ঢাকা     শনিবার   ২০ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ৭ ১৪৩১

খান আতাকে নিয়ে হাসান ইমামের বক্তব্য

রাহাত সাইফুল || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ০৭:১২, ১৬ অক্টোবর ২০১৭   আপডেট: ০৫:২২, ৩১ আগস্ট ২০২০
খান আতাকে নিয়ে হাসান ইমামের বক্তব্য

রাহাত সাইফুল: খ্যাতিমান অভিনেতা, পরিচালক, প্রযোজক, সংগীত পরিচালক, গায়ক ও গীতিকার খান আতাউর রহমান। ঘাতক নির্মূল কমিটি থেকে প্রকাশিত বইয়ে ঘাতক দালালের তালিকায় খান আতাউর রহমানের নাম রয়েছে। মুক্তিযুদ্ধ চলাকালীন তিনি পাকিস্তানের পক্ষপাতিত্ব করেছেন বলে কেউ কেউ অভিযোগ করেছেন।    

সম্প্রতি নিউ ইয়র্কের একটি অনুষ্ঠানে নাট্যজন ও মুক্তিযোদ্ধা নাসিরউদ্দিন ইউসুফ বাচ্চু এই নির্মাতাকে ‘রাজাকার’ বলে মন্তব্য করেন। তার বক্তবের ভিডিওটি ইতোমধ্যে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমসহ বিভিন্ন মহলে ছড়িয়ে পরেছে। বিষয়টি সম্পর্কে জানতে রাইজিংবিডির এ প্রতিবেদক কথা বলেন মুক্তিযোদ্ধা ও সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব সৈয়দ হাসান ইমামের সঙ্গে। বক্তব্যের শুরুতেই হাসান ইমাম বলেন, ‘খান আতা পাকিস্তানের পক্ষ নিয়েছিলেন।’

এ প্রসঙ্গে বিস্তারিত তার কাছ থেকে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘‘২৫শে মার্চের পর দশ হাজার মানুষকে হত্যা করেছিলো পাকিস্তানিরা। ২৬শে মার্চ যখন ঢাকার রাস্তার মানুষের রক্ত শুকায়নি তখন টেলিভিশন বন্ধ ছিল। ২৫শে মার্চ পর্যন্ত আমরা ভিক্ষুব্ধ শিল্পী সমাজ টেলিভিশন চালাচ্ছিলাম। ২৭ মার্চ যখন প্রথম টেলিভিশন খুললাম তখন আমরা বিস্ময়ের সঙ্গে দেখলাম, খান আতা একটা গান লিখে নিয়ে গেছেন। গানটি ছিলো ‘সাদায় সবুজ আমার পাকিস্তানি পতাকা’। বাচ্চাদের তিনি গানটি শিখিয়েছিলেন। পরে শুনলাম আর্মিদের জিপে করে বাচ্চাদের তুলে আনা হয়েছিলো। এরপর তিনি আমাদের শিল্পীদের ধরে ধরে টেলিভিশনে নিয়ে যান। ১৬ই ডিসেম্বর দেশ স্বাধীন হওয়ার পর খান আতা তার বোনের বাড়িতে চিলেকোঠায় লুকিয়ে ছিলেন।

খান আতার একজন সহকারী ছিলো আমীর আলী। ২২ তারিখ আমি যখন মুক্তিযুদ্ধ শেষে দেশে ফিরলাম তখন আমীর আলী একটা মোটরসাইকেল নিয়ে এসে আমাকে বলে, আতা ভাই আপনার খোঁজ করছেন, আপনি চলেন। আমি ওর সঙ্গে গিয়ে দেখি, ফুলবাড়ীযার একটি চিলেকোঠায় দরজা লাগিয়ে বসে আছেন আতা ভাই। আমরা যাওয়ার পরে তিনি বললেন, তুমি আমার সর্ম্পকে কিছু বলছো না কেন? তোমরা মুক্তিযোদ্ধা। এখন কত কাজ করার আছে। আমি তাকে বললাম, আপনি এখন বের হবেন না। বের হলে কেউ আপনাকে বাঁচাতে পারবে না। কারণ মানুষের অনেক ঘৃণা জন্মেছে আপনার ওপর। তারপর প্রায় চারমাস লুকিয়ে থেকে পরিস্থিতি যখন ঠান্ডা হয় তখন তিনি বের হন।’’

হাসান ইমাম আরো বলেন, ‘১৫ আগস্ট যখন বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করা হয় তখন তিনি কাকরাইল মোড়ে শ্যাম্পেইন খুলে সেলিব্রেট করেন। সেদিন  ১১:৩০টার দিকে রেডিওতে তিনি একটি গান নিয়ে যান- ‘আঁধারের সীমানা পেড়িয়ে আজ এসেছি সীমানায়’। গানটি শিল্পীদের দিয়ে রেকর্ডিং করিয়ে রেডিওতে প্রচার করা হয়েছিলো। পাকিস্তানের সঙ্গে কোলাবরেট করেছেন কারা এই তালিকায় খান আতার নাম এক নাম্বারে।’

 


রাইজিংবিডি/ঢাকা/১৬ অক্টোবর ২০১৭/রাহাত/তারা

রাইজিংবিডি.কম

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়