ঢাকা     বুধবার   ২৪ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ১১ ১৪৩১

নায়করাজের চলে যাওয়ার এক বছর

আমিনুল ইসলাম শান্ত || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ০৫:৫৭, ২১ আগস্ট ২০১৮   আপডেট: ০৫:২২, ৩১ আগস্ট ২০২০
নায়করাজের চলে যাওয়ার এক বছর

বিনোদন ডেস্ক : বাংলাদেশের চলচ্চিত্রের কিংবদন্তি অভিনেতা নায়করাজ রাজ্জাক। গত বছরের ২১ আগস্ট না ফেরার দেশে চলে যান এই অভিনেতা। দেহের বিদায় ঘটলেও কিংবদন্তিরা যুগ যুগ বেঁচে থাকেন তাদের কীর্তি দিয়ে। নায়করাজও বেঁচে আছেন তার ভক্তদের মনে। কীর্তিমান এই অভিনেতার চলে যাওয়ার আজ এক বছর।

নায়করাজ রাজ্জাকের প্রকৃত নাম আব্দুর রাজ্জাক। তিনি ১৯৪২ সালে ভারতের পশ্চিমবঙ্গে কলকাতার টালিগঞ্জে জন্মগ্রহণ করেন। ছোটবেলা থেকেই রাজ্জাক অভিনয়ের সঙ্গে যুক্ত হয়েছিলেন। ১৯৬৪ সালে তিনি তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তানে চলে আসেন। তখন রাজ্জাক তৎকালীন পাকিস্তান টেলিভিশনে ‘ঘরোয়া’ নামের ধারাবাহিক নাটকে অভিনয় করে দর্শকদের কাছে জনপ্রিয় হন।

এরপর নানা প্রতিকূলতা পেরিয়ে তিনি পরিচালক আব্দুল জব্বার খানের সহযোগিতায় ইকবাল ফিল্মসে কাজ করার সুযোগ পান। পরে পরিচালক কামাল আহমেদের সহকারী হিসেবে ‘উজালা’ সিনেমায় কাজ করেন। সালাউদ্দিন প্রোডাকশন্সের ‘তেরো নাম্বার ফেকু ওস্তাগার লেন’ চলচ্চিত্রে ছোট একটি চরিত্রে অভিনয় করে সবার কাছে নিজ মেধার পরিচয় দেন রাজ্জাক। পরবর্তীতে ‌‘কার বউ’, ‘ডাক বাবু’, ‘আখেরী স্টেশন’সহ কয়েকটি সিনেমায় ছোট ছোট চরিত্রে অভিনয় করে তিনি।

১৯৬৫ সালে প্রয়াত জহির রায়হান তাকে প্রথম ‘বেহুলা’ চলচ্চিত্রে নায়ক হিসেবে কাস্ট করেন। এতে তার বিপরীতে নায়িকা হিসেবে ছিলেন সুচন্দা। এরপর আর পিছু ফিরে তাকাতে হয়নি রাজ্জাককে। তার অভিনীত সিনেমাগুলো বেশ দর্শকপ্রিয়তা অর্জন করে। দর্শকের ভালোবাসায় সিক্ত হয়ে তিনি নায়করাজ হিসেবে পরিচিতি পান।

তার অভিনীত জনপ্রিয় চলচ্চিত্রের মধ্যে রয়েছে-‘নীল আকাশের নীচে’, ‘ময়নামতি’, ‘মধু মিলন’, ‘পীচ ঢালা পথ’,  ‘যে আগুনে পুড়ি’, ‘জীবন থেকে নেয়া’, ‘কী যে করি’, ‘ আলোর মিছিল’, ‘অনন্ত প্রেম’, ‘বাদী থেকে বেগম’, ‘আগুন নিয়ে খেলা’, ‘এতটুকু আশা’, ‘নাচের পুতুল’, ‘অশ্রু দিয়ে লেখা’, ‘অবুঝ মন’, ‘গুন্ডা’, ‘রংবাজ’, ‘আগুন’, ‘অশিক্ষিত’, ‘মাটির ঘর’, ‘ছুটির ঘণ্টা’, ‘বেঈমান’, ‘মহানগর’, ‘চন্দ্রনাথ’, ‘অভিযান’, ‘অনুরাগ’, ‘রাজা সাহেব’, ‘গাঁয়ের ছেলে’, ‘বেঈমান’, ‘আনারকলি’, ‘কালো গোলাপ’, ‘বদনাম’, ‘শুভদা’, ‘রাজলক্ষ্মী শ্রীকান্ত’, ‘ঘর সংসার’, ‘যোগাযোগ’, ‘বড় ভাল লোক ছিল’, ‘বাবা কেন চাকর’ ইত্যাদি।

রাজ্জাক প্রায় ৩০০টি বাংলা ও উর্দু চলচ্চিত্রে অভিনয় করেছেন। নায়করাজ শুধু নায়ক হিসেবেই নয়, প্রযোজক ও পরিচালক হিসেবেও চলচ্চিত্রাঙ্গনে সফল ছিলেন। তার প্রযোজনা সংস্থার নাম রাজলক্ষ্মী প্রোডাকশন। পরিচালনা করেছেন প্রায় ১৬টি চলচ্চিত্র। সর্বশেষ তিনি ‘আয়না কাহিনী’ সিনেমাটি নির্মাণ করেন। চলচ্চিত্রের বাইরে জাতিসংঘ জনসংখ্যা তহবিলের শুভেচ্ছাদূত হিসেবেও কাজ করেছেন নায়করাজ রাজ্জাক।

নায়ক রাজ্জাক প্রথম জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার লাভ করেন ‘কি যে করি’ সিনেমায় অভিনয় করে। এরপর আরো চারবার তিনি জাতীয় সম্মাননা লাভ করেন। ২০১১ সালে জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারে আজীবন সম্মাননা দেওয়া হয় তাকে। এছাড়া বাংলাদেশ চলচ্চিত্র সাংবাদিক সমিতি (বাচসাস) পুরস্কার পেয়েছেন বেশ কয়েকবার।



রাইজিংবিডি/ঢাকা/২১ আগস্ট ২০১৮/শান্ত/মারুফ

রাইজিংবিডি.কম

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়