিয়ন্ত্রণমূলক শুল্ক (আরডি) সম্পূর্ণ প্রত্যাহার করাসহ কাস্টম ট্যারিফ সিডিউলের বিবরণ সুনির্দিষ্টকরণ করা; আন্ডারইনভইসিং রোধে বিদেশে তৈরি সিরামিক পণ্য আমদানি পর্যায়ে সর্বনিম্ন ট্যারিফ মূল্য আরো বাড়ানো; দেশীয় টাইলস্ উৎপাদন পর্যায়ে আরোপিত ১৫ শতাংশ সম্পূরক শুল্ক (এসডি) সম্পূর্ণ প্রত্যাহার এবং গ্যাস বিলে প্রযোজ্য মূসক শতভাগ রেয়াত যোগ্য ঘোষণা করা।

তাদের প্রস্তাবনার পরিপ্রেক্ষিতে এনবিআর চেয়ারম্যান বলেন, ‘যেহেতু বাংলাদেশ সিরামিক রপ্তানি করছে, তাই দেশের শিল্পকে এগিয়ে নিতে বেশকিছু সুযোগ-সুবিধা দিয়ে আসছি। তারপরও তারা আরো কয়েকটি ক্ষেত্রে আমাদের কাছে সুযোগ-সুবিধা চাচ্ছে। আমরা কালিসহ শুধু সিরামিকস সেক্টরের কাঁচামাল আমদানিতে সুবিধার বিষয়টি বিবেচনা করবো।’

তিনি বলেন, ‘দেশীয় টাইলস যাতে বাজার পায় সেজন্য বিদেশি টাইলসের ক্ষেত্রে একটা পার্থক্য রাখার চেষ্টা করবো। যাতে দেশি শিল্প প্রসার পায়। অন্যদিকে বিদেশি টাইলস যারা কেনেন, তাদের বেশি দামে কিনতে হবে।’




রাইজিংবিডি/ঢাকা/৩১ মার্চ ২০১৯/এম এ রহমান/সাইফ

রাইজিংবিডি.কম

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়