এতিমখানায় প্রশ্নের উত্তর লিখে পরীক্ষাকেন্দ্রে পাঠানো হয়! (ভিডিও)
কালীগঞ্জ (গাজীপুর) সংবাদদাতা : গাজীপুরের কালীগঞ্জ উপজেলার একটি দাখিল পরীক্ষাকেন্দ্রে এতিমখানা থেকে নকল সরবরাহের অভিযোগ পাওয়া গেছে।
রোববার এ ঘটনায় মাদ্রাসার দুই কর্মকর্তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশ দিয়েছেন কালীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও)।
কালীগঞ্জের দুর্বাটি এম ইউ কামিল মাদ্রাসায় এবার উপজেলার ২৯টি মাদ্রাসার ৬৫৯ শিক্ষার্থী দাখিল পরীক্ষা দিচ্ছে। এই মাদ্রাসার পাশেই দুবার্টি দারুচ্ছুন্নাৎ নামের একটি এতিমখানা রয়েছে। এখান থেকে পরীক্ষার প্রশ্নের উত্তর কাগজে লিখে তা ওই কেন্দ্রের শিক্ষার্থীদের সরবরাহ করা হচ্ছে বলে স্থানীয়রা অভিযোগ করেন।
ওই এতিমখানায় বসে কয়েকজন মোবাইল সেটে প্রশ্ন দেখে বই থেকে তার উত্তর খুঁজছেন এবং তা কাগজে লিখে রাখছেন এমন একটি ভিডিও ছড়িয়ে পড়ে।
এ ভিডিও ফুটেজের সূত্র ধরে রোববার দুপুরে ইউএনও খন্দকার মু. মুশফিকুর রহমান ওই এতিমখানায় অভিযান চালান। এ সময় কাউকে সেখানে পাওয়া যায়নি। তবে ফুটেজে দেখা যাওয়া কক্ষ সনাক্ত করেন। এরপর তিনি দুর্বাটি এম ইউ কামিল মাদ্রাসা কেন্দ্রের হল সুপার মো. রফিকুল ইসলামকে দায়িত্ব থেকে অব্যাহতির নির্দেশ দেন। এছাড়া এতিমখানার সুপারিনটেনডেন্ট মো. নজরুল ইসলামকে বহিষ্কার করতে মাদ্রাসা পরিচালনা কমিটির সাধারণ সম্পাদক আবু নাঈম মো. মোস্তাফিজুর রহমানকে পরামর্শ দেন।
ওই কেন্দ্র সচিব ও উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার নূর-ই-জান্নাতকে ভিডিও ফুটেজে যেসব শিক্ষককে দেখা গেছে তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়ারও নির্দেশ দেন ইউএনও। নূর-ই-জান্নাত সংশ্লিষ্টদের ব্যাপারে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নির্দেশ পেয়েছেন বলে জানান।
দুবার্টি দারুচ্ছুন্নাৎ এতিমখানা পরিচালনা কমিটির সাধারণ সম্পাদক আবু নাঈম মো. মোস্তাফিজুর রহমান জানান, ওই এতিমখানায় বহিরাগত কারও প্রবেশের অনুমতি নেই। কিন্তু তারপরও পরীক্ষা চলাকালে কেন এতজন শিক্ষক সেখানে প্রবেশ করলেন এ ব্যাপারে এতিমখানার সুপারিনটেনডেন্ট মো. নজরুল ইসলামের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
এদিকে ওই পরীক্ষা কেন্দ্রে নকল সরবরাহের বিনিময়ে পরীক্ষার্থীদের কাছ থেকে টাকা নেওয়ার অভিযোগও রয়েছে। স্থানীয়রা রোববার সাংবাদিকদের কাছে এ অভিযোগ করেছেন।
এর আগে গত ১৩ ফেব্রুয়ারি আরবি দ্বিতীয়পত্র পরীক্ষা চলাকালে বেলা ১১টার দিকে দুবার্টি দারুচ্ছুন্নাৎ এতিমখানায় বসে মোবাইল থেকে প্রশ্ন দেখে উত্তর খুঁজে বের করছেন এরকম খবর ছড়িয়ে পড়ে।
স্থানীরা বিষয়টি জানতে পেরে ওই এতিমখানায় হানা দিলে নকল তৈরির কাজে থাকা শিক্ষকরা পালিয়ে যান। ভাঙা জানালা দিয়ে পালিয়ে যাওয়ার সময় সালাউদ্দিন এবং জাকির নামের দুই ব্যক্তি আহত হন। পরে তারা স্থানীয়দের কাছে ক্ষমা চেয়ে মুক্তি পান।
রাইজিংবিডি/কালীগঞ্জ/১৯ ফেব্রুয়ারি ২০১৭/রফিক সরকার/বকুল
রাইজিংবিডি.কম
আরো পড়ুন