ঢাকা     শনিবার   ২০ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ৭ ১৪৩১

জন্মদিন পালন করেন না ফারুক

রাহাত সাইফুল || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ০২:১৩, ১৮ আগস্ট ২০১৭   আপডেট: ০৫:২২, ৩১ আগস্ট ২০২০
জন্মদিন পালন করেন না ফারুক

চিত্রনায়ক ফারুক

রাহাত সাইফুল : ঢাকাই চলচ্চিত্রের জীবন্ত কিংবদন্তি অভিনেতা ফারুক। ‘মিয়া ভাই’খ্যাত এ অভিনেতার পুরো নাম আকবর হোসেন পাঠান দুলু। ১৯৪৮ সালের ১৮ আগস্ট গাজীপুর জেলার কালীগঞ্জ উপজেলার তুমলিয়া ইউনিয়নের দক্ষিণসোম গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন তিনি। আজ তার ৭০তম জন্মদিন। রাইজিংবিডি পরিবারের পক্ষ থেকে এ অভিনেতাকে জন্মদিনের শুভেচ্ছা।

শৈশব-কৈশোর ও যৌবনে তার দুরন্তপনার সময়টা কেটেছে গ্রামের বাড়ি ও পুরান ঢাকায়। তার বাবা আজগর হোসেন পাঠান গান-বাজনা-সিনেমা পছন্দ করতেন না। বলতে গেলে এক প্রকার বাবার অবাধ্য হয়েই ফারুক চলচ্চিত্রে প্রবেশ করেন। পাঁচ বোন ও দুই ভাইয়ের মধ্যে তিনি ছিলেন সবচেয়ে ছোট। ব্যক্তি জীবনে ফারুক ভালোবেসে বিয়ে করেন ফারজানা পাঠানকে। তাদের দাম্পত্য জীবনে ফারিহা তাবাসসুম নামের একটি কন্যা ও রওশন হোসেন নামের একটি পুত্র সন্তান রয়েছে। উত্তরায় নিজ বাড়িতে বসবাস করেন তিনি।

চিত্রনায়ক ফারুক জাতির জনক বঙ্গবন্ধুর সান্নিধ্যে থাকার সুযোগ পেয়েছেন। ১৯৭১ সালে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ডাকে সাড়া দিয়ে দেশের স্বাধীনতার জন্য পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর ওপর ঝাঁপিয়ে পড়েন। জাতির পিতার ইচ্ছাতেই তিনি রুপালি জগতে পা রাখেন।

১৯৭১ সালে এইচ আকবর পরিচালিত ‘জলছবি’ সিনেমায় অভিনয়ের মধ্য দিয়ে বাংলা চলচ্চিত্রে ফারুকের অত্মপ্রকাশ হয়। প্রথম সিনেমায় তার বিপরীতে অভিনয় করেন ঢালিউডের ‘মিষ্টি মেয়ে’খ্যাত অভিনেত্রী কবরী। এরপর ১৯৭৩ সালে খান আতাউর রহমানের পরিচালনায় মুক্তিযুদ্ধ ভিত্তিক চলচ্চিত্র  ‘আবার তোরা মানুষ হ’ ও ১৯৭৪ সালে নারায়ণ ঘোষ মিতার ‘আলোর মিছিল’ এ দুটি চলচ্চিত্রে পার্শ্ব চরিত্রে অভিনয় করেন তিনি।

চিত্রনায়ক ফারুক ১৯৭৫ সালে জাতির জনক বঙ্গবন্ধুর প্রয়াণের পর আর কখনোই নিজের জন্মদিন বিশেষভাবে উদযাপন করেননি। এ কারণেই জন্মদিনের এই বিশেষ দিনটি নিয়ে তার কোনো আগ্রহ নেই। বর্তমানে সিঙ্গাপুরে আছেন তিনি। গত ১৬ আগস্ট তিনি সিঙ্গাপুর গিয়েছেন বলে রাইজিংবিডিকে জানান শিল্পী সমিতির সাধারণ সম্পাদক জায়েদ খান।

এ প্রসঙ্গে জায়েদ খান রাইজিংবিডিকে বলেন, ‘ফারুক ভাই ১৯৭৫ সালের পর থেকে কখনোই জন্মদিন ঘটা করে পালন করেননি। জাতির পিতা তাকে খুব আদর করতেন। যে করণেই তিনি আগস্ট মাসে কোনো রকম উৎসব করেন না। এটা শোকের মাস।’

১৯৭৫ সালে ফারুক অভিনীত ‘সুজন সখী’ ও ‘লাঠিয়াল’ সিনেমা দুটি ব্যাপক ব্যবসাসফল হয়। ‘লাঠিয়াল’ সিনেমার জন্য তিনি সেরা পার্শ্ব অভিনেতা হিসেবে জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার পান। ১৯৭৬ সালে ‘সূর্যগ্রহণ’ ও ‘নয়নমনি’, ১৯৭৮ সালে শহীদুল্লাহ কায়সারের উপন্যাস অবলম্বনে নির্মিত আব্দুল্লাহ আল মামুনের ‘সারেং বৌ’, আমজাদ হোসেনের ‘গোলাপী এখন ট্রেনে’সহ বেশকিছু সিনেমায় চিত্রনায়ক ফারুকের অভিনয় প্রশংসিত হয়।

চলচ্চিত্রের বাইরে তিনি একজন সফল ব্যবসায়ী। গাজীপুরে অবস্থিত নিজ শিল্প প্রতিষ্ঠান ফারুক নিটিং ডাইং অ্যান্ড ম্যানুফ্যাকচারিং কোম্পানির ব্যবস্থাপনা পরিচালক তিনি।

দীর্ঘদিন ধরে তাকে চলচ্চিত্রের পর্দায় দেখা যায় না। তবে সম্প্রতি চলচ্চিত্র সংশ্লিষ্ট আন্দোলনে সামনে থেকে নেতৃত্ব দিয়েছেন। তিনি বর্তমানে চলচ্চিত্রের ১৮টি সংগঠনের সমন্বয়ে গঠিত চলচ্চিত্র পরিবারের আহ্বায়ক।




রাইজিংবিডি/ঢাকা/১৮ আগস্ট ২০১৭/রাহাত/মারুফ

রাইজিংবিডি.কম

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়