একাদশ জাতীয় সংসদের প্রথম অধিবেশন শুরু বিকেলে

নিজস্ব প্রতিবেদক : একাদশ জাতীয় সংসদের প্রথম অধিবেশন শুরু হচ্ছে আজ বিকেল ৩টায়। রেওয়াজ অনুযায়ী প্রথম অধিবেশনে রাষ্ট্রপতি ভাষণ দিবেন।

এর আগে রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ সংবিধানের ৭২ অনুচ্ছেদের (১) দফায় প্রদত্ত ক্ষমতাবলে ৯ জানুয়ারি সংসদের এ অধিবেশন আহবান করেন।

সংসদ সচিবালয় থেকে জানানো হয়েছে ইতোমধ্যে এ অধিবেশন শুরুর সব প্রস্তুতি সম্পন্ন হয়েছে।

সংবিধান অনুযায়ী বছরের প্রথম অধিবেশন শুরুর দিন এবং একাদশ সংসদের প্রথম অধিবেশন উপলক্ষে রাষ্ট্রপতি সংসদে সরকারের বিভিন্ন উন্নয়নমূলক কর্মকান্ড তুলে ধরে দিকনির্দেশনামূলক ভাষণ দিবেন ।

তবে সংসদীয় রেওয়াজ অনুযায়ী চলমান সংসদের কোনো এমপি মারা গেলে অধিবেশন শুরুর পর শোক প্রস্তাব গ্রহণ করে অধিবেশন মুলতবি করা হয়।

একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে কিশোরগঞ্জ- ১ থেকে নির্বাচিত সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম গত ৩ জানুয়ারি ইন্তেকাল করেন। ফলে রেওয়াজ অনুযায়ী শুরুর পর শোক প্রস্তাব গ্রহণ করে অধিবেশন কিছুক্ষণের জন্য মুলতবির পর অধিবেশন পুনরায় শুরু করা হবে। আর সে সময় রাষ্ট্রপতি ভাষণ দিবেন।

এছাড়া বিধি অনুযায়ী সংসদের প্রথম অধিবেশনে স্পিকার ও ডেপুটি স্পিকার নির্বাচন করা হবে। সংবিধানের ৭৪ অনুচ্ছেদ অনুযায়ী নতুন সংসদের প্রথম বৈঠকে স্পিকার ও ডেপুটি স্পিকার নির্বাচন করতে হয়। এ জন্য কমপক্ষে এক ঘণ্টা পূর্বে নোটিশ দিতে হয়। এ জন্য একজন প্রস্তাবক, একজন সমর্থক ও প্রার্থীর সম্মতি লাগবে।

বছরের প্রথম ও একাদশ সংসদের প্রথম অধিবেশ হিসেবে আসন্ন অধিবেশনের মেয়াদকাল দীর্ঘ হতে পারে। তবে সংসদ কার্য-উপদেষ্টা কমিটির বৈঠকে অধিবেশনের মেয়াদ ও কার্যক্রম চূড়ান্ত করা হবে।

গত ৩ জানুয়ারি সংসদ ভবনে চার ধাপে একাদশ সংসদ নির্বাচনে নির্বাচিত ২৯৮ সদসস্যের মধ্যে ২৮৯ জন শপথ নেন। স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী সংবিধান ও কার্যপ্রণালী বিধি অনুযায়ী প্রথমে নিজে শপথ গ্রহণ করেন এবং শপথ বইয়ে স্বাক্ষর করেন। পরে তিনি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ অন্যদের শপথ বাক্য পাঠান করান।

জাতীয় পার্টির হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ এবং আওয়ামী লীগের এ কে এম রহমতুল্লাহ পরে শপথ নেন।

এর আগে গত ৩০ ডিসেম্বর ২৯৯ আসনে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। একজন প্রার্থীর মৃত্যুর কারণে গাইবান্ধা-৩ আসনের ভোট গ্রহণ স্থগিত করা হয়েছিল। আর নির্বাচনের দিন ব্রাক্ষণবাড়িয়া-২ আসনের তিনটি কেন্দ্রের ভোট গ্রহণ স্থগিত হওয়ায় ওই আসনের ফলাফল ঘোষণা করা হয়নি।

স্থগিত কেন্দ্রসমূহের ভোট গ্রহণ ইতিমধ্যে সম্পন্ন হয়েছে এবং ওই আসনে বিএনপির উকিল আবদুস সাত্তার বিজয়ী হয়েছেন।

একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগ ২৫৭ আসন পেয়ে নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা লাভ করেছে। আর মহাজোটগতভাবে তাদের আসন সংখ্যা ২৮৮।

নির্বাচনে এরশাদের জাতীয় পার্টি পেয়েছে ২২টি আসন। জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের মধ্যে বিএনপি ছয় আসন এবং গণফোরাম দুটি আসন পেয়েছে। এছাড়া স্বতন্ত্র প্রার্থীরা তিনটি,  ওয়ার্কার্স পার্টি তিনটি, জাসদ দুটি, বিকল্পধারা দুটি, গণফোরাম দুটি, তরিকত ফেডারেশন ও জেপি পেয়েছে একটি করে আসন।

এ নির্বাচনে বিজয়ের মাধ্যমে ইতিহাস সৃষ্টি করেছেন আওয়ামী লীগের সভাপতি শেখ হাসিনা। টানা তৃতীয়বারসহ চতুর্থবারের মতো প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব গ্রহণ করেছেন তিনি। গত ৩ জানুয়ারি নবনির্বাচিত এমপিদের শপথ গ্রহণের পর সংসদীয় দলের প্রথম সভায় শেখ হাসিনা পুনরায় আওয়ামী লীগের সংসদীয় দলের নেতা নির্বাচিত হন।

এরপর গত ৭ জানুয়ারি আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা চতুর্থবারের মত প্রধানমন্ত্রী হিসেবে শপথ গ্রহণ করেন। ওইদিন প্রধানমন্ত্রী ছাড়াও শপথ নেন ২৪ জন মন্ত্রী, ১৯ জন প্রতিমন্ত্রী ও তিনজন উপমন্ত্রী ।




রাইজিংবিডি/ঢাকা/৩০ জানুয়ারি ২০১৯/এনএ