আজব সব শিশু (শেষ পর্ব)
সন্ধ্যা হলেই আর চোখ খোলা রাখতে পারে না
আহমেদ শরীফ : বিশ্বের প্রায় সব দেশেই এখন শিশুদের শৈশব কাটে নিরাপত্তাহীনতায়, অনিশ্চয়তায়। তবে এমন কিছু শিশু আছে যারা জন্মগতভাবেই শারীরিক বা মানসিক ত্রুটি নিয়ে জন্মেছে। এরপরও তারা পৃথিবীর আলো, বাতাস, পরিবেশের সঙ্গে নিজেদের খাপ খাইয়ে নিতে আপ্রাণ চেষ্টা করে যাচ্ছে। আবার কোনো কোনো শিশু বড়দের চেয়েও তুলনামূলক বেশি শারীরিক ও মানসিক শক্তি নিয়ে বেড়ে উঠছে। সেসব শিশু নিয়ে এই আয়োজন।
রিচার্ড স্যানড্রাক : তাকে বলা হয় শিশু হারকিউলিস। কারণ শৈশবেই একজন বডিবিল্ডার হিসেবে নিজেকে গড়ে তোলে সে। তাকে নিয়ে তাই ‘দ্য ওয়ার্ল্ডস স্ট্রঙ্গেস্ট বয়’ নামে একটি ডকুমেন্টারিও নির্মিত হয়েছে। একশটি পুশ আপ দেওয়া, বড়দের মতো সব কঠিন ব্যায়ামও করতে পারে সে। তবে তার বাবাকে সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের জন্য জেলখানায় পাঠানো হলে রিচার্ড বডিবিল্ডিং ছেড়ে দেয়।
গুলিয়ানো স্ট্রো : রিচার্ড স্যানড্রাকের মতো গুলিয়ানো স্ট্রো একজন বডিবিল্ডার। এ ছাড়া সে একজন জিমন্যাস্টও। ২০০৯ সালে দ্রুত গিনেজ রেকর্ড বুকে তার নাম উঠে। এরপর একে একে কয়েকটি রেকর্ড গড়ে সে। সবচেয়ে বেশি নাইনটি ডিগ্রি পুশ আপ, হিউম্যান ফ্ল্যাগ পুল আপসহ বেশ কিছু রেকর্ড আছে তার।
প্রাণশু : ভারতের পাঞ্জাবে পানশু নামের এক শিশু জন্মেছে, যার কিনা বিরাট এক কপাল। আর তার চোখ দুটো খুব সরু। তাকে গ্রামের সবাই ভগবানের এক রূপ হিসেবে পূজা করে। তার মাঝে ভগবান গনেশের পুনর্জন্ম হয়েছে বলেই মনে করে গ্রামবাসী।
সোফি গ্রিন : চীনে জন্ম নেওয়া আট বছরের শিশু সোফি গ্রিনকে দত্তক নিয়েছে আমেরিকার দম্পতি ক্রিস্টিন ও জেরেমি দম্পতি। এরপর থেকে আমেরিকার উটাহ প্রদেশেই থাকছে সোফি। দুই হাত ছাড়াই জন্মেছিল সে। তবে এতে কোনো সমস্যা হয় না তার। দাঁত ব্রাশ করা, খাওয়া দাওয়া, লেখা সব কিছু সে দুই পা দিয়েই করে।
ইভান ফাসিয়ানো : আমেরিকার কানেকটিকাটে জন্ম নেওয়া ৬ বছরের শিশু ইভান ফাসিয়ানো ভুগছে হারলেকুইন ইকলিউসিস নামে বিরল এক রোগে। এ কারণে অন্য শিশুদের চেয়ে তার শরীরের চামড়া ১০ গুণ বেশি দ্রুত বাড়ছে। আর তাই পুরনো চামড়া পরিষ্কার করতে সব সময় তাকে গোসল করাতে হয় ও শরীরে ওষুধ দিতে হয়। তার শরীর থেকে কোনো ঘাম বের হতে পারে না।
রমেশ দর্জি : নেপালে জন্ম নেওয়া ১১ বছর বয়সী রমেশ দর্জি নামের এই শিশুটিও ভুগছে হারলেকুইন ইকলিউসিস রোগে। এতে তার শরীর ধীরে ধীরে পাথরের মতো হয়ে যাচ্ছে। কোনো শিশু তাই ভয়ে তার কাছে আসে না। এ অবস্থায় যখন তার গরিব বাবা-মা চিকিৎসার ভার বহন করতে পারছিল না, তখন তাদের সাহায্য করতে এগিয় আসেন বৃটিশ গায়িকা জশ স্টোন। তিনি শিশুটির চিকিৎসা ব্যয় বহন করছেন এখন।
টুইংকেল দিবেদি : ভারতে জন্ম নেওয়া শিশু টুইংকেলের বেলাতেও আছে এক রহস্য। আর সে রহস হলো যখন টুইংকেল কাঁদে তখন তার চোখ থেকে পানি নয়, বরং রক্ত ঝরে। শুধু চোখ থেকেই না, তার হাত ও মাথার তালু থেকেও রক্ত ঝরতে দেখা যায়। তার এই রোগটিকে হিমোল্যাক্রিয়া বলা হচ্ছে।
শোয়েব আহমেদ-আব্দুল রশিদ : ১০ ও ১৪ বছর বয়সী দুই ভাই। পাকিস্তানে জন্ম নেয় এই দুই শিশু। সারা দিন খুব প্রাণবন্ত থাকে। কিন্তু সন্ধ্যা হলেই বিপত্তি হয়। তারা কোনোভাবেই জেগে থাকতে পারে না। চোখ খুলে তাকাতে পারে না। সূর্যের আলো ছাড়া নিস্তেজ হয়ে পড়ে তারা। ওই পরিবারে নতুন এক শিশু জন্মেছে। তারও নাকি একই পরিস্থিতি। ডাক্তাররা এখনো বুঝে উঠতে পারছেন না, বিষয়টি কি।
রাহমা হারুনা : নাইজেরিয়ার এই মেয়েটির বয়স ২০ বছর। কিন্তু এখনো ছোট্ট শিশুর মতোই সে। যখন ৬ মাস বয়স, তখন থেকে তার শরীর আর বাড়েনি।। তাই এখনো এভাবেই পরিবারের লোকেরা তাকে বয়ে নিয়ে যায়। ডাক্তাররা তার এই অবস্থার কোনো সমাধানই খুঁজে পাননি।
রাইজিংবিডি/ঢাকা/২১ এপ্রিল ২০১৭/আহমেদ শরীফ/উজ্জল
রাইজিংবিডি.কম
আরো পড়ুন