ঢাকা     শুক্রবার   ১৯ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ৬ ১৪৩১

দেশের বাইরে যুক্তরাষ্ট্রের বৃহত্তম সামরিক ঘাঁটি

রাসেল পারভেজ || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ০৬:৪৮, ৩০ জুলাই ২০১৭   আপডেট: ০৫:২২, ৩১ আগস্ট ২০২০
দেশের বাইরে যুক্তরাষ্ট্রের বৃহত্তম সামরিক ঘাঁটি

জুন মাসে ইয়োংসন থেকে হামফ্রেইসে ঘাঁটির কর্তৃত্ব হস্তান্তরের সময় মার্কিন সেনাদের অভিবাদন জ্ঞাপন

আন্তর্জাতিক ডেস্ক : ক্যাম্প হামফ্রেইস। দেশের বাইরে যুক্তরাষ্ট্রের বৃহত্তম সামরিক ঘাঁটি।

দক্ষিণ কোরিয়ার রাজধানী সিউলের দক্ষিণে পিয়েওয়ংতায়েকে নির্মাণ করা হয়েছে হামফ্রেইস সামরিক ঘাঁটি। এর নির্মাণ ব্যয় ১ হাজার ১০০ কোটি ডলার।

৩ হাজার ৪৫৪ একর জমির ওপর নির্মিত সুবিশাল এই ঘাঁটিতে ৪৫ হাজার ৫০০ লোকের বাসস্থানের ব্যবস্থা করা হয়েছে। ঘাঁটিতে কর্মরত সামরিক কর্মকর্তা, কনট্রাক্টর ও তাদের পরিবারের সদস্যরা থাকবে এখানে। আধুনিক সমরাস্ত্রে সজ্জিত ঘাঁটিটিকে দক্ষিণ কোরিয়ায় যুক্তরাষ্ট্রের একটি শহর হিসেবে গড়ে তোলা হয়েছে।

যুক্তরাষ্ট্রের দাবি, উত্তর কোরিয়া সরাসরি এই ঘাঁটিতে গুলি-গোলা নিক্ষেপ করতে পারবে না। কিন্তু পিয়ংইয়ং তাচ্ছিল্যের সুরে ওয়াশিংটনের দাবি উড়িয়ে দিয়ে হুঁশিয়ার করেছে, হামপ্রেইস ঘাঁটি তাদের আর্টিলারি হামলার আওতার বাইরে নয়।

উত্তর কোরিয়া যখন একের পর এক দূরপাল্লা ও আন্তঃমহাদেশীয় বিধ্বংসী ক্ষেপণাস্ত্রের (আইসিবিএম) পরীক্ষা চালাচ্ছে এবং দাবি করছে, পুরো যুক্তরাষ্ট্রই তাদের হামলার আওতায়, তখন দেশটির নাকের ডগায় প্রতিবেশী ও প্রতিদ্বন্দ্বী দক্ষিণ কোরিয়ায় বৃহত্তম সামরিক ঘাঁটি উদ্বোধন করল পেন্টাগন। এই ঘাঁটি থেকে পিয়ংইয়ংয়ের হুমকি মোকাবিলা করতে চায় তারা।

ক্যাম্প হামফ্রেইসের কমান্ডার কর্নেল স্কট ডব্লিউ. মুয়েলার বলেছেন, ‘সব ধরনের আঁচড় মুক্ত রেখে আমরা এই শহর (ঘাঁটি) নির্মাণ করেছি।’

সামরিক সমাবেশের পাশাপাশি জীবনযাপনের আধুনিক সুবিধার সব আয়োজন করা হয়েছে ক্যাম্প হামফ্রেইসে। এখানে গড়ে তোলা হয়েছে চারটি স্কুল, পাঁচটি গির্জা, কয়েকটি ফাস্ট ফুড রেস্তরাঁ, মুদি দোকান ও গলফ মাঠ।

যুক্তরাষ্ট্র দীর্ঘ ৩০ বছর ধরে চেষ্টা করে আসছিল, দক্ষিণ কোরিয়ার সিউল থেকে তাদের সামরিক ঘাঁটি সরিয়ে নিতে। উত্তর কোরিয়ার আর্টিলারি হামলা যেন সরাসরি তাদের ঘাঁটিতে আঘাত করতে না পারে, সে জন্যই মূলত এই উদ্যোগ। কিন্তু দক্ষিণ কোরীয়দের রাজনৈতিক ও সামজিক আন্দোলেনের মুখে তা ঝুলে যায়। অবশেষে সেই স্বপ্ন পূরণ হলো যুক্তরাষ্ট্রের।

কোরীয় উপদ্বীপে উপনিবেশের সময় সিউলের ইয়োংসনে সামরিক ঘাঁটি প্রতিষ্ঠা করে জাপান। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর কোরীয় উপদ্বীপ থেকে জাপান চলে গেলে এই ঘাঁটিতে জুড়ে বসে যুক্তরাষ্ট্র। ইয়োংসন ঘাঁটি সিউলের মধ্যাঞ্চলে অবস্থিত এবং দুই কোরিয়ার সীমান্ত থেকে মাত্র ৪০ কিলোমিটার দূরে। ফলে উত্তর কোরিয়ার আর্টিলারি হামলার হুমকির মধ্যে থাকতে হয়েছিল তাদের। যে কারণে দক্ষিণ কোরিয়ার প্রত্যন্ত অঞ্চলে ঘাঁটি স্থানান্তরের উদ্যোগ নেয় যুক্তরাষ্ট্র।

ঘাঁটি কমান্ডার কর্নেল মুয়েলার বলেছেন, ‘এটি শুধু বৃহত্তরই নয়, ইয়োংসনের গ্যারিসনের চেয়ে অনেক আধুনিক।’ তিনি দাবি করেছেন, উত্তর কোরিয়ার হামলা থেকে সহজেই ঘাঁটি রক্ষা পাবে।

কিন্তু উত্তর কোরিয়ার দাবি, ‘আমাদের সামরিক বাহিনী সহজ টার্গেটে যুক্তরাষ্ট্রের বৃহত্তর ঘাঁটিতে আঘাত করতে পারবে।’

এদিকে, দক্ষিণ কোরীয়দের মধ্যে নতুন করে আতঙ্ক কাজ করছে- আরো বেশি মার্কিন সেনাদের উপস্থিতিতে ওই এলাকায় অপরাধ বেড়ে যেতে পারে। কোরীয় নারীদের দিকে ঝুঁকে পড়ার বদাভ্যাস আছে মার্কিন সেনাদের।

তথ্যসূত্র : ওয়াশিংটন পোস্ট, প্রেস টিভি অনলাইন

 

 

রাইজিংবিডি/ঢাকা/৩০ জুলাই ২০১৭/রাসেল পারভেজ

রাইজিংবিডি.কম

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়