ঢাকা     শুক্রবার   ১৯ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ৬ ১৪৩১

শাকিবের ক্যারিয়ার বাঁচাতে বিয়ের কথা লুকিয়েছিলাম : অপু বিশ্বাস

অপু বিশ্বাস || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ০২:২২, ৩০ জুন ২০১৭   আপডেট: ০৫:২২, ৩১ আগস্ট ২০২০
শাকিবের ক্যারিয়ার বাঁচাতে বিয়ের কথা লুকিয়েছিলাম : অপু বিশ্বাস

নাচের সঙ্গে তার প্রথম প্রেম। সেই প্রেমের প্রথম প্রাপ্তি সিনেমায় অভিনয়ের সুযোগ। ২০০৫ সাল। মুক্তি পেল আমজাদ হোসেনের ‘কাল সকালে’। কিন্তু  নায়িকাখ্যাতি এ সিনেমায় পেলেন না। বছর ঘুরতেই মুক্তি পেল ‘কোটি টাকার কাবিন’। তার বিপরীতে নায়ক শাকিব খান। ব্যস, এই এক সিনেমাতেই খুলে গেল সিসেম দুয়ার। চলচ্চিত্রে তখন ক্রান্তিকাল। সেই কালে একের পর পর ব্যবসাসফল সিনেমায় অভিনয় করে রাতারাতি দর্শক মনে জায়গা করে নিলেন তিনি। মান্না, নিরব, ইমন, অমিত, মারুফ, সম্রাটের বিপরীতে অভিনয় করলেও জুটি গড়ে উঠল একজনের সঙ্গেই। তিনি শাকিব খান। পর্দার ন্যায় অপু বিশ্বাসের ব্যক্তি জীবনের নায়কও এখন শাকিব খান। এই দম্পতি বিয়ের সংবাদ গোপন রেখেছিলেন দীর্ঘ আট বছর। প্রেম, ধর্মান্তরিত হওয়া, বিয়ে, মাতৃত্বের স্বাদ, সংসারের হাঁড়ির খবর নিয়ে অপু বিশ্বাসের বয়ানে রাহাত সাইফুলের অনুলিখনে পড়ুন এই আয়োজনের শেষ কিস্তি।

প্রথম পর্ব পড়ুন :  ‘পুরোহিত শাকিবকে বললেন, তুমি অপুকে সিঁদুর পরিয়ে দাও’

দ্বিতীয় পর্ব পড়ুন : 

তৃতীয় পর্ব পড়ুন :  ‘শাকিব আমাকে ধর্ম চেঞ্জ করার জন্য প্রেসার দেয়নি’

আমাদের বিয়ে নিয়ে লুকোচুরির কারণ হলো, আমি শাকিবের ক্যারিয়ার ধরে রাখতে চেয়েছি। আমার বিশ্বাস ছিলো আমি শাকিবকে সাপোর্ট করলে আমার প্রতি শাকিবের ভালোবাসা আরো বৃদ্ধি পাবে। প্রত্যেকটা মেয়ে স্বামীকে ভালো অবস্থানে দেখতে চায়। আমিও এর ব্যতিক্রম নই। আমি চাইনি, আমি মা হচ্ছি এটা চলচ্চিত্রের কেউ জানুক। এ কারণেই আমি বিষয়টি নিয়ে লুকোচুরি করেছি।

একবার ‘কথা দাও সাথী হবে’ সিনেমার শুটিং সেটে আমি এক রুমে আর শাকিব অন্য রুমে মেকআপ নিচ্ছিলাম। তখন একটা কাজের জন্য শাকিবকে বেশ কয়েকবার ফোন করলাম, কিন্তু ও রিসিভ করল না। আমার ভীষণ রাগ হলো। গিয়ে সরাসরি বললাম, বিয়ে করতে পারো আর ফোন রিসিভ করতে পারো না। এই কথাটা সিনেমার প্রযোজক শফি ভাই শুনে ফেলেছিলেন। যাই হোক, বিষয়টি বেশি মানুষ জানত না। ২০১৬ সালের থার্টি ফার্স্ট আমরা একসঙ্গে ব্যাংককে কাটিয়েছি। আমার মনে হয় আমার বেবি তখনই কনসিভ করেছে। শাকিব চাচ্ছিলো না বেবিটা রাখি। ওর ইচ্ছার বিরুদ্ধেই বেবিটা আমি রেখেছি। কারণ ডাক্তার আমাকে বলে দিয়েছিলো, বেবিটা নষ্ট করলে আমি আর মা হতে পারবো না।

আমার কাছে মনে হয়েছে, আমার সন্তান ধীরে ধীরে বড় হচ্ছে। আমি চাইনি তার মানসিকতায় কোনো চাপ পড়ুক। বড় হয়ে সে যেন বুঝতে না পারে, তার বাবা-মা বাংলাদেশের বড় তারকা; তার জন্য আমরা সাফার করেছি। এখন আমি আমার সন্তানকে বড় গলায় বলতে পারবো- তুমি সেই সন্তান যাকে নিয়ে একটা সময় অনেক আলোচনা হয়েছে। আমি যাদের সঙ্গে কাজ করেছি, তোমার বাবা যাদের সঙ্গে কাজ করেছে তাদের প্রত্যেকের কোলে তোমার ছবি রয়েছে। আমার ছেলে অবশ্যই জানবে যে, আমরা বিয়ে করে আট বছর লুকিয়ে ছিলাম। কিন্তু এটা তো ঠিক, আমি ছেলেকে বলতে পারবো, বাবা, আমি তোমাকে লুকাইনি।

আমি বিষয়গুলো শাকিবকে জানিয়েছি। ও কেয়ার করেনি। শাকিবকে আমি জানাতে বলেছি। সে আমার কথা শোনেনি। তাই মিডিয়ার সামনে হঠাৎ আসতে বাধ্য হয়েছি। অনেক কষ্ট করে বাবুকে আমি বাংলাদেশে এনেছি। কারণ শাকিব সঙ্গে ছিলো না, বাবুর পাসপোর্ট ছিলো না। তাই প্রশাসনিক লেভেল থেকে অনেক কষ্ট করে ছাড়পত্র সংগ্রহ করতে হয়েছে। শুধু মানবিক কারণেই কলকাতার ওরা আমাকে ছেড়ে দিয়েছে। কিন্তু বাংলাদেশে এসে আটকে গেলাম। কাস্টমসের ওরা আমাকে কোনোভাবেই ছাড়বে না। আল্লাহর অশেষ রহমতে সেই ঝামেলা থেকে মুক্ত হতে পেরেছিলাম সেদিন।

সংসার নিয়ে সবারই স্বপ্ন থাকে। আমারও আছে। কিন্তু সব পরিকল্পনা করে হয় না। আমি চাই আমার ছেলে মানুষের মতো মানুষ হোক। আমি যা করতে পারিনি ও তা করে দেখাবে। আমার ইচ্ছে ও সর্বোচ্চ শিক্ষায় শিক্ষিত হোক। আমি দেখবো আমার বাচ্চার কোন দিকটা ভালো। সেই দিকটাতেই আমি ওকে উৎসাহ দেব। আমরা যেহেতু মিডিয়ার লোক সুতরাং আমি চাই না, ও বড় হয়ে মিডিয়ায় কাজ করুক। তারপরও রক্তের টানে সে যদি মিডিয়াতে কাজ করতে চায় তাহলে বারণ করবো না। তখন সাপোর্ট দেব। আমি মনে করি, আমার সংসার হলো সিনেমার সংসার। অর্থাৎ সংসারটাই সিনেমা। সুতরাং এই সিনেমার সংসার নিয়েই সামনের দিনগুলো কাটাতে চাই।



রাইজিংবিডি/ঢাকা/৩০ জুন ২০১৭/তারা

রাইজিংবিডি.কম

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়