ঢাকা     শুক্রবার   ১৯ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ৬ ১৪৩১

নির্বিঘ্ন হোক কর্মস্থলে ফেরা

আলী নওশের || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ০৫:১০, ২৯ জুন ২০১৭   আপডেট: ০৫:২২, ৩১ আগস্ট ২০২০
নির্বিঘ্ন হোক কর্মস্থলে ফেরা

ঈদের ছুটির পর কর্মস্থলে ফিরতে শুরু করেছেন আপনজনের সঙ্গে ঈদ উদযাপন করতে বাড়িতে যাওয়া মানুষ। এবার সুষ্ঠু ব্যবস্থাপনার কারণে ঈদে ঘরে ফেরার ধকল কম হয়েছে বিগত কয়েক বছরের তুলনায়। অবশ্য দুর্যোগপূর্ণ আবহাওয়ার কারণে মহাসড়কগুলোর অবস্থা কিছুটা খারাপ ছিল। যে কারণে শঙ্কাও তৈরি হয়েছিল। সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রীও এ ব্যাপারে চিন্তিত ছিলেন। তবে তিনি যথাসাধ্য চেষ্টা করেছেন।  মহাসড়কগুলো চলাচল উপযোগী রাখতে মন্ত্রী সক্রিয় ভুমিকা পালন করেছেন যা প্রশংসার দাবি রাখে।

তবে তারপরও ঈদে বাড়ি ফিরতে গিয়ে বিভিন্ন স্থানে কিছু দুর্ঘটনা ঘটেছে। এর মধ্যে বড় দুর্ঘটনা ঘটেছে রংপুরের পীরগঞ্জে। সেখানে সিমেন্টবোঝাই ট্রাক উল্টে যাওয়ার ঘটনায় প্রাণ হারিয়েছেন ১৭ জন। এবার নৌপথে বাড়তি সতর্কতা ছিল। যে কারণে দুর্ঘটনা এড়ানো সম্ভব হয়েছে। অবশ্য লঞ্চ ও ট্রেনগুলো বেশিরভাগ গন্তব্যে গেছে ঠাসা যাত্রী নিয়ে। যদিও কর্তৃপক্ষের নজরদারী ছিল। কিন্তু যানবাহনের তুলনায় যাত্রীর সংখ্যা অনেক বেশি হওয়ায় এমনটি ঘটছে। বিশেষতঃ ট্রেনে যাত্রী ছিল অনেক বেশি। যে কারণে ঝুঁকিপূর্ণভাবে ট্রেন চলাচল করেছে। তবে স্বস্তির বিষয় হলো কোনো অঘটন ঘটেনি।

এছাড়া গত বছর ঈদের আগে হলি আর্টিজানে এবং শোলাকিয়ায় ঈদগাহের কাছে জঙ্গি হামলার কারণে এবার ঈদকে কেন্দ্র করে মানুষের মনে কিছুটা উদ্বেগ-উৎকণ্ঠা ছিল কী হয় না হয়। তবে শেষ পর্যন্ত কোনো অঘটন ছাড়াই সারা দেশে ঈদ উদ্‌যাপিত হওয়ায় স্বস্তি ও নিরাপত্তাবোধ ফিরে এসেছে জনমনে।

ঈদকে কেন্দ্র করে চুরি, ছিনতাই, ডাকাতির ঘটনা ঘটে। তাছাড়া মলম পার্টি, অজ্ঞান পার্টি তৎপর থাকে। এবার সেই অপরাধী চক্রের তৎপরতা বেশ কম ছিল। এ ধরনের ঘটনা রোধে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী বেশ তৎপর ছিল। সেদিক থেকেও এবার ঈদ উদ্‌যাপনে স্বস্তি ছিল বলা যায়।

এখন আপনজনের সঙ্গে ঈদ উদযাপন শেষে ইতিমধ্যে কর্মস্থলে ফিরতে শুরু করেছেন কর্মজীবীরা। এরফলে বিপরীতক্রমে এখন যানবাহনে ভিড় থাকবে বেশি। অন্তত দুই সপ্তাহ পর্যন্ত রাজধানী কিংবা প্রধান প্রধান নগরমুখী যানবাহন চলাচলও বেড়ে যাবে অনেক। এতে যানজটের আশঙ্কাও থাকছে। যেহেতু এখন বর্ষা মৌসুম। কোথাও কোথাও দুর্যোগপূর্ণ আবহাওয়ার শিকারও হতে পারেন কর্মস্থলে ফেরা মানুষ। তাই এই ফিরতি পথেও দুর্ঘটনার শঙ্কা রয়েছে। এ ব্যাপারে সতর্ক থাকতে হবে সবাইকে।

আমরা আশা করব, যানবাহন চালকরা বাড়তি দায়িত্বশীলতার পরিচয় দেবেন। আর যাত্রীসাধারণকেও সাবধানতা অবলম্বন করতে হবে। অযথা ঝুঁকি নিয়ে যানবাহনে না ওঠাই ভাল। কেননা সময়ের চেয়ে জীবনের মূল্য অনেক বেশি। একটি দুর্ঘটনা মানেই সারা জীবনের কান্না। সুতরাং চালক ও যাত্রী সবাইকেই এক্ষেত্রে ধৈর্যের পরিচয় দিতে হবে। আর এ ব্যাপারে ট্রাফিক পুলিশ বা হাইওয়ে পুলিশকেও সক্রিয় হতে হবে।

দেখা গেছে সড়ক-মহাসড়কে অনেক যানবাহন প্রতিযোগিতা করে চলাচল করছে। কিন্তু একে অপরের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে চলতে গিয়ে অনেক সময় দুর্ঘটনার মুখে পড়ছে। এ ধরনের হঠকারিতা যাতে কেউ না করে সে ব্যাপারে সতর্ক থাকতে হবে। ঈদে ঘরে ফেরার মতো কর্মস্থলেও যেন সাধারণ মানুষ নির্বিঘ্নে নিরাপদে ফিরতে পারেন। এব্যাপারে সংশ্লিষ্ট সবাই সতর্ক দৃষ্টি রাখবেন এমনটিই প্রত্যাশা আমাদের।



রাইজিংবিডি/ঢাকা/২৯ জুন ২০১৭/আলী নওশের

রাইজিংবিডি.কম

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়