ঢাকা     বুধবার   ২৪ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ১১ ১৪৩১

‘দেশে ঈদ আনন্দ ছিল, এখানে আশ্রয় পাওয়াটা অনেক’

সুজাউদ্দিন রুবেল || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ০২:২৫, ১৬ জুন ২০১৮   আপডেট: ০৫:২২, ৩১ আগস্ট ২০২০
‘দেশে ঈদ আনন্দ ছিল, এখানে আশ্রয় পাওয়াটা অনেক’

সুজাউদ্দিন রুবেল, কুতুপালং ক্যাম্প থেকে : ‘‘দেশে আনন্দ নিয়ে ঈদ করতাম। কিন্তু এখন ছোট জায়গায় কীভাবে আনন্দ করে ঈদ করব। এখন বাংলাদেশে আশ্রয় পেয়েছি, এটাই অনেক বেশি।’’

মিয়ানমারে সেনাবাহিনীর নির্যাতনে পালিয়ে বাংলাদেশে আশ্রয় নেওয়া রোহিঙ্গা নাগরিক আয়াছ উদ্দিন (৫৩) এভাবে কষ্টের কথা বলছিলেন। তখন তার চোখ দিয়ে পানি পড়ছিল।

শুধু আয়াছ উদ্দিন নয়, এই অবস্থা কক্সবাজারের উখিয়া ও টেকনাফে আশ্রয় নেওয়া প্রতিটি রোহিঙ্গা পরিবারের। তাদের প্রত্যেকের মুখে শোনা গেল, নির্যাতনের মুখে বাংলাদেশে আশ্রয় পেয়েছেন, এটাই অনেক। যা ঈদের খুশির চেয়ে বেশি।

 



রমজানের রোজা শেষে আজ খুশির ঈদ। ঈদ আনন্দের তেমন আমেজ নেই বললেই চলে কক্সবাজারের উখিয়া ও টেকনাফের ক্যাম্পে বসবাসরত রোহিঙ্গাদের মাঝে। তবে রোহিঙ্গাদের মধ্যে অবস্থাপন্ন অনেকে ক্যাম্প নিকটবর্তী বাজার থেকে ঈদের কেনাকাটা করেছেন।

নতুন কাপড় ক্রয়, সেমাইসহ নানা উপকরণ ক্রয় করতে না পারায় হতাশা প্রকাশ করেছেন অনেকে। আবার অনেকে পর্যাপ্ত জায়গার অভাবে ঈদের নামাজ আদায় নিয়ে সংশয় প্রকাশ করেন।

কুতুপালং রোহিঙ্গা ক্যাম্পে আশ্রয় নেওয়া কেরামত আলী (৫৫) বলেন, দেশে থাকতে সেমাইসহ নানা ঈদ সামগ্রী কিনতেন। ছেলে-মেয়েদের নতুন কাপড়-চোপড় কিনে দিতেন। কিন্তু দেশ থেকে পালিয়ে বাংলাদেশে আশ্রয় নেওয়ার পর এখানে তো সেগুলো কেনার সামর্থ্য নেই। তাই ভাত খেয়ে ও পুরাতন কাপড়-চোপড় পড়ে ঈদ করছেন।

 



আরেক রোহিঙ্গা আবদুর রহিম (৩৫) বলেন, ক্যাম্পের চারপাশে শুধু ঘর আর ঘর। শুধু মধ্যে মধ্যে একটা মসজিদ। যাও অনেক ছোট। ভারি বর্ষণের কারণে কাদায় ভরে গেছে। ঈদগাহ না থাকায় সবাই মিলে নামাজ পড়া মুশকিল।

কক্সবাজারের উখিয়া ও টেকনাফের ২০টি ব্লকে বসবাস করছে মিয়ানমার থেকে পালিয়ে আসা ১১ লাখের অধিক রোহিঙ্গা। তবে ঈদে রোহিঙ্গাদের বিশেষ উপহার দেয়নি তাদের সহায়তাকারী আন্তর্জাতিক সংস্থা।

কক্সবাজারের জেলা প্রশাসক মো. কামাল হোসেন জানান, জেলা প্রশাসন রোহিঙ্গাদের সার্বিক বিষয়গুলো নিয়ে শুরু থেকে সমন্বয় করে আসছে। তারই ধারাবাহিকতায় ডব্লিউএফপি ও ইউএনএইচসিআর রোহিঙ্গাদের খাদ্য সামগ্রী বিতরণ করছে। এখন যেহেতু ঈদ, তাই রোহিঙ্গাদের বিভিন্ন ক্যাম্পে এনজিও ও সহযোগী এনজিও ঈদ সামগ্রী বিতরণ করেছে। রোহিঙ্গারা যাতে অন্যদের মতো ঈদের নামাজ আদায়সহ আনন্দ করতে পারে, তার জন্য সব ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।



রাইজিংবিডি/কক্সবাজার/১৬ জুন ২০১৮/সুজাউদ্দিন রুবেল/বকুল

রাইজিংবিডি.কম

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়