ঢাকা     শনিবার   ২০ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ৭ ১৪৩১

আট বছর বয়সেই লেখক দিব্য

আবু বকর ইয়ামিন || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১১:৫৮, ১৮ ফেব্রুয়ারি ২০১৭   আপডেট: ০৫:২২, ৩১ আগস্ট ২০২০
আট বছর বয়সেই লেখক দিব্য

নিজস্ব প্রতিবেদক : অমর একুশে গ্রন্থমেলার সবচেয়ে খুদে লেখক অগ্নিশ বিশ্বাস দিব্য। রাজধানীর সেন্ট পলস মিশন স্কুলে দ্বিতীয় শ্রেণিতে পড়ছে সে। এবার গ্রন্থমেলায় বের হয়েছে তার লেখা ‘বন্ধু মশা’। বইটি প্রকাশ করেছে ঝিঙেফুল প্রকাশনী।

দুরন্ত দুর্বার ওর দস্যিপনা। বড্ড অভিমানী দিব্য ওর দাদার লেখা ‘দ্যা কাইন্ড ঘোস্ট অব মি. স্টিভ’ বই যেদিন বেরোল, সেদিনই লিখে ফেলল একটি গল্প- তানিমের বাগান। ছাপাও হয়েছে একটি জাতীয় দৈনিকে। কী ভেবে বলল, আমারও বই চাই, নিজের লেখা। অমনি খাতা-পেন্সিল নিয়ে দিব্য বসে গেল টেবিলে। টানা তিন ঘণ্টা লিখে মশার সঙ্গে বন্ধুত্ব করে নিল আমাদের দিব্যসেনা। গল্পের মশা নাকি ওর সঙ্গে হ্যান্ডশেক করেছে! তাই ওর বইয়ের নাম হলো বন্ধু মশা!

মাত্র আট বছর বয়সে দিব্য’র বই লেখা। দিব্য বই পড়ে, টিভি দেখে, বন্ধুদের নিয়ে খেলতে ভালবাসে। দাদার সঙ্গে তার শত্রুতা-মিত্রতা দুটোই প্রবল। দাদু-দিদা ও মাকে তার চাই, বাবার সঙ্গে গল্প বলার সম্পর্ক। বড় হয়ে সে সায়েন্টিস্ট বা লেখক হতে চায়। বা সম্ভব হলে দুটোই।

দিব্য জানায়, মেলায় এবারই প্রথম আমার বই। আমাকে মশায় কামড়াত। কয়েকদিন ধরেই মশা কামড়াচ্ছিল। তাই এই গল্প লেখার ইচ্ছা জাগে। পুরো বইয়ে একটাই গল্প। বইয়ের গল্পে তুলে ধরা হয়েছে- একটা ছেলে পূজায় তার বাড়িতে বেড়াতে গেল। সেখানে অনেক মশা। মশাগুলো তাকে কামড়াচ্ছিল। সে মশাদের বলল, ও মশারা তোমরা আমাকে আর কামড়িও না। তখন একটি মশা তার কথা শুনে অন্যদেরকেও কামড়াতে নিষেধ করল।

‘বাবার লেখালেখি থেকে উৎসাহ, তাই আমার লেখার আগ্রহ বাড়ে। ক্লাসে ৩৫ জনের মাঝে আমার ক্লাস রোল ১৭। এবার সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে ‘যেমন খুশি তেমন সাজো’তে বঙ্গবন্ধু সেজে প্রথম হয়েছি। আরো বেশ কয়েকটি বই লেখালেখি চলছে। তার মধ্যে একটা বাগান নিয়ে, রাজা নিয়ে, আরেকটা বই রয়েছে একজন বোকা মানুষ নিয়ে।’

দিব্য’র মা ডা. তপতি মণ্ডল। তিনি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ে কর্মরত। তিনি বলেন, আমার স্বামী অরুণ কুমার বিশ্বাস কাস্টমমের জয়েন্ট কমিশনার। পাশাপাশি তিনি নিয়মিত একজন লেখক। তার লেখা আটটি বই এবার মেলায় প্রকাশিত হয়েছে। তার মধ্যে অন্যপ্রকাশ থেকে ক্রাইসিস, পাঞ্জেরি থেকে পিকিং মানব রহস্য, ঝিঙেফুল থেকে প্রকাশিত হয়েছে হায়নার হাসি। এ পর্যন্ত তার ৭০টি বই প্রকাশিত হয়েছে।

 



তাছাড়া আমাদের বাসায় সবাই প্রচুর বই পড়ে। বই পড়তে পড়তে এবং ওদের বাবার লেখালেখি দেখে দেখে লেখার প্রতি তাদের উৎসাহ বেড়ে যায়। যখন অবসর থাকত, তাদের বলতাম লেখালেখি করতে। আমার বড় ছেলে অনিকেত বিশ্বাসের বইটি প্রকাশিত হওয়ার পরেই আমার ছোট ছেলে অগ্নিশ বিশ্বাস লিখতে বেশি উৎসাহী হয়। আশ্চর্যের বিষয় হলো, তাদের বইয়ে আমাদের তেমন ঘষামাজা করতে হয়নি। ছোটখাটো বানান ভুল বা গ্রামাটিক্যাল ভুলগুলো ছাড়া অন্য কোনো কিছুতেই হাত দিতে হয়নি।

তিনটি গল্প লিখেছে দিব্য। এর মধ্যে একটি পত্রিকায় ছাপা হয়েছে। ঝিঙেফুল প্রকাশনার প্রকাশক একদিন ওদের বাবার একটি বইয়ের বিষয়ে কথা বলতে এসে ওর লেখাটা পড়ে উনি এটি প্রকাশ করতে খুব আগ্রহী হন এবং মেলায় সেটি বই আকারে প্রকাশিত হয়।



রাইজিংবিডি/ঢাকা/১৮ ফেব্রুয়ারি ২০১৭/ইয়ামিন/মুশফিক

রাইজিংবিডি.কম

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়