শিগগিরই চালু হচ্ছে ঠাকুরগাঁও ডুয়েলগেজ রেললাইন
তানভীর হাসান তানু || রাইজিংবিডি.কম
রেল লাইনের একটি চিত্র
ঠাকুরগাঁও প্রতিনিধি : শিগগিরই চালু হচ্ছে ঠাকুরগাঁও-ঢাকা ডুয়েলগেজ রেললাইন। জনসংখ্যার অব্যাহত চাপ ও যানজট নিরসনে চার লেনে উন্নীত করা হচ্ছে ঢাকা-ঠাকুরগাঁও রেলপথ।
ঢাকা-ঠাকুরগাঁও সেকশনে বর্তমান মিটারগেজ রেললাইনের সমান্তরালে নতুন এ ডুয়েলগেজ রেললাইন নির্মাণ কাজ ৭০ ভাগ সম্পন্ন করা হয়েছে।
জানা যায়, ৯৮২ কোটি টাকা ব্যয়ে রেল মন্ত্রণালয়ের আওতায় ২০১০ সালের অক্টোবরে ঠাকুরগাঁওয়ের মিটারগেজ রেলপথকে আধুনিকায়ন ও ডুয়েলগেজে রূপান্তরিত করতে তমা কনস্ট্রাকশন ও ম্যাক্স কনস্ট্রাকশন নামে দুটি ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান কাজ শুরু করে। দিনাজপুর জেলার পার্বতীপুর থেকে ঠাকুরগাঁও হয়ে পঞ্চগড় পর্যন্ত ১৫০ কিলোমিটারের এ রেললাইনের নির্মাণ কাজ করা হয়।
দুবার নির্মাণকাজের মেয়াদ বাড়িয়ে আগামী বছরের (২০১৬ সাল) সেপ্টেম্বর মাসের মধ্যে কাজ শেষ হওয়ার কথা থাকলেও, ২০১৫ সালের মার্চ মাসে প্রায় ৭০ ভাগ কাজ শেষ হয়।
এদিকে ডুয়েলগেজের নির্মাণ শেষ হওয়ার পরেও ট্রেন চালু না হওয়ায়, রেলপথে মালপত্র পরিবহণসহ যাত্রীরা চরম দুর্ভোগের পাশাপাশি নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন।
ঠাকুরগাঁও রেল স্টেশন অফিসার মজনুর রহমান জানান, কাজের শুরুটা ভালো ছিল। তবুও নির্ধারিত সময়ের অতিরিক্ত সময় দিয়ে ডুয়েলগেজের কাজ শেষ হয়েছে। কিছু সংখ্যক ব্রিজের কাজ শেষ হলেই এই এলাকায় মানুষের দীর্ঘদিনের প্রত্যাশা পূরণ হবে।
এই রেল চালু হলে একদিকে রেলপথে যাত্রীরা নিরাপদে চলাচলের পাশাপাশি উত্তরাঞ্চলের কৃষিপণ্য বিপণনসহ ব্যবসায়ীরা বাণিজ্যিকভাবে লাভবান হবেন।
স্থানীয়রা জানান, দীর্ঘ দিনের পর ডুয়েলগেজের কাজ শেষ হচ্ছে। কবে নাগাদ রেল চালু হবে এ নিয়ে আমরা সংশয়ে আছেন। ট্রেন চালু হলে তারা সরাসরি ঢাকা-খুলনা যেতে পারবেন। এতে ঠাকুরগাঁও ও পঞ্চগড়বাসী চলাচলে সুবিধা ভোগ করতে পারবেন।
ঠাকুরগাঁও চেম্বার অব কর্মাসের সভাপতি হাবিবুল ইসলাম বাবলু জানান, ঠাকুরগাঁও কৃষি ভিত্তিক এলাকা। এই এলাকার প্রচুর পরিমাণ ধান, গম, সবজি উৎপাদন হয়। সঠিক সময়ে যানবাহন না পাওয়ায় এইসব পণ্য জেলার বাইরে পাঠানো সম্ভব হচ্ছে না। এই দ্রুতগামী ট্রেন চালু হলে ঠাকুরগাঁওয়ের কৃষি বিপ্লব ঘটবে।
রেলচালক মনসুর আলম জানান, ডুয়েলগেজ ট্রেন চালু হলে এই এলাকার মানুষের যাতায়াতের সুবিধা হবে। খুব কম সময়ে ঢাকা, চট্রগ্রাম পৌঁছা যাবে।
তমা কনস্ট্রাকশনের ফিল্ড সুপারভাইজার তরিকুল ইসলাম বেলাল বলেন, ‘আমরা আমাদের সুবিধামতো কাজ করে যাচ্ছি। এখন পর্যন্ত ৭০ ভাগ কাজ হয়ে গেছে। কিছু সংখ্যক ব্রিজের কাজ শেষ হলেই ডুয়েলগেজ ট্রেন চালু করা সম্ভব হবে। আশা করছি, সঠিক সময়ের মধ্যে কাজ শেষ হবে।’
স্টেশন মাস্টার মজনুর রহমান বলেন, ‘রেল লাইনের কাজ শেষের দিকে। কিন্তু আমাদের তীব্র জনবল সংকট। পঞ্চগড় থেকে দিনাজপুর পার্বতীপুর পর্যন্ত মোট ১৯ টি রেল স্টেশন আছে। তার মধ্যে ১২ টি স্টেশন লোকবল সংকটে বন্ধ আছে।’
উল্লেখ্য, এখন পার্বতীপুর থেকে ঠাকুরগাঁও ও পঞ্চগড় ডেমু ট্রেন চলাচল করছে। এছাড়াও পঞ্চগড় থেকে বগুড়া সান্তাহার পর্যন্ত রেল চলাচল করছে। পঞ্চগড় থেকে দিনাজপুর পার্বতীপুর পর্যন্ত নয়ানিবুজ, কিশমত, রুহিয়া, আখানগড়, শিবগঞ্জ, ভোমরাদহ, সুলতানপুর, শেতাবগঞ্জ, মঙ্গলপুর, বাজনাহার, কাউনিয়া, মোহাম্মপুর স্টেশনগুলোতে কোন স্টেশন মাস্টার নেই। এতে স্টেশনগুলো বন্ধ রয়েছে।
রাইজিংবিডি/ঠাকুরগাঁও/২২ আগস্ট ২০১৫/তানভীর হাসান তানু/রুহুল
রাইজিংবিডি.কম
আরো পড়ুন