ঢাকা     শনিবার   ২০ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ৭ ১৪৩১

ভাসছে কংক্রিটের সেতু

ফাতিমা রুনা || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ০২:০২, ৫ ফেব্রুয়ারি ২০১৭   আপডেট: ০৫:২২, ৩১ আগস্ট ২০২০
ভাসছে কংক্রিটের সেতু

ফাতিমা রুনা : প্রযুক্তির কল্যাণে পৃথিবীজুড়ে বিশালাকৃতির সেতু বানাচ্ছেন ইঞ্জিনিয়াররা। এ ক্ষেত্রে সবচেয়ে এগিয়ে চীন। কখনো সবচেয়ে উঁচু ব্রিজ বানিয়ে, কখনো কাঁচের সেতু বানিয়ে চমকে দিচ্ছে দেশটি। কিন্তু আমেরিকা সবাইকে চমকে দিয়েছে ভাসমান বিশাল কংক্রিটের সেতু নির্মাণ করে। প্রথম দেখায় একে অবশ্য রাস্তা বলেই আপনার মনে হবে। দূর থেকে মনে হবে রাস্তাটি ভাসছে পানির ওপর। নতুন এই সেতু দিয়ে মাঝ নদী দিয়ে শুধু হাঁটাহাঁটি নয়, গাড়ি চালিয়ে দিব্যি অন্য প্রান্তে যাওয়া যাবে।

পৃথিবীতে প্রায় ২০টি ভাসমান সেতুর অস্তিত্ব রয়েছে যার পাঁচটিই আমেরিকায়। ভাসমান সেতু ‘পন্টুন ব্রিজ’ নামেও পরিচিত। সাধারণত এ ধরনের সেতু জরুরি অবস্থা বা যুদ্ধাবস্থায় কাঠ দিয়ে নির্মাণ করা হতো। ভাসমান কাঠ বা নৌকা দড়ি দিয়ে একত্রে বেঁধে তার ওপর কাঠের তক্তা রেখে রাস্তার আকৃতি দেয়া হতো যাতে মানুষ ও পণ্য এক প্রান্ত থেকে অন্য প্রান্তে সহজে পারাপার করা যায়। অতীতের অনেক যুদ্ধের সময়ে এই ধরনের অস্থায়ী পন্টুন সেতু বেশ কাজে এসেছিল।

সময়ের সাথে তাল মিলিয়ে বিজ্ঞানের অগ্রযাত্রায় যোগ হয়েছে আরো নতুন নতুন আবিষ্কার। ইঞ্জিনিয়াররা এবার তৈরি করেছেন ভাসমান অথচ স্থায়ী সেতু।

‘এস আর-৫২০’ নামের এই দীর্ঘ ও স্থায়ী ভাসমান সেতু নির্মিত হয়েছে আমেরিকার সিয়্যাটলে। এই সেতুটি ৪,৭৫০ মিটার দীর্ঘ যা লেক ওয়াশিংটনের ওপরে যানবাহন পরিবহনে ব্যবহৃত হচ্ছে।

প্রশ্ন আসতে পারে সেখানে কেন এই ভাসমান সেতুর দরকার হলো। লেক ওয়াশিংটনের ভৌগোলিক অবস্থান এর পেছনে দায়ী। লেকটির তলদেশের মাটি এতটাই নরম যে সাধারণ ব্রিজের পিলার বা খুঁটি নির্মাণ সম্ভব নয়। পাশাপাশি, অত্যাধিক নির্মাণ ব্যয়ের কারণে ঝুলন্ত ব্রিজও সেখানে নির্মাণ সম্ভব ছিল না।

১৯৩০ সালে ইঞ্জিনিয়ার হোমার হ্যাডলির মাথায় প্রথম এই ভাসমান ব্রিজের ধারণা আসে । প্রথম বিশ্বযুদ্ধের সময়ে হ্যাডলি কাজ করতেন কংক্রিট নির্মাণকারী এক প্রতিষ্ঠানে। তিনি ফাপা কংক্রিটের বার দিয়ে এক প্রান্ত থেকে অন্য প্রান্ত সংযুক্তির মাধ্যমে ব্রিজ নির্মাণের প্রস্তাব রাখেন আমেরিকার তৎকালীন হাইওয়ে ডাইরেক্টর ভি মুরোর কাছে। হ্যাডলির ধারণাটা এতটাই সফল হয়েছিল যে ওয়াশিংটন স্টেট তা ভবিষ্যৎ ব্রিজ নির্মাণ ধারণার জন্যে নিয়ে নেন। পরবর্তীতে ‘এভারগ্রিন পয়েন্ট’ নামে ২য় দীর্ঘতম ভাসমান ব্রিজ নির্মাণ করা হয় ১৯৬৩ সালে এবং প্রথম ভাসমান ব্রিজের ধারনা প্রবর্তনকারী হোমার হাডলির সম্মানে ৩য় ব্রিজের নামকরণ করা হয় হোমার হাডলি নামে।

লেক ওয়াশিংটনে এখন পর্যন্ত তিনটি ভাসমান ব্রিজ রয়েছে যা পৃথিবীর দীর্ঘতম পাঁচ ব্রিজের মধ্যে অন্যতম।



রাইজিংবিডি/ঢাকা/৫ ফেব্রুয়ারি ২০১৭/মারুফ

রাইজিংবিডি.কম

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়