বইমেলা ও বইমেলার মানুষ
রেজাউদ্দিন স্টালিন || রাইজিংবিডি.কম
রেজাউদ্দিন স্টালিন : একুশের কার্যক্রম এখন কি শুধু বইমেলাকেন্দ্রিক- এমন একটা প্রশ্ন উঁকি দিচ্ছে ইদানিং। মাতৃভাষার জন্য এক ধারাবাহিক সংগ্রামের শিল্পরূপ একুশে ফেব্রুয়ারি। যে সংগ্রাম থাকবে; এখনো শেষ হয়নি। যতদিন বাংলাভাষা থাকবে, বাঙালি থাকবে, ততদিন সংগ্রাম। মাতৃভাষার মর্যাদা ও সমৃদ্ধির জন্যে বইমেলার পাশাপাশি বাংলা ব্যবহারের প্রতি মনোযোগ দেয়ার সময় এসেছে। মিডিয়া, সাইন বোর্ড, প্রযুক্তি মাধ্যম, দাপ্তরিক নথিপত্র, অভ্যন্তরীণ পত্রযোগাযোগ, পাঠ্যপুস্তক সিলেবাস, দলিল দস্তাবেজ, গবেষণা, পরিসংখ্যান পুস্তক, বিদ্যাশিক্ষা প্রতিষ্ঠান সব জায়গাতেই বাংলা ব্যবহার শুদ্ধ ও সঠিকভাবে করতে হবে। আমি প্রতিবছর বইমেলায় যাই। গ্রন্থপ্রকাশ করি। কিন্তু অধিকাংশ বই ভুল বানানো ছাপা, খারাপ বাঁধাই, নি¤œমানের প্রচ্ছদচিত্র। অসংখ্য কবিতার বই কিন্তু সম্পাদিত। এখন প্রশ্ন- বই কারা কিনছে? কেউ না- এরকম কথা সচারচর শুনি। তাহলে বই বেরুচ্ছে কেন? একটাই উত্তর- লেখক, কবি, প্রকাশক তারা মাতৃভাষা ও তার স্বদেশ ভালোবাসে। শত প্রতিকুলতা ও সীমাবদ্ধতার মধ্যেও এবারের বইমেলা নান্দনিক। লেখকদের প্রতি, কবিদের প্রতি আলাদা গুরুত্ব। অনেক আগে থেকেই মেলার জন্য কাজ করতে থাকে বাংলা একাডেমি ও প্রকাশক। প্রত্যাশা- মেলা বড় হবে, বইয়ের বিক্রি বাড়বে। এই আশা কবি ও লেখকদেরও। আজ প্রায় চল্লিশ বছর বইমেলায় যাচ্ছি। বই প্রকাশ পাচ্ছে এ যেন একটা প্রথা, একটা রেওয়াজ। এবার মেলায় আমার ‘রেজাউদ্দিন স্টালিনের কবিতা সংগ্রহ-১’ প্রকাশ করেছে পাঞ্জেরী প্রকাশনী। প্রচ্ছদ রাজিব দত্ত। মূল্য ২৭০ টাকা। কবি প্রকাশনী থেকে বেরিয়েছে কবিতার বই ‘সরলার সংক্ষিপ্ত জীবনী’। প্রচ্ছদ মুস্তাফিজ কারিগর। মূল্য ১৭০ টাকা। ‘ধূলোর অঙ্কুশ’র প্রচ্ছদ এঁকেছেন চারু পিন্টুু। প্রকাশক কলম প্রকাশনী।
বইমেলায় প্রকাশিত বইগুলো মোটামুটি বিক্রির আশা করছি। বাঙালি হাঁড়িকুড়ি কিনতে যত অভ্যস্ত বই কিনতে ততটা নয়। জাতির আবেগ মূল্যবোধ নৈতিকতা নির্মাণে বই এবং বইমেলার ভূমিকা গুরুত্বপূর্ণ। আমি প্রতিদিন বইমেলায় যাই। ভালো লাগে বইমেলার মানুষ। বইমেলার নান্দনিক জ্ঞানরাজ্য।
রাইজিংবিডি/ঢাকা/১২ ফেব্রুয়ারি ২০১৯/তারা
রাইজিংবিডি.কম
আরো পড়ুন