ঢাকা     বুধবার   ২৪ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ১১ ১৪৩১

নদীভাঙন রোধে কার্যকর উদ্যোগ নেওয়া জরুরি

হাসিবুল ইসলাম || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১০:০৮, ১৪ মার্চ ২০১৮   আপডেট: ০৫:২২, ৩১ আগস্ট ২০২০
নদীভাঙন রোধে কার্যকর উদ্যোগ নেওয়া জরুরি

নিজস্ব প্রতিবেদক : হাওরবাসীর উন্নয়নে বিকল্প কর্মসংস্থানের লক্ষ্যে শিল্প-কলকারখানা স্থাপন, নারী উদ্যোক্তা তৈরিতে সহায়তা ও নদীভাঙন রোধে কার্যকর উদ্যোগ নেওয়া জরুরি।

এ ছাড়া দুর্গম যোগাযোগ ব্যবস্থা, বাজার ব্যবস্থাপনায় ত্রুটি, জলমহালগুলো প্রভাবশালীদের নিয়ন্ত্রণে থাকা হাওর অঞ্চলের মানুষদের জীবন-জীবিকার ক্ষেত্রে বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে।

বুধবার রাজধানীর সিরডাপ মিলনায়তনে আয়োজিত ‘হাওরবাসীর জীবন-জীবিকা’ শীর্ষক গবেষণা প্রতিবেদন উপস্থাপন অনুষ্ঠানে এ তথ্য তুলে ধরা হয়।

প্রতিবেদনটি উপস্থাপন করেন সেন্টার ফর ক্লাইমেট চেঞ্জ অ্যান্ড এনভায়রনমেন্টাল রিসার্চ এর ওয়াটার রিসোর্চ ম্যানেজমেন্ট স্পেশালিস্ট প্রবাল সাহা। ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের আওতাধীন ‘সেন্টার ফর ক্লাইমেট চেঞ্জ অ্যান্ড এনভায়রনমেন্টাল রিসার্চ’ নামের গবেষণা প্রতিষ্ঠান ‘হাওরবাসীর জীবন-জীবিকা’ শীর্ষক এই গবেষণা পরিচালনা করে।

অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে পানিসম্পদ মন্ত্রী আনোয়ার হোসেন মঞ্জু বলেন, ‘হাওরে অনেকগুলো সমস্যা এক সঙ্গে বিরাজমান থাকে। তাই আমাদের অগ্রাধিকার ভিত্তিতে বিষয়গুলো চিন্তা করতে হবে এবং সেভাবে পরিকল্পনা করে কাজ করতে হবে।’

তিনি বলেন, ‘হাওরের সমস্যা এত জটিল যে চাইলে আমরা সব সমস্যা একসঙ্গে সমাধান করতে পারব না।  সব নদীর ভাঙন আমরা রোধ করতে পারব না। আবার চাইলেও সব নদীর খনন আমরা করতে পারব না। কারণ, আমাদের সম্পদের সীমাবদ্ধতা আছে।’

সম্মিলিতভাবে কাজ করার আহ্বান জানিয়ে মন্ত্রী বলেন, ‘জেলা, ইউনিয়ন পরিষদসহ সর্বস্তরে আমরা সবাই ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করলে আমাদের জিডিপি প্রবৃদ্ধি ১০ গুণ বেশি হতে পারত। আর অপচয় যেটাকে অনেকে দুর্নীতি হিসেবে অভিহিত করে থাকেন তা বন্ধ করা সম্ভব হলে জিডিপি প্রবৃদ্ধি ২ শতাংশ বেশি হতো।’

গত বছর আকস্মিক বন্যায় হাওরবাসীর জীবন-জীবিকা ও আয়ের ওপর নেতিবাচক প্রভাব পড়ে। তাদের সামগ্রিক উন্নয়নে যুক্তরাজ্যের দাতা সংস্থা ইউকেএইড-এর অর্থায়নে ও ইউনাইটেড ন্যাশন্স অফিস ফর প্রজেক্ট সার্ভিসেস (ইউএনওপিএস)-এর ব্যবস্থাপনায় ‘ফ্ল্যাশ ফ্লাড রিকভারি প্রজেক্ট’ (এফএফআরপি) গ্রহণ করা হয়। প্রকল্পটি যৌথভাবে বাস্তবায়ন করছে ব্র্যাক, সেভ দি চিলড্রেন ইন্টারন্যাশনাল এবং ওয়ার্ল্ড ভিশন। এ পরিস্থিতিতে হাওরবাসীর উন্নয়নে করণীয় নিরূপণে এ গবেষণা পরিচালিত হয়।

চলতি বছরের ৭ ফ্রেব্রুয়ারি থেকে ১৫ই মার্চ পর্যন্ত সুনামগঞ্জের তাহিরপুর উপজেলায় চারটি, দিরাই উপজেলায় তিনটি এবং কিশোরগঞ্জের ইটনা উপজেলায় দুটি কমিউনিটির মধ্যে জরিপ পরিচালিত হয়।

গুণগতভিত্তিতে পরিচালিত জরিপে কমিউনিটির মোট ১২৬ জন মানুষ ও স্থানীয় সরকারের নয়জন অংশ নেন। এর অধিকাংশই হাওরবাসীর উন্নয়নে জরুরি করণীয় হিসেবে বিকল্প কর্মসংস্থানের ওপর বিশেষ জোর দেন। এজন্য তারা ক্ষুদ্র  ও মাঝারি শিল্প কারখানা স্থাপন, সেলাই মেশিনসহ বিভিন্ন উপকরণ প্রদানের মাধ্যমে নারী উদ্যোক্তা তৈরিতে সহায়তার দাবি জানান। এ ছাড়া উৎপাদিত কৃষিজ পণ্য বিক্রি না হওয়ার জন্য ‘ত্রুটিপূর্ণ বাজার ব্যবস্থাপনাকে’ বড় সমস্যা হিসেবে তারা চিহ্নিত করেন।

গবেষণায় যেসব সুপারিশ করা হয় তার মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো- হাওরবাসীর সমস্যা মোকাবিলায় স্বল্প সুদে ব্যাংক ঋণের ব্যবস্থা, বাঁধ নির্মাণ ও সংস্কারের উদ্যোগ নেওয়া, দীর্ঘমেয়াদি কৃষিজ পরিকল্পনা, আপদকালে জলমহাল উন্মুক্তকরণ, দুর্যোগপূর্ণ আবহাওয়ার আগাম সতর্কতার জন্য কারিগরি উন্নয়ন ঘটানো।

বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা ব্র্যাক, সেভ দ্য চিলড্রেন এবং ওয়ার্ল্ড ভিশনের যৌথ আয়োজনে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন অর্থ ও পরিকল্পনা প্রতিমন্ত্রী মুহাম্মদ আব্দুল মান্নান, ব্র্যাকের পরিচালক কেএএম মোর্শেদ, পানি সম্পদ মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব ড. জাফর আহমেদ খান, সেভ দ্য চিলড্রেন- এর ডেপুটি কান্ট্রি ডিরেক্টর ইশতিয়াক মান্নান, ব্র্যাকের সমন্বিত উন্নয়ন কর্মসূচির প্রধান শ্যাম সুন্দর, ওয়ার্ল্ড ভিশন-এর হিউম্যানেটেরিয়ান অ্যান্ড ইমার্জেন্সি অ্যাফেয়ার্স এর পরিচালক ডোলন যোসেফ গোমেজ প্রমুখ।



রাইজিংবিডি/ ঢাকা/১৪ মার্চ ২০১৮/হাসিবুল/সাইফুল

রাইজিংবিডি.কম

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়