ঢাকা     শনিবার   ২০ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ৭ ১৪৩১

সেলুলয়েডে বন্দি হালদা পাড়ের ঐতিহ্য ও সংস্কৃতি

রেজাউল করিম || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ০৯:৪৩, ১ ডিসেম্বর ২০১৭   আপডেট: ০৫:২২, ৩১ আগস্ট ২০২০
সেলুলয়েডে বন্দি হালদা পাড়ের ঐতিহ্য ও সংস্কৃতি

নিজস্ব প্রতিবেদক, চট্টগ্রাম : বাংলাদেশের একমাত্র প্রাকৃতিক মৎস্য প্রজনন ক্ষেত্র চট্টগ্রামের ‘হালদা নদী’। এ নদী পার্বত্য খাগড়াছড়ির রামগড় উপজেলার ২নং পাতাছড়া ইউনিয়নের হালদাছড়া থেকে উৎপত্তি হয়ে ফটিকছড়ি, রাউজান ও হাটহাজারী উপজেলা চট্টগ্রাম নগরীর চান্দগাঁও থানার কালুরঘাট এলাকায় কর্ণফুলী নদীতে মিশে গেছে।

নদীটি বাংলাদেশের ঐতিহ্যের একটি অংশ। হালদা নদীর গতিপ্রকৃতি, নদীর ক্ষয় এবং নদী তীরবর্তী মানুষের জীবনপ্রবাহ ও জটিলতা নিয়ে দেশের খ্যাতনামা অভিনেতা ও নির্মাতা তৌকীর আহমেদ নির্মাণ করেছেন ‘হালদা’ ছবি। আলোচিত এই ছবিটি মুক্তি পেয়েছে আজ শুক্রবার।

হালদা চলচ্চিত্রের মাধ্যমে নতুন এক ইতিহাসে নাম লেখাতে যাচ্ছে প্রাকৃতিক মৎস্য প্রজনন ক্ষেত্র হালদা নদী। বন্দরনগরী চট্টগ্রামের আলমাস সিনেমা হলসহ সারাদেশের মোট একশ’টি সিনেমা হলে একসঙ্গে মুক্তি পাচ্ছে ‘হালদা’ সিনেমা। ছবিটিতে অভিনয় করেছেন মোশাররফ করিম, তিশা, জাহিদ হাসান, ফজলুর রহমান বাবু, দিলারা জামান, রুনা খান, শাহেদ আলীসহ অনেক তারকা অভিনেতা-অভিনেত্রী। চট্টগ্রামের আঞ্চলিক ভাষার উপর গুরুত্ব দিয়ে চট্টগ্রামের ঐতিহ্য ও সংস্কৃতিতে তুলে ধরা হয়েছে এই ছবিটিতে।



ছবির পরিচালক তৌকির আহমেদ জানান, ছবিটি মূলত নদীর পাড়ের মানুষকে নিয়ে, স্বাভাবিকভাবে অভিনেতা অভিনেত্রীরা কথা বলেছেন চট্টগ্রামের আঞ্চলিক ভাষায়। তবে সারাদেশের মানুষ যাতে ভাষা বুঝতে পারেন, সে জন্য ভাষা খানিকটা সহজ করে উপস্থাপন করা হয়েছে। মাত্র ২২ দিনে হালদা পাড়ে রাউজান, হাটহাজারী ও পতেঙ্গা এলাকায় শুটিং সম্পন্ন করা হয়। ছবিতে একটি নিটোল গল্প আছে, রয়েছে গানও। একটি বিনোদনমূলক সিনেমায় যা যা থাকা দরকার সবই রয়েছে এই ছবিটিতে।

তৌকীর আহমেদ বলেন, ‘নদীর কোনো জীবন নেই। নদী চলে তার দুপাশের মানুষকে নিয়ে। গল্পের মধ্যে আমি দেখিয়েছি নদী ও নারীর বিষয়টি, যেটি চিরন্তন একটি বিষয়। এগুলো আমাদের জীবনের উৎস ও আধার। যারা অভিনয় করেছেন তারা সবাই চমৎকার অভিনয় করেছেন।



হালদা সিনেমার মাধ্যমে মোশাররফ করিম, তিশা, জাহিদ হাসান প্রত্যেককেই দর্শক ভিন্নভাবে দেখতে পাবেন। যেমন মোশাররফ করিমকে হাস্যরসাত্মক চরিত্রে দেখা যাবে না, জাহিদ হাসানকে কিছুটা নেগেটিভ চরিত্রে দেখা যাবে। হালদা পাড়ের মানুষদের জীবন, সংস্কৃতি থাকবে। এছাড়া হালদা ছবিতে থাকবে চট্টগ্রামের ঐতিহ্যবাহী জব্বারের বলি খেলা, কবির লড়াই, নৌকা বাইচ, ব্যাঙের বিয়ে, মাছের ডিম ধরা নিয়ে হালদা পাড়ের মানুষদের উৎসব এবং হালদার দুই পাড়ের মানুষদের পরিচয়। সবমিলিয়ে হালদা দেখলে দর্শক ঠকবেন না।’

‘হালদা’ ছবিতে গান প্রসঙ্গে তৌকীর আহমেদ বলেন, ‘হালদা’য় ছবির প্রয়োজনে কিংবা বাণিজ্যিক দিক চিন্তা করে কয়েকটি গান নেওয়া হয়েছে। এখানে মাইজভাণ্ডারীর গান থাকছে, গ্রাম্য গানও থাকছে। আমি চেয়েছি দর্শকরা দেখুক। আমি চাই সবাই হালদা দেখুক। তারপর সমালোচনা করুক।’



উল্লেখ্য, চট্টগ্রামের ঐতিহ্য রুই জাতীয় মাছের (রুই, কাতলা, মৃগেল ও কালবাউশ) প্রাকৃতিক প্রজনন ক্ষেত্র হালদা নদী। এটি বিশ্বের একমাত্র জোয়ার ভাটার নদী যেখান থেকে রুই জাতীয় মাছের নিষিক্ত ডিম সংগ্রহ করা হয়। স্মরণাতীত কাল থেকে রাউজান ও হাটহাজারীর মানুষ এ নদী থেকে ডিম আহরণ করে থাকেন। এই ডিম থেকে রেণু ফুটিয়ে বাজারে বিক্রি করেন আহরণকারীরা।



রাইজিংবিডি/চট্টগ্রাম/১ ডিসেম্বর ২০১৭/রেজাউল/শাহনেওয়াজ

রাইজিংবিডি.কম

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়