‘বইমেলা ও আন্তর্জাতিক সাহিত্য সম্মেলন আলাদা করা উচিত’
রাইজিংবিডির স্টলে শামীম হোসেন (ছবি : সাইফ রাজু)
দেখতে দেখতে প্রায় মাঝের দিকে চলে এসেছে অমর একুশে গ্রন্থমেলা। বেড়েছে জনসমাগমও। শুধু ঢাকা নয় ঢাকার বাইরে থেকেও মেলায় আসছেন লেখক-পাঠকেরা। রাজশাহী থেকে বই মেলায় এসেছিলেন গত বছর ‘ধানের ধাত্রী’ কাব্যগ্রন্থের জন্য ‘কালি ও কলম তরুণ কবি এবং লেখক পুরস্কার-২০১৫’ প্রাপ্ত কবি শামীম হোসেন। রাইজিংবিডির স্টলে বসে তিনি বলেছেন মেলা নিয়ে তার বিভিন্ন অভিজ্ঞতার কথা। সাক্ষাৎকার নিয়েছেন অহ নওরোজ
রাইজিংবিডি : বইমেলা কেমন লাগছে?
শামীম হোসেন : খুবই ভালো লাগছে। বইমেলায় সুন্দর একটি পরিবেশও হয়েছে এবার। গতবারের থেকে এবারের স্টলগুলো আরো ফাঁকা ফাঁকা করে করায় সুন্দরভাবে ঘোরাঘুরিও করা যাচ্ছে।
রাইজিংবিডি : অনেকে বলছেন এবারে তুলনামূলক লিটল ম্যাগাজিনকে অবহেলার চোখে দেখা হয়েছে। এই বিষয়ে আপনার মন্তব্য কী?
শামীম হোসেন : আমার মনে হয় মূল বইমেলা থেকে লিটল ম্যাগাজিন বিচ্ছিন্ন। কারণ বইয়ের মূল উৎসব সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে। সেখানে বইবিষয়ক সব স্টল; পাঠকদের গমন সেখানে বেশি কিন্তু লিটল ম্যাগাজিন চত্বর এখানে একা হয়ে পড়েছে, যে কারণে এবারের মেলায় পাঠক ও লেখকদের সেভাবে যোগাযোগটা লিটল ম্যাগাজিনের মাধ্যমে তৈরি হচ্ছে না। এ ছাড়া লিটল ম্যাগাজিনে আরো একটি বিষয় দেখে আমার কাছে কষ্ট লেগেছে, সেটা হলো প্রতিবার যেমন লিটল ম্যাগাজিনের স্টলের ব্যানার তৈরি করে দেওয়া হয় সেটা দেওয়া হয়নি, নেই পর্যাপ্ত আলোর ব্যবস্থাও। সব মিলিয়ে যেন অবহেলা করা হয়েছে লিটল ম্যাগাজিন চত্বরকে।
রাইজিংবিডি : কেমন হলে ভালো হতো?
শামীম হোসেন : যদি লিটল ম্যাগাজিনকে বইমেলার মধ্যেই রাখা হতো এবং লিটল ম্যাগাজিন চত্বরকে আরো বাড়ানো হতো তাহলে আরো ভালো হতো। এতে করে পাঠকদের সাথে লিটল ম্যাগাজিনের সম্পৃক্ততা আরো বাড়ত। প্রকাশনার একটি স্টলের জন্য যে জায়গা দেওয়া হয়েছে লিটল ম্যাগাজিনকে সে জায়গাটুকুও দেওয়া হয়নি। এটা আক্ষেপের কথা। লিটল ম্যাগাজিন হলো বিশেষত লেখকদের চর্চার স্থান। এই জায়গাটাকে ভালোভাবে মূল্যায়ন করা উচিত।
রাইজিংবিডি : রাজশাহী থেকে বইমেলায় ছুটে আসার অনুভূতি কেমন?
শামীম হোসেন : অবশ্যই আনন্দ ও প্রতীক্ষার ব্যাপার। নতুন বই দেখা হয়। তবে এটি আমার কাছে এক প্রকার অভ্যাস হয়ে গেছে। রাজশাহী বহুদূর সেখান থেকে আসা এমন মনে হয় না। আসছি ঘুরছি ভালো লাগছে এ রকমই।
রাইজিংবিডি : পুরস্কার পাওয়ার আগে এবং পুরস্কার পাওয়ার পরে বইমেলার মূল্যায়ন শুনতে চাই।
শামীম হোসেন : পুরস্কার এক প্রকার স্বীকৃতি। পুরস্কারের কারণে সহজেই একটি পরিচিতি পাওয়া যায়। পুরস্কারের মাধ্যমে বিপুল সংখ্যক পাঠকের কাছে লেখাকে উপস্থাপন করা। যেটার ছাপ মেলায় এসেও দেখতে পাই। বইয়ের বিক্রিও বেড়েছে।
রাইজিংবিডি: বইমেলার মধ্যে আন্তর্জাতিক সাহিত্য সম্মেলনের বিষয়টি কীভাবে দেখছেন?
শামীম হোসেন : প্রথমত আমি চাই এ রকম একটি আয়োজন আগামীতে যেন আরো বেশি সময় নিয়ে হয়। বইমেলার সাথে আন্তর্জাতিক সাহিত্য সম্মেলন করা উচিত নয় বলে আমি মনে করি। কারণ এটি বইমেলার জোয়ারে চাপা পড়ে যায়, এটি যদি হয় তাহলে ভালোভাবেই হওয়া উচিত। এ ছাড়া বইমেলা হিসেবে যেহেতু আমরা একটি উৎসব পাচ্ছি সেহেতু আন্তর্জাতিক সাহিত্য উৎসবকে আলাদাভাবে করলে আমরা সাহিত্যবিষয়ক আরো একটি উৎসব পেলাম। এতে করে আন্তর্জাতিক সাহিত্য উৎসবকে আরো হাইলাইটস করার সুযোগ থাকবে। তবে সে উপলক্ষেও উৎসব প্রাঙ্গণে ছোটখাটো বইমেলার আয়োজন করা যেতে পারে। সাহিত্য উৎসবে যেমন বিদেশি লেখকেরা থাকবেন তেমন বাংলাদেশের বিভিন্ন স্থানের লেখকদেরও সম্পৃক্ত করতে পারলে এটি আরো অর্থবহ হবে।
রাইজিংবিডি : বইমেলায় কী কী বই কিনেছেন?
শামীম হোসেন : কিছু কিনেছি। আর সব এখান থেকে কেনাও সম্ভব না। কারণ নিয়ে যাওয়াটা কষ্টের। তাই বই এখান থেকে দেখে পরে বাসায় গিয়ে অনলাইনে অর্ডার করে নিয়ে নিই।
রাইজিংবিডি : এতক্ষণ সময় দেওয়ার জন্য আপনাকে ধন্যবাদ।
শামীম হোসেন : রাইজিংবিডিকে বিশেষ শুভেচ্ছা। আমি নিয়মিত এই পত্রিকাটির সাথে আপডেট থাকি। সেই হিসেবে রাইজিংবিডির সকল পাঠকদেরও শুভেচ্ছা রইল।
রাইজিংবিডি/ঢাকা/১৩ ফেব্রুয়ারি ২০১৬/অহ/এসএন
রাইজিংবিডি.কম
আরো পড়ুন