যে কারণে শ্রীদেবী ভারতের ‘প্রথম নারী সুপারস্টার’
শ্রীদেবী
বিনোদন ডেস্ক: সদ্যপ্রয়াত বলিউড অভিনেত্রী শ্রীদেবীকে বলা হয় ভারতের ‘প্রথম নারী সুপারস্টার’। মাত্র চার বছর বয়সে অভিনয় শুরু করেন এই অভিনেত্রী। এরপর খুব অল্প সময়ের মধ্যেই রুপালি জগতে তৈরি করেন শক্ত অবস্থান। শুধু অভিনয় দিয়ে তিনি এই অবস্থান তৈরি করেননি। রুপালি পর্দার বাইরেও চলচ্চিত্রসংশ্লিষ্টরা তাকে যথেষ্ট সমীহ করত। কারণ ব্যক্তিত্বের দিক থেকেও শ্রীদেবী ছিলেন সবার চেয়ে আলাদা।
আজ তিনি নেই, তবু বলিউড তাকে ‘সুপারস্টার’ হিসেবেই স্মরণ করবে। নব্বইয়ের দশকে বলিউড শাহেনশাহ অমিতাভ যখন অভিনয় ক্যারিয়ারের সবচেয়ে ভালো সময় পার করছিলেন তখন শ্রীদেবীই একমাত্র অভিনেত্রী যিনি এই অভিনেতার সমপরিমাণ পারিশ্রমিক দাবি করে সবাইকে চমকে দিয়েছিলেন। শুধু তাই নয়, চরিত্র পছন্দ না হওয়ায় অমিতাভের বিপরীতে অভিনয় না করার সাহসও দেখিয়েছিলেন তিনি। এই ঘটনা বলিউডে তাকে অনন্য উচ্চতায় পৌঁছে দিতে ভূমিকা রাখে।
শ্রীদেবীর আগে মধুবালা, নার্গিস কিংবা হেমামালিনী মুম্বাই ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রি কাঁপিয়েছেন। কিন্তু তারা কেউই দীর্ঘদিন অবস্থান ধরে রাখতে পারেননি। তারা বলিউডের বাইরে গিয়ে দক্ষিণী সিনেমাতে সফল হননি। শ্রীদেবী এক্ষেত্রে উজ্জ্বল ব্যতিক্রম। শ্রীদেবীর প্রথম সফল সিনেমা ‘১৬ ভায়াথিনিলে’। এটি তামিল সিনেমা। সিনেমাটি মুক্তি পায় ১৯৭৭ সালে। তখন তার বয়স মাত্র ১৪। তিনি মুম্বাই মাত করেছেন আরো পরে। শুধু অভিনয় নয়, শ্রীদেবীর নাচ ছিল দর্শকের কাছে বিশেষ কিছু। চরিত্র বাছাইয়ে তিনি সচেতন ছিলেন। তিনিই একমাত্র অভিনেত্রী যে ভারতের বিভিন্ন রাজ্যের সিনেমায় অভিনয় করেছেন এবং সফল হয়েছেন। সিনেমায় অভিনয়ের জন্য শ্রীদেবী শুধু যে সমকালীন অভিনেত্রীর মনে জ্বালা ধরিয়েছেন তা নয়, অনেক বড় বড় অভিনেতাও তাকে ঈর্ষা করতেন। কারণ নির্মাতাদের কাছে বক্স অফিসে হিটের ফর্মুলায় পরিণত হয়েছিলেন শ্রীদেবী।
যে কোনো প্রযোজক সিনেমায় শ্রীদেবীকে রাখতে চাইতেন। এমনকি অনেক নায়কের চেয়ে বেশি পারিশ্রমিক দাবি করার পরও! ১৯৮৫ থেকে ১৯৯২ সাল পর্যন্ত সবচেয়ে বেশি পারিশ্রমিক পাওয়া অভিনেত্রী ছিলেন শ্রীদেবী। সেই সময় অনেক নায়ক ৩ থেকে ৪০ লাখ রুপিতে খুব সহজেই সিনেমায় অভিনয় করতে রাজি হতেন। কিন্তু শ্রীদেবী পারিশ্রমিক নিতেন ১ কোটি রুপির বেশি। এমনকি দীর্ঘ বিরতির পর ২০১২ সালে তিনি যখন অভিনয়ে ফিরলেন তখনও মোটা অঙ্কের পারিশ্রমিক নিয়েছেন। ইংলিশ ভিংলিশ সিনেমার জন্য ৪ কোটি রুপির বেশি নিয়েছেন তিনি।
তার সময়ে অনেক অভিনয়শিল্পীরা যা কল্পনা করেননি শ্রীদেবী তা করে দেখিয়েছেন। সিনেমার শুটিংয়ের প্রয়োজনে গ্রামে গেলে পোশাক পরিবর্তনে সমস্যা হতো। এজন্য ভ্যানিটি ভ্যান ব্যবহার করতেন তিনি। রুপালি পর্দার রানি শ্রীদেবী ব্যক্তিগত জীবনেও এমন শৌখিন ছিলেন। তার জীবনযাপন ছিল বিলাসবহুল। জানা গেছে, তার মোট সম্পত্তির পরিমাণ ২৪৭ কোটি রুপি। এর মধ্যে তার তিনটি বাড়ির মূল্য প্রায় ৬২ কোটি রুপি। সাতটি বিলাসবহুল গাড়ির মালিক ছিলেন এ অভিনেত্রী। এর মধ্যে তার পছন্দ ছিল পোরশে। এ অভিনেত্রীর শৌখিনতার আরেকটি উদাহরণ হচ্ছে, শুধুমাত্র প্রসিদ্ধ ডিজাইনার মনীশ মালহোত্রার তৈরি পোশাক পরতেন তিনি। অন্য কারো পোশাকে তার মন ভরত না।
রাইজিংবিডি/ঢাকা/৬ মার্চ ২০১৮/মারুফ/তারা
রাইজিংবিডি.কম
আরো পড়ুন