দ্রুত এগিয়ে যাচ্ছে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়
আশরাফুল ইসলাম আকাশ : জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের এক যুগপূর্তি হলো ২০ অক্টোবর। ২০০৫ সালে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় আইন পাস হয়। জগন্নাথ কলেজ থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ে রূপান্তর করা হয়। নানা সীমাবদ্ধতার মধ্যে দিয়ে চলে আসছে এই বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষাকার্যক্রম। এই এক যুগের পথচলায় সংকট আর সীমাবদ্ধতার মধ্যেও বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের সাফল্য ইর্ষণীয়। দেশের বিভিন্ন অঙ্গনে শীর্ষে স্থান করে নিচ্ছেন তারা। একাডেমিক এবং নন একাডেমিক উভয় ক্ষেত্রেই তাদের অবস্থান উপরের সারিতে।
ঐতিহ্যবাহী এই প্রতিষ্ঠানটি একযুগ পার করলেও এখন পর্যন্ত তেমন কোন উন্নয়ন হয়নি। বর্তমানে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যায়ের শিক্ষার্থীর সংখ্যা ২৩ হাজার । এটিকে দেশের তৃতীয় বৃহত্তম পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় হিসেবে গণ্য করা হয়। কিন্তু বিশ্ববিদ্যায়ের অবকাঠামোগত সংকট, শ্রেণিকক্ষ, শিক্ষকদের বসার ব্যবস্থা, বিশেষ করে ল্যাবরেটরি এবং গ্রন্থাগারের সীমাবদ্ধতাও প্রকট। প্রকৃত অর্থে সত্যিকারের গবেষণা করার মতো ল্যাবরেটরি নেই। হল, ক্যান্টিন, খেলার মাঠসহ একটি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের যা প্রয়োজন তার খুব কমই পান জবির শিক্ষার্থীরা।
তবে অচিরেই এসব সমস্যার সমাধান হতে যাচ্ছে। দ্বিতীয় ক্যাম্পাসে ২৩০ একর জমি অধিগ্রহণের কার্যক্রম চলছে দ্রুত গতিতে। চলতি বছরের ডিসেম্বরের মধ্যেই অধিগ্রহণ করা সম্ভব হবে বলে জানা গেছে। এরপর সেখানে অধুনিক মানের বিশ্ববিদ্যালয় গড়ে তোলা হবে। সেখানে সব ধরনের সুযোগ সুবিধা পাবেন শিক্ষার্থীরা।
নানা সীমাবদ্ধতার মধ্যেও পিছিয়ে নেই এই বিশ্ববিদ্যালয়। দক্ষ নেতৃত্ব আর স্বল্প সুযোগের সর্বোচ্চ ব্যবহার করে নানা সীমাবদ্ধতাকে পাশ কাটিয়ে বিভিন্ন ক্ষেত্রে উন্নতির শিখরে দ্রুত এগিয়ে যাচ্ছে। জ্ঞান চর্চা ও সৃষ্টির জন্য এমফিল, পিএইচডি প্রোগ্রাম চলছে। বিভিন্ন গবেষণা প্রকল্প চলমান রয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকবৃন্দ শতাধিক এম.ফিল, পিএইচ.ডি গবেষণা তত্ত্বাবধানের বাইরেও ইউজিসি ও সরকারি অর্থায়নে একশ’র অধিক গবেষণা প্রকল্প পরিচালনা করছেন। বিশ্ব মানের প্রকাশনা তৈরি করছেন। প্রত্যেকটি অনুষদের জার্নাল নিয়মিত বের হচ্ছে। গবেষণার ক্ষেত্রে গতি পেয়েছে, সমৃদ্ধ গবেষণা হচ্ছে।
বর্তমানে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ে অনেক মেধাবী শিক্ষার্থী ভর্তি হচ্ছে। ভর্তিচ্ছুদের আকর্ষণের কেন্দ্রে এসেছে এ বিশ্ববিদ্যালয়। তরুণ শিক্ষকদের অগ্রণী ভুমিকায় কেবল মেধার ওপর ভিত্তি করে বিসিএসসহ বিভিন্ন প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষাগুলোর প্রায় ক্ষেত্রেই শীর্ষ সারিতে অবস্থান এই বিশ্ববিদ্যালয়ের। ৩৪ ও ৩৫তম বিসিএসে ক্যাডার প্রাপ্তির সংখ্যায় দ্বিতীয় বলে ধরা হয়। ৩৬তম বিসিএস সুপারিপ্রাপ্তদের তালিকায়ও শীর্ষে রয়েছে এ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। অ্যাডমিন ক্যাডারে প্রথম হয়েছেন রসায়ন বিভাগের পঞ্চম ব্যাচের শিক্ষার্থী ইসমাঈল হোসাইন। অন্য কয়েকটি ক্যাডারেও প্রথম স্থানসহ উল্লেখযোগ্য সংখ্যক শিক্ষার্থী সুপারিশপ্রাপ্ত হয়েছেন। এছাড়া বিভিন্ন চাকরির পরিক্ষায় উল্লেখযোগ্য অবস্থানে থাকতে দেখা গেছে। কালচারাল অঙ্গনেও রয়েছে ব্যাপক অর্জন।
সব মিলিয়ে বলা যায়, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় সকল ক্ষেত্রে উন্নতির শিখরে এগিয়ে যাচ্ছে। অন্যান্য বিশ্ববিদ্যালয়ের মতো সুযোগ-সুবিধা থাকলে আরো অনেক বেশি ভালো করতে পারতেন শিক্ষার্থীরা। আশা করা যায়, অচিরেই বিশ্ববিদ্যালয়ের নানা সমস্যার সমাধান হবে এবং আধুনিক মানের বিশ্ববিদ্যালয়ে পরিণত হয়ে উন্নতির শিখরে অবস্থান করবে।
লেখক : সভাপতি, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় সাংবাদিক সমিতি
রাইজিংবিডি/ঢাকা/২২ অক্টোবর ২০১৭/আশরাফ/এনএ
রাইজিংবিডি.কম
আরো পড়ুন