ঢাকা     বৃহস্পতিবার   ১৮ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ৫ ১৪৩১

ঈদুল আজহার সেকাল-একাল

ফরহাদ খান || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ০৭:১৭, ২১ আগস্ট ২০১৮   আপডেট: ১২:৫৫, ১০ জুলাই ২০২২
ঈদুল আজহার সেকাল-একাল

ঈদের আনন্দ ভাগাভাগি করে নিতে হয়। আর কোরবানির ঈদ তো ভাগাভাগিরই ঈদ। এই ঈদে আনন্দ ও কোরবানির মাংস- সবই ভাজনীয়। এই ভাগের মধ্য দিয়েই সার্থক হয়ে ওঠে ঈদের দিন। কোরবানির ঈদের আয়োজনপর্ব কম নয়। আয়োজন শুরু হয় ক্ষেত্রবিশেষে বেশ আগে থেকে অথবা ঈদের আগের দিন থেকে। গ্রামে যারা কোরবানি দেন, তাদের অনেকেই বছরখানেক আগে থেকেই খাসি পুষতে শুরু করেন। অনেকে পোষেন এঁড়ে, পরে যা ষাঁড়ে পরিণত হয়। যারা ঈদের দু’এক দিন আগে ঈদ নিয়ে ব্যস্ত অথবা ব্যগ্র হন, তারা খাসি কিংবা গরু কিনে আনেন হাট থেকে। যে বাড়িতে খাসি পোষা হয়, সে বাড়ির শিশুদের সঙ্গে খাসির বেশ সখ্য গড়ে ওঠে। খাসিকে দানাপানি খাওয়ানোর দায়িত্ব শিশুরা সানন্দে গ্রহণ করে। তারপর শেষের সেদিন- কোরবানির দিন ঘনিয়ে আসে বিচ্ছেদ। অনেক শিশুকেই অস্থির হয়ে রোদন করতে দেখা যায়। অনেকে তাদের প্রিয় খাসির মাংস ভক্ষণে বিরত থাকে।

কোরবানির জন্য পোষা খাসি অথবা এঁড়ে অতিরিক্ত আদরে অচিরেই হৃষ্টপুষ্ট হয়ে ওঠে। তবে পশুর আগে ‘হৃষ্টপুষ্ট’ বিশেষণ লাগানো ঠিক হয় কি না বলা মুশকিল। মোটাসোটা, নাদুসনুদুস, গোলগাল বালকের বেলাতে হৃষ্টপুষ্ট শব্দটি ব্যবহৃত হয়। আবার গরু-ছাগলের বেলাতেও। এটি সম্ভবত ‘ব্যাকরণ মানি না’ জাতের শব্দ। কারণ পশুর বেলায় শব্দটি ব্যাকরণ মানে না। ‘হৃষ্ট’ ও ‘পুষ্ট’ একেবারে আলাদা দুটো শব্দ। হৃষ্ট শব্দের অর্থ উৎফুল্ল, প্রীত ইত্যাদি। অন্যদিকে পুষ্ট শব্দের অর্থ নিটোল, পরিণত। কিংবা পরিণত মানুষের বিশেষণ হিসেবে শব্দ দুটো জোড়া লাগা অবস্থায় ব্যবহৃত হয় এবং এই ব্যবহারের তাৎপর্যও খুঁজে পাওয়া যায়। কারণ মানুষের পক্ষেই যুগপৎ হৃষ্ট ও পুষ্ট হওয়া সম্ভব। গরু কিংবা ছাগল কেবল পুষ্ট হতে পারে। মানুষ এদেরকে পুষ্ট করে তোলার জন্য রীতিমতো চেষ্টাচরিত্রও করে। কিন্তু এরা কি হৃষ্ট অর্থাৎ হৃষ্টচিত্ত হতে পারে কিংবা মানুষের হাতে আপন পরিণাম জেনে এদের পক্ষে হৃষ্টচিত্ত হওয়া কি সম্ভব? মানুষের মুখের কথায় অবশ্য অনেক কিছুই হয়। কথায় কথায় বলা হয়ে থাকে যথেষ্ট ক্ষতি, কিন্তু ক্ষতি কি কারও ইষ্ট হতে পারে?

কোরবানি উপলক্ষে বিরাট গরু-ছাগলের হাট এখন যত্রতত্র বসে। আগে এ রকমটা ছিল না। পাঁচ-দশ গ্রাম পরপর গরু-ছাগলের হাট এমনিতেই নিয়মিত বসত। এখনো বসে। সপ্তাহে এক দিন অথবা দুই দিন। গরুর সঙ্গে মহিষ, ছাগলের সঙ্গে ভেড়াও থাকে। কোনো কোনো হাটকে বলা হতো গরু-ছাগলের বিরাট হাট। ‘বিরাট’ শব্দটা তখন বসত হাটের আগে। সেটাই সংগত। কিন্তু এখন বসে গরু-ছাগলের আগে। আর এটাও যে খুব অসংগত তা কিন্তু বলা যাবে না। বড় বড় শহরের বিরাট গরু-ছাগলের হাটের অনেক গরুই বিরাট, বিশালদেহী- বিশেষত যেগুলো ভারত থেকে আসে। তবে মোটাতাজাকরণ প্রকল্পের দেশি ষাঁড়ও কম যায় না। অযথা টাকার মালিক হলে মানুষ প্রদর্শনবিলাসী হয়ে ওঠে। কথায় আছে প্রেম, কাশি, ধোঁয়া গোপন রাখা যায় না। টাকার গরমও কিন্তু তা-ই। কেবলই প্রকাশিত হত চায়। প্রদর্শনবিলাসী মানুষ কোরবানির ঈদেও স্থির থাকতে পারে না। অস্থির হয়ে অবিশ্বাস্য দামে গরু কিনে খবর তৈরি করে। ইউরিয়া আর চিটাগুড় খেয়ে গরুগুলো এদের জন্যই মোটাতাজা হয়, আকারে বিশাল হয়। বিরাট গরুদের শিঙ আর গলায় ঝোলে রঙিন কাগজের ফুলের মালা, গায়ে রঙিন জামা। এসব গরুর দামও লাখের ওপরে। প্রদর্শনবিলাসীদের কেনা অনেক মহাগরুকে সাধারণ মানুষ প্রায় সেলিব্রিটির মর্যাদা দেয়।

একালে ষাঁড় কোরবানি হয় বেশি। আগেকার দিনে ষাঁড়ের বদলে বলদ কোরবানি হতো বেশি। ষাঁড়ের ষাঁড়জীবন ছিল অতিশয় হ্রস্ব। কৃষির প্রয়োজনে এদের বলদে রূপান্তরিত করা হতো। তখনকার গ্রামীণ অর্থনীতিতে গরুর গুরুত্বপূর্ণ অবস্থান ছিল। কৃষিতে তখন যন্ত্রের ব্যবহার শুরু হয়নি। যন্ত্রের কাজ তখন করে দিত গরু লাঙল বওয়া থেকে শুরু করে শস্য মাড়াই, গাড়িটানা- সব ক্ষেত্রেই গরু ছিল অপরিমেয় প্রয়োজনের পশু। সম্ভবত গরুর গুরুত্ব ও উপকারিতার জন্য গরুর ওপর রচনা লেখা স্কুলে প্রায় বাধ্যতামূলক ছিল।গরুর উপকারী ভ‚মিকায় ষাঁড়ের অবদান তেমন নয়। ষাঁড়ের অবদান কেবল আঞ্চলিক ভাষায় যাকে বলে ‘পাল দেওয়া’ অর্থাৎ প্রজননে এবং সুস্বাদু মাংস হওয়ায়। ষাঁড়ের গোবরও নিতান্ত অসার বস্তু। একটি বিখ্যাত প্রবচন তার প্রমাণ। তবে বলদের অবদান অসামান্য। বলদই তখন ছিল কৃষিকাজে কৃষকদের একমাত্র সহায়। শুধু কৃষিকাজ নয়, অন্যান্য প্রয়োজনীয় কাজেও। কলুর কাজেও ছিল বলদ। ষাঁড় বলদ হলে প্রকৃতিতে শান্ত হয়ে যায়। ব্যাপারটা পরিষ্কার বোঝা যায় ‘কলুর বলদ’ প্রবচনের মাধ্যমে। গৃহস্থেরা ষাঁড়ের বদলে গাভি এবং বলদ পুষতেন। গোয়ালে ষাঁড় থাকলে সে একাই অন্যদের অতিষ্ঠ করে তুলত। গৃহস্থ তাই গোয়ালে সহজে ষাঁড় রাখতেন না। এ কারণেই তখন ষাঁড়ের আধিক্য তেমন ছিল না। কোরবানির সময় এলে গৃহস্থ তাঁর গোয়ালের এক বলদকে নির্দিষ্ট করে রাখতেন। অধিকাংশ ক্ষেত্রেই এটি বেয়াড়া বলদ। এছাড়া গাভিতে পরিণত হতে ব্যর্থ হওয়া বকনা অর্থাৎ বন্ধ্যা গরুটিকেও আগে থেকে কোরবানির জন্য নির্দিষ্ট করে রাখা হতো। গ্রামসুদ্ধ লোকের হাঁকাহাঁকি দৌড়াদৌড়ির মধ্য দিয়ে শুরু হতো কোরবানি দেওয়ার কাজ। ষাঁড় মাটিতে পাড়তে লোক লাগত বেশি। বলদ অল্পতেই কাত হয়ে যেত। গ্রামের প্রতিটি যুবকই তখন কাজের লোক। তারপরও মাংস তৈরি হতে বিকেল গড়িতে যেত। মাংস ভাগ করতে করতে সন্ধ্যা। কারণ যুবকেরা অন্য আর কাজে অভিজ্ঞ হলেও কসাইয়ের কাজে আনাড়ি। কোরবানির গরু-খাসিতেই তাদের হাতেখড়ি। গরুতে সময় লাগলেও ছাগলে সমস্যা ছিল কম। গলা কাটা ষাঁড় সবাইকে ফেলে দিয়ে ছুটছে এমন দৃশ্য তখন বিরল ছিল না। কোরবানি দেওয়া গাভির পেটে বাছুর- এমন মুখরোচক সংবাদ তখনো পাওয়া যেত, এখনো পাওয়া যায়।

বাড়ি বাড়ি মাংস পাঠানোর কাজটা করতে হতো ছোট ছেলেমেয়েদের। তবে কাকে কতটুকু দেওয়া হবে, কে কার বাড়ি যাবে ইত্যাকার ঝামেলা পোহাতে হতো বাড়িতে মেয়েদের। তবে সমাজ থাকলে কাজটা সমাজের পক্ষ থেকেই সারা হতো। মেয়েরা থাকতেন রান্নার প্রতীক্ষায়। রান্নাটা ছিল বিরাট পরীক্ষা। মসলা বাটার কাজ শেষ। পেঁয়াজ, রসুন, আদা তৈরি। ষাঁড়ের মাংস হলে কাজ হয়ে যেত সহজেই। কিন্তু বাড়িতে হয়েছে বলদ কোরবানি। বলদ বলে কথা। সহজে কি সেদ্ধ হতে চায়! পেঁপের আঠা ফেলল। হাঁড়িতে ফেলা হলো কাঁচা সুপারি। মা তখন রেগে গিয়ে বললেন, ‘মাংসের হাঁড়ি ভাটায় চাপিয়ে দিয়ে আয়।’ মাংস অবশেষে সেদ্ধ হতো। মা শান্ত হতেন। থালায় করে বেশ খানিকটা কষানো মাংস তুলে দিয়ে বলতেন, ‘যা বাবার সঙ্গে বসে লবণ চেখে দেখ।’

কোরবানির দিন মায়ের কাজ কি সহজে শেষ হতো? মাংসের সঙ্গে ধস্তাধস্তি করে মাংস সেদ্ধ করে এক হাঁড়ি নামালেই কি কাজ শেষ? মায়ের শুরু হতো নতুন কাজ। পল্লীবিদ্যুতের বদৌলতে এখন গ্রামের বাড়িতেও ফ্রিজ চলে। তখন সে অবস্থা ছিল না। গ্রামের মা তখন রেফ্রিজারেটর নামক টাটকা খাদ্যসামগ্রী বাসি করিয়া খাইবার যন্ত্রের নামও শোনেননি। মায়ের সামনে কয়েক হাঁড়ি মাংস। মা ঠিকই সামলে নিতেন। লবণ আর হলুদ মাখিয়ে একবার জ্বাল দিয়ে হাঁড়ি নামিয়ে রাখা হতো। ঈদ শীতে পড়লে ভাবনা কম ছিল। ভাবনা ছিল গরম ঋতুতে। প্রতিদিন গরম করা হতো অর্থাৎ অল্প সময় জ্বাল দেওয়া হতো বাড়তি মাংসের হাঁড়ি। বিভিন্ন মসলা সহযোগে একটা করে হাঁড়ি কমত। বাড়তে থাকত পরের হাঁড়ির স্বাদ। অনেক পরিবারে শেষ হাঁড়িটা শেষ করা হতো মহররম মাসে আশুরার দিনে। কোরবানির কষানো মাংস খওয়ার পরিমাণ নিয়ে পুরুষদের মধ্যে তর্কবিতর্ক হতো পরের দিন। একবারে বসে এক-দেড় সের মাংস সাবাড় করা তখনকার গ্রামের পুরুষদের কাছে কোনো ঘটনাই ছিল না। এটা বেশি হতো দাওয়াত খেতে গিয়ে। কে কতটুকু খেতে পারে তা-ই নিয়ে চলত মেজবান আর মেহমানে তর্কাতর্কি। বাস্তব প্রমাণ দেখানোর মধ্য দিয়ে শেষ হতো সেই বিতর্ক। কোরবানির ঈদের সন্ধ্যায় অথবা পরদিন এ-পাড়া ও-পাড়া বেড়ানো ছোটদের জন্য প্রায় অপরিহার্য রীতি ছিল। কোন বাড়িতে কী কোরবানি হয়েছে সেসব সংবাদ থাকত নখদর্পণে। কোনো বাড়িতে ষাঁড় কোরবানি থাকলে সে বাড়িতে ঈদের সন্ধ্যাতেই হাজির। জীবৎকালে ষাঁড় গৃহস্থকে প্রচুর জ্বালাতন করলেও মৃত্যুর পর তার মাংস অল্প জ্বালেই যথেষ্ট সেদ্ধ হয়ে যেত। কিন্তু যে বাড়িতে গাভি কোরবানি হতো, সে বাড়িতে অবশ্য যেতে হতো রয়ে-সয়ে। মাংস মুখে দিয়ে একালের বালক হলে বলেই ফেলত, ‘চাচি, আপনার বাড়িতে অ্যটমিক রিঅ্যাক্টর থাকলে ভালো হতো।’ 

রোজার ঈদ নতুন জামা-কাপড়ের ঈদ। কোরবানির ঈদে জামা-জুতো কেনা হতো কালেভদ্রে। তবে সংসারে এমন অনেক জিনিস আছে, যেগুলো আদৌ অপরিহার্য নয়, নিতান্তই শৌখিন, সেগুলো কিনতে উপলক্ষ লাগে। কোরবানির ঈদ এমন অনেক জিনিসেরই উপলক্ষ ছিল। ঘড়ি একালে শৌখিন সামগ্রী না হলেও সেকালে ছিল। ঘড়ি পরতে হলে বেশ কিছুটা বয়স পার করতে হতো। কোরবানির মৌসুমে গোয়ালের নিষ্কর্ম বলদ অথবা বৃদ্ধ গাভিটি বিক্রি করে গ্রামের গৃহস্থ তার বয়স্ক ছেলেকে হয় ঘড়ি অথবা সাইকেল কিনে দিতেন। ছেলের জন্য কোনো কিছু কেনার না থাকলে বাড়ির জন্য শখের বশে কিনতেন রেডিও। গ্রামে শৌখিন জিনিস কে কখন কিনছে অথবা নতুন জামাই কী ঘড়ি আর কোন সাইকেল পেয়েছেন, সেই সংবাদ চাউর হতে বেশি সময় লাগত না। বস্তুত, শুধু বাড়িঘর নয়- ঘড়ি, সাইকেল, রেডিও ছিল তখনকার গ্রামের মানুষের স্ট্যাটাস সিম্বল। দামি জামাইকেও যৌতুক দিতে হতো এই তিন জিনিস। তখনকার দিনের ঘড়ির সর্বাধিক জনপ্রিয় ব্র্যান্ড ছিল ‘ওয়েস্ট অ্যান্ড ওয়াচ’। পরে এই ব্র্যান্ডের জায়গা দখল করেছিল ‘কেমি’। সংসারে সর্বদাই কিছু মানুষ থাকে যারা একটু ব্যতিক্রমী। এই রকম মানুষেরা কিনত ‘সাইমা’ কিংবা ‘জন ব্যারেল’। সাইমা ঘড়ি আকারে বেশ বড় ছিল। ঘড়ির মালিক গর্ব করে বলতেন, আম পাড়া ঘড়ি। সম্পন্ন গৃহস্থের বিভাগীয় শহরের কলেজপড়–য়া ছেলে বাপের কাছ থেকে পেত ‘ওমেগা সি মাস্টার’। এ ঘড়ি নিয়ে বিশ্বাস্য-অবিশ্বাস্য নানান রকম গল্প তৈরি হতো গ্রামে। কারণ ছিল ওমেগা ঘড়ির দাম।

বর্ষায় ঈদ না পড়লে কেনা হতো সাইকেলও। তখন কত নাম সাইকেলের- হারকিউলিস, ফিলিপস, রোভার, বিএসএ, র‌্যালে, হাম্বার- নানান জাতের সাইকেল। র‌্যালে এবং হাম্বার ছিল মফস্বলের বিত্তবানদের বিত্তের প্রতীক। মহানগরীর মানুষ এখন যে চোখে ফেরারি, আলফা রোমিও, পোরশের দিকে তাকায়, তার চেয়ে ঢের বেশি বিস্ময় নিয়ে তখনকার মানুষ র‌্যালে আর গাঢ় সবুজ হাম্বার সাইকেলের দিকে তাকাত। সাইকেলের আনুষঙ্গিক যন্ত্রপাতির প্রতিও মানুষের দৃষ্টি থাকত। সাইকেলের ডায়নামো এবং লাইট এখন বিস্মৃত এক অধ্যায়, যা এখন আর চোখেই পড়ে না। রেডিও ছিল আরেক জিনিস। উঠোনের পাশে কাপড় শুকানো দড়ির কায়দায় টাঙানো থাকত রেডিওর অ্যান্টেনা- তখনকার ভাষায় অ্যারিয়াল। সেই অ্যারিয়াল থেকে একটা তার ঘরে বা বারান্দায় রেডিওর সঙ্গে জুড়তে হতো। বিশাল আকার সে রেডিওর, এখনকার ১৫-১৭ ইঞ্চি টিভির সমান। তার সঙ্গে মানানসই আকারের বিড়ালমার্কা এভারেডি ব্যাটারি। ব্যাটারিও ছিল দেখার মতো। ফিলিপস, মারফি, বুশ, মুলার্ড, জেনিথ- তখনকার বিখ্যাত সব রেডিও। রেডিওতে হাত দেওয়ার অধিকার বাড়ির সবার ছিল না।

মা তো সর্বদাই হাসিমুখে ব্যস্ত। কোরবানির ঈদে মায়ের কাজ সহজে শেষ হতো না। কারও জন্য তিল্লি অর্থাৎ প্লীহা ভুনা, কারও জন্য মগজ ভাজি, তারপর নেহারি বট বা ভুঁড়ি প্রসেস করা- মায়ের তখন শত কাজ। অন্যদের কাজ ছিল শুধু খেয়ে যাওয়া। এখনো তা-ই।

তারা/

সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়