অবৈধ অস্ত্রের প্রবেশ ঠেকাতে সীমান্তে সতর্কতা
আসাদ আল মাহমুদ: জাতীয় সংসদ নির্বাচন সামনে রেখে অবৈধভাবে যাতে অস্ত্র দেশে আসতে না পারে সে জন্য আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী সীমান্তে ব্যাপক সতর্কতা অবলম্বন করেছে। সীমান্ত এলাকায় অবৈধ অস্ত্র ব্যবসায় জড়িত ৩৫০ জনের তালিকা করা হয়েছে। ইতিমধ্যে ৮০ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। বাকিদের গ্রেপ্তারে অভিযান চলছে।
পুলিশ সদর দপ্তর সূত্র জানায়, নির্বাচন এলেই অস্ত্রের চাহিদা বেড়ে যায়। অস্ত্র ভাড়া নিতে আগ্রহী হয়ে ওঠে দেশের বিভিন্ন এলাকার দলীয় ক্যাডাররা। নির্বাচনে নিজেদের আধিপত্য বিস্তারের ক্ষেত্রে এসব অস্ত্র ব্যবহার করা হয়। নির্বাচনের আগে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের হয়ে অস্ত্রের জোগান দেয় অস্ত্র ব্যবসায়ীরা।
গত ১ অক্টোবর থেকে ১৮ অক্টোবর পর্যন্ত নিরাপত্তা বাহিনীর বিশেষ অভিযানে ২৫০টি আগ্নেয়াস্ত্র ও ৭১৬টি গুলি উদ্ধার হয়। এ ঘটনায় ৩০৭ জনকে গ্রেপ্তার ও ২১২ জনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হয়। একইভাবে ১৯ অক্টোবর থেকে গত সপ্তাহ পর্যন্ত প্রায় ৩০০ আগ্নেয়াস্ত্র উদ্ধার করা হয়। গ্রেপ্তার করা করা হয় ৩৫০ জনকে। এর মধ্যে অবৈধ অস্ত্র ব্যবসায়ী প্রায় ৮০ জন।
পুলিশ সদর দপ্তরের এক কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করে বলেন, ‘অস্ত্র কেনাবেচা গ্রুপের সদস্যের তালিকা হালনাগাদ করা হয়েছে। তাদের পরিবারের কারা কে কী করে, তাদের রাজনৈতিক পরিচয়সহ সব তথ্য রয়েছে। সে অনুযায়ী গ্রেপ্তার অভিযান চলছে।
পুলিশ সদর দপ্তর সূত্র জানায়, চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে এ পর্যন্ত সারা দেশে ১ হাজার ৬১৩টি অস্ত্র উদ্ধার হয়েছে। এসব অস্ত্রের বেশিরভাগ উদ্ধার করা হয়েছে সীমান্ত এলাকার অস্ত্র ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে। এর মধ্যে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের অভিযানে ১১৭, চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশের অভিযানে ২৪৯, খুলনা মেট্রোপলিটন পুলিশের অভিযানে ২১, সিলেট মেট্রোপলিটন পুলিশের অভিযানে ৯, রংপুর মেট্রোপলিটন পুলিশের অভিযানে ২৬, বরিশাল মেট্রোপলিটন পুলিশের অভিযানে ১৩টি আগ্নেয়াস্ত্র উদ্ধার হয়েছে।
ঢাকা রেঞ্জে পুলিশের অভিযানে ১৮০, ময়মনসিংহ রেঞ্জে ৩৮, চট্টগ্রাম রেঞ্জে ৪২৭, খুলনা রেঞ্জে ২৩০ট, বরিশাল রেঞ্জে ৪০, রাজশাহী রেঞ্জে ১৭১, রংপুর রেঞ্জে ৫০, রেলওয়ে রেঞ্জে অভিযানে একটি আগ্নেয়াস্ত্র উদ্ধার হয়েছে।
এছাড়া র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়নের (র্যাব) অভিযানে চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে এ পর্যন্ত ৭৫০টি আগ্নেয়াস্ত্র উদ্ধার ও ৬২০ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
পুলিশ সদর দপ্তরের এডিশনাল ডিআইজি (ইনটেলিজেন্স অ্যান্ড স্পেশাল অ্যাফেয়ার্স) মো. মনিরুজ্জামান বলেন, ‘নির্বাচন সামনে রেখে যে কোনো সময়ই অস্ত্র উদ্ধার অভিযান চালানো হয়ে থাকে, এবারও তার ব্যতিক্রম নয়। কেউ যাতে নাশকতা চালাতে না পারে সে জন্য তালিকা অনুযায়ী অভিযান ও গ্রেপ্তার অব্যাহত আছে।’
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল বলেন, ‘অবৈধ অস্ত্র উদ্ধারের নির্দেশনা ও বৈধ অস্ত্র ব্যবহারের নীতিমালা বিষয়ে প্রজ্ঞাপন জারি করা হবে। নির্বাচনের সময় সীমান্তেও আমরা সতর্ক রয়েছি।’
রাইজিংবিডি/ঢাকা/১৭ ডিসেম্বর ২০১৮/আসাদ/শাহনেওয়াজ
রাইজিংবিডি.কম
আরো পড়ুন