ঢাকা     বুধবার   ২৪ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ১১ ১৪৩১

বাজেটে দেশি শিল্প সুরক্ষার প্রস্তাব

হাসান মাহামুদ || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১৫:০৫, ১৩ জুন ২০১৯   আপডেট: ০৫:২২, ৩১ আগস্ট ২০২০
বাজেটে দেশি শিল্প সুরক্ষার প্রস্তাব

অর্থনৈতিক প্রতিবেদক : ২০১৯-২০ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেটে দেশি শিল্প সুরক্ষার কথা বলা হয়েছে। প্রস্তাবিত এই বাজেটে স্থানীয় উৎপাদনকে উৎসাহিত করতে কিছু শিল্পখাতে মূসক ও সম্পূরক শুল্ক অব্যাহতি রাখার প্রস্তাব করা হয়েছে। কিছু পণ্য কর অবকাশ সুবিধায় অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। এর ফলে দেশি লিফট, রেফ্রিজারেটর, কম্প্রেসার, এয়ার কন্ডিশনার, মোটর সাইকেল, রাইস কুকার, ব্লেন্ডার, ওয়াশিং মেশিন প্রভৃতির দাম কমবে।

বৃহস্পতিবার বিকেলে জাতীয় সংসদে নতুন অর্থবছরের বাজেট উপস্থাপনকালে অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল এই তথ্য জানান।

‘‘সমৃদ্ধ আগামীর পথযাত্রায় বাংলাদেশ: সময় এখন আমাদের, সময় এখন বাংলাদেশের’ শিরোনাম দিয়ে প্রস্তাবিত এই বাজেট উপস্থাপনকালে অর্থমন্ত্রী বলেন, ভারি প্রকৌশল শিল্প, রপ্তানি খাতের স্বার্থ সংরক্ষণ এবং দেশীয় শিল্পের প্রতিরক্ষণ ও বিকাশের জন্য অটোমোবাইল, রেফ্রিজারেটর, ফ্রিজার, এয়ার কন্ডিশনার, মোটর সাইকেল, মোবাইল শিল্পসহ কতিপয় শিল্পখাতে বর্তমানের মতো মূসক ও সম্পূরক শুল্ক অব্যাহতি বহাল রাখার প্রস্তাব করছি।’’ 

অর্থমন্ত্রী আরো বলেন, ‘‘দেশীয় শিল্পের সুরক্ষার স্বার্থে মেইজ (শস্য), জিপসাম আমদানির ‍উপর রেগুলেটরি ডিউটি বৃদ্ধি এবং পার্টিক্যাল বোর্ড ও বৈদ্যুতিক গৃহস্থালি পণ্য আমদানিতে ২০ শতাংশ সম্পূরক শুল্ক আরোপ করার প্রস্তাব করছি। তাছাড়া স্থানীয় লিফট, রেফ্রিজারেটর, কম্প্রেসর, এয়ার কন্ডিশনার, মোটর, মোল্ড এবং পাদুকা শিল্পকে সুরক্ষার লক্ষ্যে এ খাতে ব্যবহৃত কতিপয় উপকরণ আমদানিতে শুল্ক হ্রাস করার প্রস্তাব করছি।’’ 

বাজেটে স্থানীয় ব্যবসায়ী পর্যায়ে করভার কমানোর জন্য মূসক হার ৫ শতাংশ নির্ধারণ করা হয়েছে।

যথাযথ রাজস্ব আদায়ের পাশাপাশি বাণিজ্য সহজীকরণও অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ মন্তব্য করে অর্থমন্ত্রী তার বাজেট বক্তব্যে বলেন, বিশ্বব্যাপী চলমান বাণিজ্য উদারিকরণ ও অভ্যন্তরীণ অর্থনীতিতে স্থানীয় শিল্পের অবদানকে আরো শক্তিশালী করে দেশীয় অর্থনীতিতে প্রবৃদ্ধির ধারাবাহিকতা বজার রাখার স্বার্থে বিগত সময়ে বর্তমান সরকার কর্তৃক গৃহীত পদক্ষেপের সঙ্গে সঙ্গতি রেখে আমদানি পর্যায়ে বিদ্যমান শুল্ক-কর কাঠামোকে আরো উদার ও যৌক্তিক পর্যায়ে নির্ধারণ করার উদ্দেশ্যে অংশীজনদের নিকট বাজেট প্রস্তাব আহ্বান করা হয়। 

তিনি বলেন, ‘‘আইসিটি খাতের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ অনুসঙ্গ সেলুলার ফোন উৎপাদন ও সংযোজনে রেয়াতি সুবিধা প্রদানের কারণে স্থানীয় পর্যায়ে ৫ থেকে ৬টি সেলুলার ফোন উৎপাদন ও সংযোগনকারী প্রতিষ্ঠান গড়ে উঠেছে। এ খাতে বিদ্যমান সুবিধা অব্যাহত রেখে সেলুলার ফোন উৎপাদনে প্রয়োজনীয় কতিপয় যন্ত্রাংশের আমদানির ক্ষেত্রে শুল্ক হ্রাসের প্রস্তাব করছি।’’ 

‘‘বাজেটে স্মার্ট ফোন উৎপাদনকে উৎসাহিত করতে বিদেশি স্মার্ট ফোন আমদানি শুল্ক ১০ শতাংশ থেকে বৃদ্ধি করে ২৫ শতাংশ করার প্রস্তাব করা হয়েছে।’’ 

এ ছাড়া বাজেটে কৃষি যন্ত্রপাতি, আসবাবপত্র, গৃহস্থালি সরঞ্জাম-রাইস কুকার, ব্লেন্ডার, ওয়াশিং মেশিন ইত্যাদি, মোবাইল ফোন, খেলনা, চামড়া ও চামড়াজাত পণ্য, এলইডি টেলিভিশন. প্লাস্টিক রিসাইক্লিং কর অবকাশ সুবিধায় অন্তর্ভুক্ত করার প্রস্তাব করা হয়েছে।

এই বাজেট অর্থমন্ত্রী হিসেবে মুস্তফা কামালের প্রথম বাজেট। আর বাংলাদেশের ৪৮তম, আওয়ামী লীগ সরকারের টানা তৃতীয়বার ক্ষমতায় আসার পর চলতি মেয়াদের প্রথম ও টানা ১১তম বাজেট এবং আওয়ামী লীগের ক্ষমতায় থাকাকালীন সব মিলিয়ে ১৯তম বাজেট।

এবারের বাজেটের আকার ধরা হয়েছে ৫ লাখ ২৩ হাজার ১৯০ কোটি টাকা, যা জিডিপির ১৮ দশমিক ১ শতাংশ। আগের ধারাবাহিকতায় এবারও বৃদ্ধি পেয়েছে বাজেটের সামগ্রিক আকার ও খাতওয়ারি আয়-ব্যায়ের পরিমাণ। ২২ হাজার ৩২ কোটি টাকা কমিয়ে ২০১৮-১৯ অর্থবছরের সংশোধিত বাজেটের আকার করা হয় ৪ লাখ ৪২ হাজার ৫৪২ কোটি টাকা। সেই হিসাবে এবারের বাজেটের আকার বাড়ছে ১৮ দশমিক ১ শতাংশ।

বাজেটে অভ্যন্তরীণ উৎস থেকে মোট আয় প্রাক্কলন করা হয়েছে ৮৪ হাজার ৮০০ কোটি টাকা। অভ্যন্তরীণ সূত্র থেকে ঋণ নেওয়া হবে ৭৭ হাজার ৩৬৩ কোটি টাকা। বৈদেশিক সহায়তা বাবদ ঋণ নেওয়া হবে ৬০ হাজার ৫৮০ কোটি টাকা। অভ্যন্তরীণ উৎসের মধ্যে ব্যাংক ব্যবস্থাপনা থেকে ঋণ নেওয়া হবে ৫৪ হাজার ৮০০ কোটি টাকা এবং সঞ্চয়পত্র বিক্রি করে নেওয়া হবে ৩০ হাজার কোটি টাকা।



রাইজিংবিডি/ঢাকা/১৩ জুন ২০১৯/হাসান/বকুল

রাইজিংবিডি.কম

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়