ঢাকা     বুধবার   ১৭ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ৪ ১৪৩১

বিএনপির প্রস্তাব অযৌক্তিক ও সংবিধান পরিপন্থি : ইনু

মোহাম্মদ নঈমুদ্দীন || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ০৬:৪১, ১৭ অক্টোবর ২০১৭   আপডেট: ০৫:২২, ৩১ আগস্ট ২০২০
বিএনপির প্রস্তাব অযৌক্তিক ও সংবিধান পরিপন্থি : ইনু

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক : নির্বাচন কমিশনে (ইসি) বিএনপি যে ২০ দফা প্রস্তাব দিয়েছে সেগুলোকে ‘অযৌক্তিক’ ও ‘সংবিধান পরিপন্থি’ বলে মন্তব্য করেছেন তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনু।

তিনি বলেছেন, ‘নির্বাচন কমিশনে (ইসি) দেওয়া বিএনপির ২০ দফা প্রস্তাব অযৌক্তিক, সংবিধান পরিপন্থি ও ইসির এখতিয়ারি বহির্ভূত। আসন্ন নির্বাচনী রোডম্যাপ বাস্তবায়নের নামে তাদের এই প্রস্তাব মূলত নির্বাচনের রোড ব্লক করার প্রস্তাব।’

মঙ্গলবার দুপুরে সচিবালয়ে তথ্য অধিদপ্তরের সম্মেলনকক্ষে অনুষ্ঠিত এক সংবাদ সম্মেলনে তথ্যমন্ত্রী এ কথা বলেন।

বিএনপির প্রস্তাবের জবাব দেওয়ার জন্যই মূলত এই সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়। সংবাদ সম্মেলনে প্রধান তথ্য কর্মকর্তা কামরুন্নাহারসহ অন্যরা উপস্থিত ছিলেন।

মন্ত্রী বলেন, ‘বিএনপি আসন্ন জাতীয় নির্বাচন বাতিলের জন্য এ প্রস্তাবগুলো দিয়েছে। এসব প্রস্তাবনার মধ্যে নির্বাচন কমিশনের আরপিও পরিপন্থি প্রস্তাবও আছে।’

দলের প্রার্থীর বদলে জোটের প্রার্থী করা সংক্রান্ত বিএনপির প্রস্তাবের বিরোধিতা করে তথ্যমন্ত্রী বলেন, ‘এই প্রস্তাবের মাধ্যমে মূলত যুদ্ধাপরাধী জামায়াতকে নির্বাচনে হালাল করার প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে।’

প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) যে বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমানকে ‘বহুদলীয় গণতন্ত্রের প্রতিষ্ঠাতা’ বলেছেন তার প্রেক্ষিতে ইনু নির্বাচন কমিশনের প্রতি আহ্বান জানিয়ে বলেন, ‘আপনারা সাংবিধানিক দায়িত্বে থেকে যার যা দায়িত্ব তা পালন করুন। ইতিহাস চর্চা করবেন না।’

ইনু আরো বলেন, ‘জেনারেল জিয়াউর রহমান গণতন্ত্র নয়, সামরিকতন্ত্রের প্রবক্তা। তিনি (জিয়াউর রহমান) খুন ও খুনিদের হালাল করার কাজ করেছেন এবং দেশে রাজাকার আমদানি ও পুনর্বাসনের কাজ করেছেন। জিয়াউর রহমানের শাসনকাল আদালতের মাধ্যমে অবৈধ ঘোষিত।’

বিএনপির প্রস্তাবের বিরোধিতা করে তথ্যমন্ত্রী বলেন, ‘নির্দলীয় সহায়ক সরকার, সংসদ বাতিল এবং সশস্ত্র বাহিনীকে বিচারিক ক্ষমতা বা ম্যাজিস্ট্রেসি পাওয়ার দেওয়ার কথা বলেছে বিএনপি। কিন্তু নির্দলীয় সহায়ক সরকার সংবিধানের মূল নির্দেশনা কাঠামোর সঙ্গে যায় না।’

‘নির্দলীয় সরকার ও সশস্ত্র বাহিনী মাঠে থাকলে নির্বাচনী ফল বিএনপি মেনে নেবে কি না সেই গ্যারান্টি নেই। কারণ, বিএনপি জিতলে নির্বাচন সঠিক মনে করে, হারলে সেই নির্বাচন গ্রহণ করে না-’ যোগ করেন ইনু।

তিনি বলেন, ‘সশস্ত্র বাহিনীকে বিচারিক ক্ষমতা দেয়ার প্রস্তাব চূড়ান্তভাবে একটি চক্রান্তমূলক প্রস্তাব। এটি সশস্ত্র বাহিনীকে বিতর্কিত করার প্রস্তাব। সশস্ত্র বাহিনীর যে কাজ সেই কাজের বাইরে তাকে ন্যস্ত করার সুগভীর চক্রান্ত ছাড়া কিছু নয়।’

এ প্রসঙ্গে তিনি আরো বলেন, ‘নির্বাচনের সময় ৩০০ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট নিয়োগ দেন হাইকোর্ট। এর বাইরে প্রত্যেকটি নির্বাচনী এলাকায় ন্যূনতম ৪ জন করে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট থাকে। এরপরও সশস্ত্র বাহিনীকে বিচারিক ক্ষমতা দেয়ার প্রস্তাব অযৌক্তিক ও অবান্তর।’

নির্বাচনকালীন সরকারের সময় সংসদ কেন ভেঙে দেয়া হবে না- তার কারণ জানিয়ে তথ্যমন্ত্রী বলেন, ‘যুদ্ধ ঘোষণার এখতিয়ার কিন্তু প্রধানমন্ত্রীর নেই। তখন সংসদকে ডাকতে হয়। নির্বাচনের সময় সংসদ বহাল থাকলেও এর কোনো কাজ নেই, ভূমিকা থাকে না।’

প্রধান বিচারপতির ছুটির বিষয়ে জানতে চাইলে জাসদ সভাপতি বলেন, ‘সংবিধানের এখতিয়ার অনুযায়ী সর্বোচ্চ আদালতের বিচারপতিরা ভূমিকা রাখছেন। প্রধান বিচারপতি স্বেচ্ছায় ছুটিতে গেছেন, স্বেচ্ছায় ফিরবেন এবং দায়িত্ব নেবেন। এখানে সরকারের কিছু করার নেই, সরকারের কোনো হস্তক্ষেপ নেই, সরকারের কোনো পরামর্শ নেই।’

প্রধান বিচারপতির ছুটি নিয়ে ভারতের একটি টেলিভিশন চ্যানেলের প্রচারিত বক্তব্য সম্পর্কে দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে তিনি বলেন, ‘নজরে এসেছে। ইউটিউব, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম এবং বিভিন্ন দেশের টেলিভিশন চ্যানেলে বক্তব্য দিচ্ছে, এর মধ্যে কিছু উস্কানিমূলক বক্তব্য আছে। আমরা এগুলোর প্রতিকারের চেষ্টা করছি।’

বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া গ্রেফতার হলে আগামী নির্বাচনে এর প্রভাব পড়বে কি না জানতে চাইলে মন্ত্রী বলেন, ‘কোনো নেতা-নেত্রী গ্রেফতারের সঙ্গে নির্বাচনের কোনো সম্পর্ক নেই। কোনো দলের নেতা-নেত্রী যদি কোনো অপরাধের সঙ্গে জড়িয়ে পড়েন তবে পুলিশ আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা গ্রহণ করবে।’

‘সরকার নয়, আদালত পয়োয়ানা জারি করেছে, সেই পরোয়ানা বাস্তবায়ন করবে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। কি পদ্ধতিতে করবে সেটা তাদের ব্যাপার’, বলেন ইনু।



রাইজিংবিডি/ঢাকা/১৭ অক্টোবর ২০১৭/নঈমুদ্দীন/আসাদ/সাইফুল/শাহনেওয়াজ 

রাইজিংবিডি.কম

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়