ঢাকা     শনিবার   ২০ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ৭ ১৪৩১

দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি রোধ করুন

আলী নওশের || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ০৯:৪৩, ১৮ মে ২০১৭   আপডেট: ০৫:২২, ৩১ আগস্ট ২০২০
দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি রোধ করুন

আর মাত্র কয়েকদিন পরেই শুরু হচ্ছে মাহে রমজান। এই মাস আমাদের সংযমী হওয়ার শিক্ষা দেয়। কিন্তু সংযমের মাসকে সামনে রেখেই অসংযমী কাজ বা তৎপরতা লক্ষ্য করা যাচ্ছে। বাজারে এখন চিনি, ছোলা ও ভোজ্যতেলের দামে অস্থিরতা সৃষ্টি হয়েছে। যে ছোলা দুই/তিন সপ্তাহ আগেও ৭০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হয়েছে তার দাম এখন ৯০ থেকে ১০০ টাকা। চিনির দাম ৬০ টাকা থেকে ৭৫ টাকায় পৌঁছেছে।

দেখা গেছে রমজান এলেই বাজারে বিভিন্ন পণ্যের দাম বেড়ে যায়। এইসময় দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধি পাওয়া যেন একটা নিয়মিত ঘটনায় পরিণত হয়েছে। সাধারণত বাজারে পণ্য সরবরাহে ঘাটতি থাকলে দাম বেড়ে যায়। কিন্তু চাহিদার চেয়ে মজুদ বেশি এবং আন্তর্জাতিক বাজারে দাম নিম্নমুখী হওয়া সত্ত্বেও এসব পণ্যের দাম বৃদ্ধির কারণ নেই। অযৌক্তিকভাবে ব্যবসায়ীরা এ দাম বাড়াচ্ছেন। অভিযোগ রয়েছে এর পেছনে কাজ করছে সিন্ডিকেট। সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত খবর অনুযায়ী এবার রমজানের আগে পর্যাপ্ত পরিমাণ  চিনি, ছোলা ও তেল আমদানি করেছেন সংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীরা। কিন্তু তারা সিন্ডিকেট করে বাজার নিয়ন্ত্রণ করায় দাম বাড়ছে। ফলে ক্রেতাদের বেশি দাম দিয়ে কিনতে হচ্ছে এসব পণ্য।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে দেশে ভোজ্যতেলের পর্যাপ্ত মজুদ রয়েছে। গত এক বছরে ১৫ লাখ টন ভোজ্যতেল আমদনি হয়েছে। চট্টগ্রাম বন্দরের বহির্নোঙ্গরে বর্তমানে পণ্য খালাসের অপেক্ষায় রয়েছে কয়েকটি জাহাজ। কিন্তু তা সত্ত্বেও চট্টগ্রামের খাতুনগঞ্জের পাইকারি বাজারে গত এক সপ্তাহে ভোজ্যতেলের দাম মণপ্রতি বেড়েছে ৬০ টাকা। অপরদিকে চাহিদার চেয়ে বেশি চিনির মজুদ থাকা সত্ত্বেও এর দাম গড়ে কেজিপ্রতি ১৫ টাকা বৃদ্ধি পেয়েছে যা কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়। এছাড়া কৃত্রিম সংকট তৈরি করে ছোলার দামও বাড়ানো হয়েছে।

প্রসঙ্গত, বাণিজ্যমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠক করে ব্যবসায়ীরা বলেছিলেন, দেশে চিনি, তেল, ছোলা, ও ডালের প্রচার মজুদ রয়েছে। তাই এবার রমজানে দাম বাড়ার পরিবর্তে কমবে বলে উল্লেখ করেছিলেন তারা। বাস্তবে দেখা যাচ্ছে ব্যবসায়ীদের সিন্ডিকেট বাজার এমনভাবে নিয়ন্ত্রণ করছে যার ফলে দাম বেড়ে যাচ্ছে। এ অবস্থার অবসানে সরকারকে কঠোর হাতে পণ্যের দামের উর্ধ্বগতি রোধে ব্যবস্থা গ্রহণ এবং ব্যবসায়ীদের অনিয়মের লাগাম টেনে ধরতে হবে। 

এক্ষেত্রে বাজারে মনিটরিং বাড়ানো, ভ্রাম্যমাণ আদালতের নিয়মিত অভিযান, অনিয়ম প্রমাণিত হলে বিক্রেতা ও ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে। কঠোর বাজার ব্যবস্থাপনার মাধ্যমে দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণ করে তা সাধারণ মানুষের ক্রয়ক্ষমতার মধ্যে রাখতে হবে।

রমজানকে সামনে রেখে অবশ্য সরকারের বিপণন সংস্থা ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশ (টিসিবি) ন্যায্যমূল্যে চিনি, ডাল, ভোজ্যতেল ও ছোলা সরবরাহের উদ্যোগ নিয়েছে। রাজধানী ও বিভাগীয় শহরগুলোতে বাজারদরের চেয়ে কম দামে চিনি, ছোলা, মসুর ডাল, সয়াবিন তেল ও খেঁজুর বিক্রি শুরু করেছে টিসিবি। বিক্রি কার্যক্রম চলবে ১৮ জুন পর্যন্ত। তবে এ উদ্যোগের সফলতার জন্য টিসিবিকে সরবরাহ বৃদ্ধির পাশাপাশি বাজার নিয়ন্ত্রণের ওপর জোর দিতে হবে।



রাইজিংবিডি/ঢাকা/১৮ মে ২০১৭/আলী নওশের

রাইজিংবিডি.কম

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়