ঢাকা     বৃহস্পতিবার   ২৫ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ১২ ১৪৩১

তারেক রহমানের খালাস দাবি

মামুন খান || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১১:৫৮, ২৩ জানুয়ারি ২০১৮   আপডেট: ০৫:২২, ৩১ আগস্ট ২০২০
তারেক রহমানের খালাস দাবি

নিজস্ব প্রতিবেদক : ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা মামলার পলাতক আসামি বিএনপির সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান তারেক রহমানের বেকসুর খালাস দাবি করেছেন রাষ্ট্র নিযুক্ত আইনজীবী এ কে এম আখতার হোসেন।

মঙ্গলবার পুরান ঢাকার নাজিমউদ্দিন রোডে পুরনো কেন্দ্রীয় কারাগারের পাশে স্থাপিত অস্থায়ী ঢাকার ১ নম্বর দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালে ওই আইনজীবী এ দাবি করে যুক্তি উপস্থাপন শেষ করেন।

এর আগে সোমবার তারেক রহমানের পক্ষে আংশিক যুক্তি উপস্থাপন করা হয়।

মঙ্গলবার বেলা ১২টার দিকে বিচারক শাহেদ নূর উদ্দিন এজলাসে উঠলে তারেক রহমানের পক্ষে অবশিষ্ট যুক্তি উপস্থাপন শুরু করেন আইনজীবী আখতার হোসেন।

যুক্তি উপস্থাপনকালে তিনি বলেন, তারেক রহমানের বিরুদ্ধে মামলায় আনা অভিযোগের সমর্থনে সুস্পষ্ট কোনো সাক্ষী নেই। মামলার এজাহার, জিডি এবং প্রথম চার্জশিটে তার নাম ছিল না। প্রথম চার্জশিট হওয়ার পর ৬১ জনের সাক্ষ্য নেন আদালত। সেখানেও তারেক রহমানের নাম কেউ উচ্চারণ করেননি। মামলাটি অধিকতর তদন্তে পাঠানো হয় গ্রেনেডের উৎস খোঁজার জন্য। কিন্তু তদন্ত কর্মকর্তা আবদুল কাহার আকন্দ উৎস খোঁজার স্থলে তারেক রহমানকে সম্পৃক্ত করেন। যেখানে মুফতি হান্নানের প্রথম স্বীকারোক্তিতে তারেক রহমানের নাম-গন্ধ ছিল না। সেখানে উদ্দেশ্যমূলকভাবে মুফতি হান্নানকে দিয়ে দ্বিতীয়বার স্বীকারোক্তি আদায় করে তারেক রহমানের নাম বলানো হয়। একটি মামলায় একজন আসামির দুটি স্বীকারোক্তি বিরল ঘটনা। এছাড়া ২১ আগস্টে গ্রেনেড হামলাকারীদের ঘটনা বাস্তবায়নে সব ধরনের প্রশাসনিক সহযোগিতার আশ্বাস দেন তারেক রহমান মর্মে চার্জশিটে উল্লেখ আছে। কিন্তু ওই সময় তারেক রহমান বিএনপি এবং চার দলীয় জোট সরকারের কোনো দায়িত্বশীল পদে ছিলেন না। তাই ওই অভিযোগ ভিত্তিহীন।

রাষ্ট্রপক্ষ তারেক রহমানের বিরুদ্ধে সন্দেহাতীতভাবে অভিযোগ প্রমাণ করতে পারেনি, এ দাবি করে তারেক রহমানের বেকসুর খালাস প্রার্থনা করেন এ আইনজীবী।

এদিন তারেক রহমানের পক্ষে যুক্তিতর্ক পেশ শেষ হওয়ার পর আসামি হাফেজ মাওলানা ইয়াহিয়ার পক্ষে যুক্তিতর্ক পেশ শুরু করেন আইনজীবী মো. মাঈনুদ্দিন মিয়া। তার আংশিক যুক্তি উপস্থাপন শেষ হওয়ার পর বুধবার পর্যন্ত যুক্তি উপস্থাপন মূলতবি করা হয়।

এদিকে তারেক রহমানের খালাস দাবির যুক্তি উপস্থাপন শেষে এ মামলায় রাষ্ট্রপক্ষের প্রধান কৌঁসুলি সৈয়দ রেজাউর রহমান সাংবাদিকদের বলেন, ২১ আগস্ট ভয়াবহ গ্রেনেড হামলার ষড়যন্ত্রের সঙ্গে তারেক রহমান জড়িত, রাষ্ট্রপক্ষ তা সন্দেহাতীতভাবে প্রমাণ করতে সক্ষম হয়েছে। এ আসামির বিরুদ্ধে ২৭ জন সাক্ষী সাক্ষ্য দিয়েছেন। তারেক রহমান তার তৎকালীন রাজনৈতিক কার্যালয় বনানীর হাওয়া ভবনে ষড়যন্ত্র  বৈঠক করেছেন, তাও প্রমাণিত হয়েছে বলে দাবি করেন রাষ্ট্রপক্ষের প্রধান কৌঁসুলি। ওই বৈঠকের আলোকে হামলাকারীদের সার্বিক সহায়তা প্রদান করা হয়েছে। এ মামলায় কাউকে উদ্দেশ্যমূলকভাবে জড়ানো হয়নি।

মামলাটিতে এর আগে পলাতক আসামি মাওলানা লিটন ওরফে জুবায়েরের পক্ষে রাষ্ট্রনিযুক্ত আইনজীবী মো. আবদুল বাতেন, পলাতক আসামি  মুফতি সফিকুর রহমানের পক্ষে আইনজীবী মাজহারুল কুদ্দুস, পলাতক আসামি মো. ইকবালের পক্ষে আইনজীবী মুহাম্মদ মাহবুবুল আলম, পলাতক আসামি মাওলানা তাজউদ্দিনের পক্ষে আইনজীবী আশরাফুল আলম, পলাতক আসামি জাহাঙ্গীর আলম বদরের পক্ষে আইনজীবী সাইদুল হক, রাতুল আহমদ বাবুর পক্ষে অ্যাডভোকেট মশিউর রহমান, মহিবুল মোত্তাকিনের পক্ষে অ্যাডভোকেট হালিমা আক্তার, হানিফ পরিবহনের মালিক মো. হানিফের পক্ষে আইনজীবী চৈতন্য চন্দ্র হালদার, পলাতক মো, খলিলের পক্ষে অ্যাডভোকেট খলিলুর রহমান খান, বিএনপি নেতা প্রাক্তন সংসদ সদস্য শাহ মোফাজ্জল হোসেন কায়কোবাদের পক্ষে অ্যাডভোকেট আশরাফ-উল আলম, বিএনপি নেতা পলাতক হারিছ চৌধুরীর পক্ষে অ্যাডভোকেট আবু তৈয়ব ও পলাতক আনিসুল মোরসালিনের পক্ষে অ্যাডভোকেট সাখাওয়াৎ হোসেন যুক্তিতর্ক উপস্থাপন করেন।

গত ১ জানুয়ারি মামলার আসামিদের আইন অনুযায়ী সর্বোচ্চ সাজা দাবি করে রাষ্ট্রপক্ষ যুক্তিতর্ক পেশ শেষ করে।

প্রসঙ্গত, ২০০৪ সালের ২১ আগস্ট আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে জনসভায় গ্রেনেড হামলায় আওয়ামী লীগের মহিলাবিষয়ক সম্পাদিকা ও প্রয়াত রাষ্ট্রপতি জিল্লুর রহমানের স্ত্রী আইভি রহমানসহ ২৪ জনের মৃত্যু হয়। গ্রেনেডের স্প্লিন্টারের আঘাতে আহত হন কয়েক শত মানুষ। বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সেদিন অল্পের জন্য বেঁচে যান।



রাইজিংবিডি/ঢাকা/২৩ জানুয়ারি ২০১৮/মামুন খান/রফিক

রাইজিংবিডি.কম

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়