ঢাকা     শুক্রবার   ১৯ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ৬ ১৪৩১

বজ্রপাত থেকে রক্ষা

১০ লাখ তালগাছ রোপণ করছে সরকার

মোহাম্মদ নঈমুদ্দীন || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১২:৪০, ৯ মার্চ ২০১৭   আপডেট: ০৫:২২, ৩১ আগস্ট ২০২০
১০ লাখ তালগাছ রোপণ করছে সরকার

সচিবালয় প্রতিবেদক : ত্রাণ ও দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা মন্ত্রী মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া বলেছেন, বজ্রপাতের মতো প্রাকৃতিক দুর্যোগ মোকাবিলায় দেশে ১০ লাখ তালগাছ রোপণ  করছে সরকার।

১০ মার্চ প্রথমবারের মতো দেশব্যাপী জাতীয় দুর্যোগ দিবস পালন উপলক্ষে বৃহস্পতিবার দুপুরে সচিবালয়ে মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ তথ্য জানান।

দুর্যোগ মোকাবিলায় সরকারের সর্বাত্মক প্রস্তুতি জানিয়ে মন্ত্রী বলেন, কালবৈশাখী, ঘূর্ণিঝড়, খরা ইত্যাদি প্রাকৃতিক দুর্যোগের মধ্যে গত বছর থেকে বজ্রপাত এখন ভয়াবহ প্রাকৃতিক দুর্যোগ হিসেবে দেখা দিয়েছে।

তিনি বলেন, বজ্রপাত তো আর বলে আসে না, তারপরও আমরা এই দুর্যোগ থেকে বাঁচতে জনগণকে সর্বোচ্চ সচেতন করার পাশাপাশি নানা পদক্ষেপ নিচ্ছি।

মন্ত্রী বলেন, একসময় আমাদের দেশে বড় বড় তালগাছ ও বড় গাছ ছিল। কিন্তু এখন সেই দৃশ্য আর নেই। বজ্রপাত হলে বড় বড় গাছগুলোতে গিয়ে পড়তো, এতে জীবনহানি হতো না।

বৃক্ষনিধনের কারণে বজ্রপাতে প্রাণহানি ঘটছে উল্লেখ করে মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী বলেন, বজ্রপাত থেকে রক্ষায় প্রধানমন্ত্রী বৃক্ষরোপণের ওপর জোর দিয়েছেন। তারই নির্দেশনায় আমরা নিজস্ব অর্থায়নে দেশে ১০ লাখ তাল গাছ রোপণ করছি। পাশাপাশি বেশি করে নারিকেল গাছ রোপণও করছি। এতে করে বজ্রপাতের মতো দুর্যোগ থেকে রক্ষা পাওয়া যাবে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, প্রচুর পরিমাণে তালগাছ ও নারিকেল গাছ রোপণ করা হলে গ্রামেগঞ্জে সেগুলো বজ্রনিরোধক দণ্ড হিসেবে কাজ করবে।

তিনি আরো বলেন, বজ্রপাত আমাদের দেশে নতুন দুর্যোগ হিসেবে দেখা দেওয়ায় আমরা যথা সম্ভব প্রস্তুতি নিচ্ছি।’

মন্ত্রী দেশবাসীকে বাড়ির আশেপাশে তালগাছ ও নারিকেল গাছ রোপণের আহ্বান জানান।

মন্ত্রী বলেন, ঘূর্ণিঝড়, বন্যার মতো দুর্যোগে জনগণকে অসহায় মানুষদের জীবন ও সম্পদ রক্ষায় সরকার ঘূর্ণিঝড় আশ্রয়কেন্দ্র নির্মাণের পাশাপাশি, বন্যাকবলিত ১৯ জেলাসহ ২১ জেলায় প্রায় ৪০০টি মুজিব কিল্লা নির্মাণ করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।

তিনি বলেন, এ প্রকল্পের ডিজাইন করা হচ্ছে। একনেক এ প্রস্তাবনার পর অনুমোদিত হলে প্রকল্প বাস্তবায়ন শুরু হবে।

মন্ত্রী বলেন, ১৯৭০ সালের ১২ নভেম্বর সমুদ্র উপকূলে আঘাত হানা প্রলয়কারি ঘূর্ণিঝড়ে ৭  লাখের বেশি মানুষ মারা যান। জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান সেদিন নির্বাচনী প্রচারণা বন্ধ রেখে অসহায় মানুষের পাশে ছুটে যান। ১৯৭৩ সালে বঙ্গবন্ধু নিজ উদ্যোগে অসহায় মানুষের জন্য সিপিপি (ঘূর্ণিঝড় প্রস্তুতি কর্মসূচি) চালু করেন। তার অংশ হিসেবে ওই সময় ১০টি উপকূলীয় ও ২টি বন্যাপ্রবণ এলাকায় ১৯৯ টি মুজিব কিল্লা নির্মাণ করা হয়।

‘দুর্যোগের প্রস্তুতি সারাক্ষণ, আনবে টেকসই উন্নয়ন’ এই শ্লোগানকে সামনে রেখে ত্রাণ ও দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা মন্ত্রণালয় দেশে দিবসটি পালন করবে।’

এর মধ্যে রাজধানীর ওসমানী মিলনায়তনে আলোচনা সভাসহ জেলা-উপজেলা পর্যায়ে দুর্যোগের প্রস্তুতি বিষয়ে ব্যাপক কর্মসূচি হাতে নেওয়া হয়েছে। ১০ মার্চ দিবসটি পালন উপলক্ষে ৬ মার্চ থেকে স্কুল-কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয়সহ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোতে এবং বাণিজ্যিক ভবন, শপিংমল, আবাসিক এলাকাসহ গুরুত্বপূর্ণ স্থানে ও জেলা-উপজেলায় অগ্নিনির্বাপণ মহড়াসহ যেকোনো দুর্যোগ মোকাবিলায় প্রস্তুতি সম্পর্কে জনগণকে সচেতনতামূলক কর্মসূচি চালিয়ে যাচ্ছে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়।

সংবাদ সম্মেলনে মন্ত্রণালয়ের সচিব শাহ কামাল, অতিরিক্ত সচিব সত্যব্রত সাহাসহ কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।



রাইজিংবিডি/ঢাকা/৯ মার্চ ২০১৭/নঈমুদ্দীন/সাইফ

রাইজিংবিডি.কম

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়