ঢাকা     মঙ্গলবার   ১৬ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ৩ ১৪৩১

ফেসবুকে পরিচয়, বিয়ে অতঃপর...

রেজাউল করিম || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১২:২৬, ২০ ফেব্রুয়ারি ২০১৯   আপডেট: ০৫:২২, ৩১ আগস্ট ২০২০
ফেসবুকে পরিচয়, বিয়ে অতঃপর...

নিজস্ব প্রতিবেদক, চট্টগ্রাম : ফেসবুকের মাধ্যমে পরিচয়, বন্ধুত্ব থেকে প্রেম এবং বিয়ে। সবশেষে সেই স্বামীকে ঘুমন্ত অবস্থায় গলা কেটে হত্যা করা হয়। এর সব কিছুই ঘটেছে মাত্র এক বছরের মধ্যে।

চট্টগ্রামে শামীম নামে এক ব্যক্তির হত্যার রহস্য উন্মোচন করতে গিয়ে বগুড়া থেকে শামীমের দ্বিতীয় স্ত্রী আশা আক্তারকে গ্রেপ্তারের পর চাঞ্চল্যকর তথ্য জানতে পেরেছে পুলিশ।

বুধবার দুপুরে চট্টগ্রাম নগর পুলিশের সম্মেলন কক্ষে সংবাদ সম্মেলনে বাবুর্চি শামীম হত্যা রহস্যের বিস্তারিত জানান নগর পুলিশের অতিরিক্ত কমিশনার (ট্রাফিক) কুসুম দেওয়ান। গত ১৬ ফেব্রুয়ারি নগরীর পাহাড়তলী থানা এলাকার বাসা থেকে অজ্ঞাত হিসেবে শামীমের মৃতদেহ উদ্ধার করে পাহাড়তলী থানা পুলিশ।

সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, মাত্র এক বছর পূর্বে বগুড়ার বায়িং হাউজের কর্মচারী আশা আক্তারের (২৩) সঙ্গে ফেসবুকের মাধ্যমে পরিচয় হয় পেশায় বাবুর্চি শামীমের। ফেসবুকের পরিচয় ও কথোপকথনের সূত্র ধরে তাদের মধ্যে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। পরে তারা বিয়ে করেন। বিয়ের পর আশা বগুড়ায় বসবাস করলেও শামীম বসবাস করতেন চট্টগ্রামের পাহাড়তলী থানা এলাকার ভাড়া বাসায়। কাজের ফাঁকে বগুড়ায় দ্বিতীয় স্ত্রীর কাছে আসা যাওয়ার মধ্যে ছিলেন শামীম।

বিয়ের কিছুদিন পর আশা আক্তার জানতে পারেন, ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় বাবুর্চি শামীমের আগের স্ত্রী রয়েছে এবং সেই ঘরে তার দুটি সন্তান রয়েছে। এ নিয়ে তাদের মধ্যে পারিবারিক বিরোধ সৃষ্টি হয়। এ ছাড়া শামীমের সঙ্গে আরো নারীর সম্পর্ক রয়েছে বলে আশা সন্দেহ করতে থাকে। এই বিরোধ ও সন্দেহের বশবতী হয়ে আশা স্বামী শামীমকে হত্যার সিদ্ধান্ত নেয়।

গ্রেপ্তারের পর পুলিশের কাছে স্বীকারোক্তি দিয়ে আশা জানিয়েছে, হত্যার দুই দিন আগে আশা তার স্বামী শামীমকে বগুড়ায় ডেকে নেন। এরপর স্বামীকে সঙ্গে নিয়েই বাসার প্রয়োজনীয়তার কথা বলে স্থানীয় রেললাইন সংলগ্ন খোলা মার্কেট থেকে ধারালো ছুরি কেনেন। ১৫ ফেব্রুয়ারি রাতে তারা দুইজনই বগুড়া থেকে চট্টগ্রামে এসে নিজেদের ভাড়া বাসায় উঠেন। ১৬ ফেব্রুয়ারি ভোরে ক্লান্ত শামীম ঘুমিয়ে পড়েন। আশা সঙ্গে নিয়ে আসা ধারালো ছুরি দিয়ে ঘুমন্ত অবস্থায় শামীমকে গলা কেটে হত্যা করেন। এরপর বাসায় তালা দিয়ে আবার বগুড়া চলে যান।

ঘটনার পর স্থানীয়দের মাধ্যমে খবর পেয়ে পাহাড়তলী থানা পুলিশ স্থানীয় আব্দুল আলী নগর এলাকার বাসা থেকে শামীমের লাশ উদ্ধার করে। একদিন পর শামীমের পরিচয় সনাক্ত হওয়ার পর পুলিশ জানতে পারে ঘটনার পর নিহতের স্ত্রী আশা আক্তার পলাতক রয়েছে। পরে গোপন সূত্রে প্রাপ্ত তথ্যের ভিত্তিতে মঙ্গলবার বগুড়ার বহুমাত্রা বায়িং হাউজের কর্মস্থল থেকে আশাকে গ্রেপ্তার করতে সক্ষম হয় পুলিশ। গ্রেপ্তারের পর আশাকে নিয়ে আসা হয় চট্টগ্রামে।



রাইজিংবিডি/চট্টগ্রাম/২০ ফেব্রুয়ারি ২০১৯/রেজাউল/বকুল

রাইজিংবিডি.কম

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়