ঢাকা     শুক্রবার   ১৯ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ৬ ১৪৩১

মুফতি হান্নানের গ্রেপ্তারে বিরক্ত হয়েছিলেন বাবর

মামুন খান || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১২:২১, ১৪ নভেম্বর ২০১৭   আপডেট: ০৫:২২, ৩১ আগস্ট ২০২০
মুফতি হান্নানের গ্রেপ্তারে বিরক্ত হয়েছিলেন বাবর

নিজস্ব প্রতিবেদক : হরকাতুল জিহাদ নেতা মুফতি আব্দুল হান্নানের গ্রেপ্তারের খবরে তৎকালীন স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী লুৎফুজ্জামান বাবর কিছুটা বিরক্ত হয়েছিলেন। এছাড়া ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলার মামলার বিষয়ে আর কোনো পদক্ষেপ নিতেও নিষেধ করেছিলেন বাবর।

মঙ্গলবার ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলার ঘটনায় দায়ের করা হত্যা ও বিস্ফোরক আইনের দুই মামলায় রাষ্ট্রপক্ষে মামলার প্রধান কৌঁসুলি সৈয়দ রেজাউর রহমান যুক্তিতর্কে র‌্যাবের প্রাক্তন  মহাপরিচালক আব্দুল আজিজ সরকারের জবানবন্দির আলোকে ট্রাইব্যুনালে এ তথ্য তুলে ধরেন।

ঢাকার এক নম্বর দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালের বিচারক শাহেদ নূর উদ্দিন এদিন রাষ্ট্রপক্ষের যুক্তি উপস্থাপন শেষে বুধবার পর্যন্ত যুক্তি উপস্থাপন মুলতবি করেন।

রাজধানীর পুরান ঢাকার নাজিমউদ্দিন রোডে পুরনো কেন্দ্রীয় কারাগারের পাশে স্থাপিত অস্থায়ী এজলাসে এ যুক্তিতর্ক উপস্থাপন হয়।

মঙ্গলবার বেলা ১২টায় কার্যক্রম শুরু হওয়ার পর রাষ্ট্রপক্ষে যুক্ততর্কে ৭ জন সাক্ষী এবং একজন আসামির জবানবন্দি আদালতে উপস্থাপন করেন সৈয়দ রেজাউর রহমান। এরা হলেন-সাক্ষী মোসাদ্দেক বিল্লাহ, কর্নেল (অব.) গোলাম রাব্বানী, র‌্যাবের প্রাক্তন মহাপরিচালক আব্দুল আজিজ সরকার, মেজর (অব.) সৈয়দ মনিরুল ইসলাম, মো. তারেক আজম, মো. সাদেক হোসেন ও মো. মকবুল হোসেন এবং আসামি আবু জান্দাল।

সৈয়দ রেজাউর রহমান বলেন, র‌্যাবের প্রাক্তন মহাপরিচালক আব্দুল আজিজ সরকার ২০১১ সালের ৮ মার্চ তদন্ত কর্মকর্তার কাছে জবানবন্দি দেন। এরপর একই জবানবন্দি পরদিন আদালতে ম্যাজিস্ট্রেটের কাছে প্রদান করেন। একইভাবে তিনি আদালতেও ওই জবানবন্দি প্রদান করেন। তার জবানবন্দিতে বলা হয়, ২০০৫ সালে বিভিন্ন সময় বোমা হামলার ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে মুফতি হান্নানকে ওই বছর ১ অক্টোবর মেরুল বাড্ডা থেকে গ্রেপ্তার করা হয়। তাকে গ্রেপ্তারের বিষয়ে তৎকালীন আইজিপি আব্দুল কাইয়ুম এবং স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী লুৎফুজ্জামান বাবরকে অবহিত করি। বাবর সাহেব মুফতি হান্নানের গ্রেপ্তারের খবরে সন্তোষ হন নাই বরং কিছুটা বিরক্ত হন। তবে কোনো মন্তব্য করেন নাই। পরে মুফতি হান্নান টিএফআই সেলে জিজ্ঞাসাবাদে ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলার ঘটনার সঙ্গে জড়িত মর্মে স্বীকার করলে তাও তৎকালীন অতিরিক্ত আইজিপি ও বাবর সাহেবকে অবহিত করি এবং এ বিষয়ে তদন্ত কর্মকর্তাদের আইনানুগ ব্যবস্থা নিতে নির্দেশ দেওয়ার অনুরোধ জানায়। কিন্তু এর অনুকূলে কোনো  নির্দেশনা পাওয়া যায় নাই। বরং বাবর সাহেব ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলার মামলার বিষয়ে আর কোনো পদক্ষেপ নিতেও নিষেধ করেন।

এর আগে গত ১১ অক্টোবর মামলাটিতে আসামিপক্ষের সাফাই সাক্ষ্য শেষ হয়। মামলাটিতে বিভিন্ন সময়ে ২০ জন সাফাই সাক্ষ্য দেন।

মামলাটিতে গত ১২ জুন জামিনে ও কারাগারে থাকা ৩১ আসামির আত্মপক্ষ শুনানি হয়। শুনানিতে ৩১ আসামির সবাই  নিজেদের নির্দোষ দাবি করেন। মামলাটিতে বিএনপির সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান তারেক রহমানসহ ১৮ জন আসামি পলাতক থাকায় তারা আত্মপক্ষ শুনানির সুযোগ পাননি।

মামলায় আসামি খালেদা জিয়ার ভাগ্নে সাইফুল ইসলাম ডিউক, প্রাক্তন আইজিপি মো. আশরাফুল হুদা, শহিদুল হক ও খোদা বক্স চৌধুরী এবং মামলার তিন তদন্ত কর্মকর্তা তৎকালীন বিশেষ পুলিশ সুপার রুহুল আমিন, সিআইডির সিনিয়র এএসপি মুন্সি আতিকুর রহমান, এএসপি আব্দুর রশীদ ও প্রাক্তন ওয়ার্ড কমিশনার আরিফুল ইসলাম জামিনে রয়েছেন।

অন্যদিকে প্রাক্তন স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী লুৎফুজ্জামান বাবর, প্রাক্তন উপমন্ত্রী আব্দুস সালাম পিন্টুসহ ২৩ জন কারাগারে এবং বিএনপির চেয়ারপারসনের বড় ছেলে তারেক রহমানসহ ১৯ জন পলাতক। এ মামলার আসামি মুফতি হান্নান ও আলী আহসান মুহাম্মাদ মুজাহিদের অন্য মামলায় মৃত্যুদণ্ড কার্যকর হয়েছে।

প্রসঙ্গত, ২০০৪ সালের ২১ আগস্ট আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে জনসভায় গ্রেনেড হামলায় আওয়ামী লীগের মহিলাবিষয়ক সম্পাদিকা ও প্রয়াত রাষ্ট্রপতি জিল্লুর রহমানের স্ত্রী আইভি রহমানসহ ২৪ জনের নির্মম মৃত্যু হয়।



রাইজিংবিডি/ঢাকা/১৪ নভেম্বর ২০১৭/মামুন খান/সাইফ

রাইজিংবিডি.কম

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়