‘ইলিশের মাংস’ গল্পগ্রন্থ নিয়ে কিছু কথা
মনি হায়দার : আমার লেখক জীবনের প্রধান আরধ্য গল্প। দুই বিপরীত মেরু ধারণ করে আশির দশকের শেষের দিকে গল্পের দিকে যাত্রা। জীবনের নানা ঘাটে অজাচিত অপমান সহ্য করে গল্পের সঙ্গে একটা রক্তমাখা সংসার করে যাচ্ছি। গল্প সংসারের চৌদ্দতম গল্পগ্রন্থ ‘ইলিশের মাংস’ মেলায় এনেছে মাওলা ব্রাদার্স। বইটিতে পনেরোটি গল্প আছে। একদিন সকালে উঠে যদি দেখি, আমার বা আমাদের বাম পা কাজ করছে না। থেকে থেকে যন্ত্রণা করছে। পা মাটিতে রাখা যাচ্ছে না। তখন কেমন হবে? সমাজ যখন অসুস্থ, অসুস্থ হাসপাতাল, অসুস্থ রাষ্ট্র তখন একজন নিপাট ভদ্রলোক আহীর আলমের বাম পা বিষয়ক জটিলতা নিয়ে ভদ্রলোক কী করতে পারে? করতে পারে একক লড়াই। সেই লড়াইয়ের গল্প: ‘আহীর আলমের বাম পা’। এই গল্প সিরিজ আকারে লেখা হয়েছে।
‘ইলিশের মাংস’ বইয়ের আরেকটি গল্প ‘রক্তথেরাপী’। গল্পের প্রধান চরিত্র জহিরউদ্দিন মুহম্মদ বাবর। সরকারি অফিসের বড় কর্তা। বাবরের সিগনেচারে বড় বড় ফাইল পাশ হয়। প্রতি ফাইলে এক হাজার টাকা হলে...। এই পরিস্থিতিতে বাবর যায় হজব্রত পালন করতে। ফিরে এসে বাবর আর ঘুষ খায় না। জটিলতা শুরু হয় তখন। বাবরের প্রস্রাবে রক্ত পরে। ডাক্তার দেখানো হয়। কাজ হয় না। এই নিয়ে গল্প ‘রক্তথেরাপী’।
১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধের মধ্যে দিয়ে যে স্বাধীন বাংলাদেশের অভ্যুদয়, সেই রক্তাক্ত বাংলাদেশের গল্পকার আমি। আমার চৈতন্য থেকে একাত্তর দূরে সরে যেতে পারে না। বরং একাত্তর, মুক্তিযুদ্ধ আমার ভেতরে ক্রমাগত ক্রীড়াশীল হচ্ছে নিত্য নতুন প্রপাতে। সেই আত্মপ্রপাতের ধারাবাহিকতায় ‘ইলিশের মাংস’ গল্পগ্রন্থে মুক্তিযুদ্ধের গল্পও রয়েছে। বইটির প্রচ্ছদ এঁকেছেন ধ্রুব এষ।
রাইজিংবিডি/ঢাকা/১০ ফেব্রুয়ারি ২০১৯/তারা
রাইজিংবিডি.কম
আরো পড়ুন