ঢাকা     মঙ্গলবার   ১৬ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ৩ ১৪৩১

প্রবীর হত্যা তদন্তে আরেক হত্যার সন্ধান

হাসান উল রাকিব || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১৬:৫৪, ১৬ জুলাই ২০১৮   আপডেট: ০৫:২২, ৩১ আগস্ট ২০২০
প্রবীর হত্যা তদন্তে আরেক হত্যার সন্ধান

প্রবীর চন্দ্র

নিজস্ব প্রতিবেদক, নারায়ণগঞ্জ : নারায়ণগঞ্জের আলোচিত স্বর্ণ ব্যবসায়ী প্রবীর চন্দ্র ঘোষ হত্যা মামলার মূল আসামি পিন্টু দেবনাথের সেই ‘বড় ভাই’ মামুন মোল্লা ও পিন্টুর পরকীয়া প্রেমিকা রত্না চক্রবর্তীকে গ্রেপ্তার করেছে জেলা গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশ।

তাদের প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে বেরিয়ে আসে স্বপন কুমার নামে আরেক ব্যবসায়ীকে অপহরণের পর হত্যার ঘটনা। পুলিশ নিখোঁজ ব্যবসায়ী স্বপন কুমারের ব্যবহৃত মোবাইল ফোন রত্না চক্রবর্তীর কাছ থেকে উদ্ধার করেছে। এতে পুলিশ প্রাথমিকভাবে ধারণা করছে, এই খুনি চক্র একই কায়দায় অপর স্বর্ণ ব্যবসায়ী স্বপন কুমারকে হত্যা করে লাশ গুম করেছে।

এ দুটি হত্যার আরো তথ্য জানার জন্য মামলার তদন্ত কর্মকর্তা গ্রেপ্তার মামুন মোল্লা ও রত্না চক্রবর্তীকে সোমবার বিকেলে নারায়ণগঞ্জ সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আশেক ইমামের আদালতে হাজির করে ১০ দিনের রিমান্ড চাইলে আাদালত তিন দিন করে রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন নারায়ণগঞ্জ কোর্ট ইন্সপেক্টর এসআই কামাল হোসেন।

বিকেলে নারায়ণগঞ্জ সদর মডেল থানায় অপর স্বর্ণ ব্যবসায়ী স্বপন কুমার অপহরণ ও নিখোঁজের অভিযোগ করে তার বড় ভাই অজিত কুমার বাদী হয়ে মামলা দায়ের করেছেন। মামলার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন নারায়ণগঞ্জ সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কামরুল ইসলাম।

আদালতে পিন্টুর জবানবন্দিতে তৃতীয়পক্ষ হিসেবে ‘বড় ভাই’-এর নাম উঠে আসার পর রোববার গভীররাতে শহরে আমলাপাড়ার মোল্লাবাড়ী থেকে মামুন মোল্লাকে (৫০) গ্রেপ্তার করে পুলিশ। আজ গ্রেপ্তার করা হয় রত্না চক্রবর্তীকে।

প্রায় দুই বছর আগে শহরের নিতাইগঞ্জে অপহৃত হন স্বপন কুমার। স্বপনের ব্যবহৃত মোবাইল সেট উদ্ধার করা হয়েছে রত্নার কাছ থেকে। এই ঘটনায় তাদের রিমান্ডে নেওয়া হয়।

স্বপন কুমারও প্রবীর ঘোষের মতো পিন্টু দেবনাথের ঘনিষ্ঠ বন্ধু ছিল। স্বপনও কালীর বাজারে স্বর্ণ ব্যবসা করতেন।

প্রবীর ঘোষ হত্যা মামলার তদন্ত কর্মকর্তা মফিজুল ইসলাম জানিয়েছেন, প্রবীর ঘোষ ও পিন্টুর মধ্যে সম্পর্কের ফাটল ধরানো ও প্রবীরকে পিন্টুর কাছে বিষিয়ে তোলার নেপথ্যে ভূমিকা রাখেন গ্রেপ্তার মামুন মোল্লা। তিনি নানাভাবে পিন্টুকে ভয় দেখিয়ে কয়েক দফায় তিন লাখ টাকা হাতিয়ে নেন। অন্য দিকে রত্না চক্রবর্তী পিন্টুর পরকীয়া প্রেমিকা। তিনিও আর্থিকভাবে লাভবান হচ্ছিলেন।

গত ২০১৬ সালের ২৭ অক্টোবর কালীর বাজারের স্বর্ণ ব্যবসায়ী স্বপন কুমার  নিখোঁজ হন। ধারণা করা হচ্ছে, স্বপন কুমারকে একই কায়দায় হত্যা করে লাশ নদীতে ফেলে দেওয়া হয়েছে। প্রাথমিক তথ্য-প্রমাণের ভিত্তিতে ডিবি তদন্ত শুরু করেছে।

নিখোঁজের ২২ দিনের মাথায় কালীর বাজারের নিখোঁজ স্বর্ণ ব্যবসায়ী প্রবীর ঘোষের লাশ উদ্ধার করা হয় গত ৯ জুলাই। নারায়ণগঞ্জের আমলাপাড়া ১৫ কে সি নাগ রোড এলাকার একটি বাড়ির সেপটিক ট্যাংকি থেকে লাশ উদ্ধার করে জেলা গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশ।

১৮ জুন প্রবীর ঘোষের নিখোঁজের পর তার বাবা ভোলানাথ ঘোষ সদর মডেল থানায় জিডি করেন। জিডির সূত্র ধরে প্রথমে বাপন ভৌমিক ওরফে বাবু এবং পরে পিন্টু দেবনাথকে আটক করে জেলা গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশ। তাদের ব্যাপক জিজ্ঞাসাবাদের এক পর্যায়ে পিন্টু স্বীকার করে প্রবীর ঘোষের লাশ লুকিয়ে রাখার কথা। আর্থিক লেনদেনের কারণে এ হত্যাকাণ্ড ঘটতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে। 



রাইজিংবিডি/নারায়ণগঞ্জ/১৬ জুলাই ২০১৮/হাসান উল রাকিব/বকুল

রাইজিংবিডি.কম

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়