ঢাকা     শুক্রবার   ১৯ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ৬ ১৪৩১

ভেলাজান ভেলাপুকুরে ভুতুড়ে আগুন!

তানভীর হাসান তানু || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ০৭:০৪, ৩ অক্টোবর ২০১৭   আপডেট: ০৫:২২, ৩১ আগস্ট ২০২০
ভেলাজান ভেলাপুকুরে  ভুতুড়ে আগুন!

ঠাকুরগাঁও প্রতিনিধি : ভেলাজান ভেলাপুকুর একটি গ্রামের নাম।গ্রামটি ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলায়।গ্রামটির সর্বত্রই এখন ভুতুড়ে আগুনের গল্প।হঠাৎ করেই দপ করে জ্বলে উঠছে আগুন! কিভাবে হচ্ছে, কে করছে -কেউ জানেনা।

আর এই আগুন কাণ্ডে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে পুরো ভেলাজান ভেলাপুকুর গ্রামে। এ গ্রামের বাসিন্দা সত্তর বছর বয়সের হাজী ইউনুস আলী বললেন, ‘হঠাৎ রবিবার বিকালে আমার রুমে আগুন জ্বলে উঠে। পরে পরিবারের লোকজন পানি দিয়ে আগুন নেভাতে সক্ষম হয়। এতে আমার পাঞ্জাবিসহ কয়েকটি কাপড় চোপড় আশিংক পুড়ে যায়।’

হঠাৎ এই অগ্নিকাণ্ডে ইউনুস আলীর পরিবারে আতঙ্ক বিরাজ করছে। এ ঘটনার ঘন্টাখানেক পরে ওই এলাকার তিনটি বাড়িতে ঘরের ভেতরে আগুন জ্বলে ওঠার কাণ্ড ঘটেছে বলে  জানান তিনি।

আগুনের খবরে ওই গ্রামে গেলে দেখা যায়, হঠাৎ ভুতুড়ে আগুনে পুরো এলাকাতেই ছড়িয়ে পড়েছে আতঙ্ক। আক্রান্ত পরিবারগুলো একে ‘অলৌকিক আগুন’ আগুন বলে অভিহিত করছেন।আর আগুন লাগছে জামা-কাপড়েই।
সবারই এক কথা -কিভাবে হচ্ছে, কে করছে, এ যেন ধরা ছোঁয়ার বাইরে। আক্রান্ত পরিবারের নারী, পুরুষ, পুত্র, কন্যা সবাই বাড়িঘর পাহারা দিচ্ছে। কখন কোথায় আগুন জ্বলে ওঠে তা নেভাতে সকলকে সতর্ক অবস্থায় থাকতে দেখা গেছে।

তিনটি বাড়ির ঘরের কাপড়-চোপড়, বিছানা, পাঞ্জাবিসহ কাপড়ের আংশিক পুড়ে গেছে। সেই কাপড়গুলি বাইরে আঙ্গিনায় ছড়িয়ে ছিটিয়ে ফেলে রাখা হয়েছে। যে কাপড়গুলো ভাল রয়েছে তা পুড়ে যাওয়ার ভয়ে পানিতে ডুবিয়ে রাখা হয়েছে।

ইউনুস আলী বলেন,  ‘এই ঈদের পরে আমার ও ভাতিজার বাড়িতে হঠাৎ দু’একটা করে ইট, পাথর নিক্ষেপ করা হয়েছিল। গত ১৫ দিন আগেও একটি ইটের টুকরো আমার বউমার সামনে পড়ে। বউমা আবার সেই ইটের টুকরোটি পাল্টা ছুড়ে মারে। এর কিছুক্ষণ পরে সে (বউমা) অজ্ঞান হয়ে যায়। পরে এক কবিরাজকে ডেকে আনলে জিন ভর করেছে বলে জানান। ঝাড়ফুঁক করলে সুস্থ হয়ে উঠেন বউমা। ’

ইউনুস আলী বলেন,  ‘শনিবার বিকেল ৫টায় আমার নাতি সিদ্দিকুরের বাড়িতে হঠাৎ ঘরের কাপড়ে আগুন ধরে। লোকজন টের পেলে পানি দিয়ে আগুন নিভিয়ে ফেলে। ঠিক একই ভাবে আমার ভাতিজার বাড়ির ঘরে রবিবার দুপুরে কাপড়-চোপড়ে আগুন ধরে যায়। আবার নিভিয়ে ফেলে তারা। তখন বাড়ির কাপড় চোপড় সব বাড়ির বাইরে রেখে দেওয়া হয়। তারপরেও সেই কাপড় গুলোতে হঠাৎ আগুন ধরে আংশিক জ্বলে উঠছে আবার নিভেও যাচ্ছে। এর ঘন্টা খানেক পর আর এক নাতির বাড়িতে কাপড়-চোপড় ও আসবাপত্রে আগুন ধরেছে শুনে দেখতে যাই। এরপর শুনি আমার বাড়িতেও আগুন ধরেছে। সবাই ছুটে এসে আগুন নিয়ন্ত্রনের আনি। সবকিছুই অদৃশ্য। বিষয়টি নিয়ে আমরা আতঙ্কিত।

এই গ্রামের নাজিম উদ্দিন বলেন, ‘আগুনের ভয়ে ঘরে যেতেই ভয় লাগছে। এই অদৃশ্য আগুনের ঘটনাটির কারণ আমরা কেউ বের করতে পারছি না।’

ঠাকুরগাঁও ফায়ার সার্ভিসের উপ-পরিচালক আনিসুর রহমানের কাছে ভেলাজান ভেলাপুকুর এলাকার আগুনের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘কেউ ওই এলাকায় আগুনের বিষয়ে আমাদের অবগত করেনি।’

 

 

রাইজিংবিডি/ঠাকুরগাঁও/৩ অক্টোবর ২০১৭/তানভীর হাসান তানু/টিপু

রাইজিংবিডি.কম

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়